এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > দলবদলের জল্পনায় কার্যত জল ঢাললেন শুভেন্দু অধিকারী? নাকি জল মাপছেন মন্তব্য ঘিরে জল্পনা!

দলবদলের জল্পনায় কার্যত জল ঢাললেন শুভেন্দু অধিকারী? নাকি জল মাপছেন মন্তব্য ঘিরে জল্পনা!

 

 

 

তাকে নিয়ে জল্পনার শেষ ছিল না। বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল, এমনকি বিরোধী দলের সকলের নজর ছিল আজকের রামনগরের সভার দিকে। কেননা কিছুদিন আগেই এই রামনগরে কালী পুজোর উদ্বোধনে এগিয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছিলেন, 19 নভেম্বর তিনি অনেক কিছু বলার সুযোগ পাবেন। সেদিন তিনি অনেক কিছু বলবেন। স্বাভাবিকভাবেই তার সঙ্গে যখন তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে একটা অংশ দাবি করতে শুরু করেছিল, তখন শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের জল্পনা চরম আকার ধারণ করে। স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দুবাবুর 19 নভেম্বরের এই সভার দিকে নজর ছিল গোটা রাজনৈতিক মহলের। অনেকে মনে করেছিলেন, এদিনের সভা থেকে তেমনভাবে নিজের সিদ্ধান্ত কথা না জানালেও, কার্যত নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দেবেন শুভেন্দুবাবু যে তিনি করতে চলেছেন। এক্ষেত্রে একাংশ প্রায় নিশ্চিত ছিল যে, শুভেন্দু অধিকারী দলবদলের পক্ষেই আভাস দেবেন। কিন্তু তেমন তো কিছু হলই না। উল্টে নিজের দলের প্রতিই আস্থা রাখতে দেখা গেল রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে। যেখানে তিনি নীতি-আদর্শ বিসর্জন করার লোক নন বলেও জানিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা। কিন্তু যখন তার অরাজনৈতিক সভাকে কেন্দ্র করে জল্পনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছিল, তখন এদিনের সভায় থেকে কার্যত সেই জল্পনাকে কেন দূরীভূত করে দিলেন রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রী!

 

সূত্রের খবর, এদিন রামনগরের সমবায় অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত হয়ে দলবদলের জল্পনায় জল ঢেলে দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আমি এখনও একটি দলের প্রাথমিক সদস্য। তবে দলে থাকলেও আত্মসম্মান নিয়ে আপোষের রাস্তায় হাঁটতে আমি রাজি নই। নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে কাজ করার লোক নই। আমি যে পদগুলোতে আছি, সবগুলোই নির্বাচিত। মনোনীত নয়। আমি যা করছি তা পেশা নয়, নেশা।” আর এরপরই একধাপ এগিয়ে তিনি তৃণমূল ছাড়তে পারেন বলে যে মহলের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, তাতে কার্যত জল ঢেলে দেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে তাড়িয়ে দেননি। আর আমিও ছেড়ে যাইনি।” অর্থাৎ তিনি এই নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি তার যথেষ্ট আনুগত্য রয়েছে।

 

আর শুভেন্দু অধিকারী যখন তার দলবদলের জল্পনায় এদিনের মঞ্চ থেকে সম্পূর্ণরূপে জল ঢেলে দিলেন, তখন অনেকেই এই ব্যাপারে প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। একাংশ বলছেন, তাহলে এতদিন ধরে এই লুকোচুরি খেলা কেন! কেন এতদিন অরাজনৈতিক সভার মধ্যে দিয়ে বেশ কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রাখতে দেখা যাচ্ছিল রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রীকে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে কাজ করা যাবে না, একথা বলে অনেক কিছু বোঝাতে চেয়েছেন। তিনি হয়ত বা এদিনের মঞ্চ থেকে মন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হিসেবে দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন, একথা সত্য। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা বলে তিনি কার্যত ইঙ্গিতবহ বার্তা দিতে চেয়েছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, তিনি তার অবস্থানে অনড় থাকবেন। অর্থাৎ নীতি এবং আদর্শ থেকে তিনি কখনও বিচ্যুত হবেন না। স্বাভাবিকভাবেই তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা যে সম্পূর্ণরূপে মিটে গেছে, এমন ভাবলে ভুল হবে বলে দাবি করছেন একাংশ। অনেকে আবার এটাও বলেছেন, সাম্প্রতিক কালে তৃণমূলের তরফে শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল আটকানোর জন্য এক প্রবীণ সাংসদ তার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। আর তাতেই হয়ত বা বরফ গলতে শুরু করেছে। আর সেই কারণে শুভেন্দু অধিকারী এদিনের মঞ্চ থেকে অনেক কিছু বলবেন বলে অতীতে জানালেও, শেষ পর্যন্ত দল এবং নেত্রীর প্রতি নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে আনুগত্য প্রকাশ করতে দেখা গেল রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে। তবে শুধুমাত্র মুখের কথাই কি বাস্তব হয়, নাকি ভবিষ্যতে এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে আবার নতুন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন শুভেন্দুবাবু, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!