এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > 10 লক্ষ টাকার বিল, জোর করে আটকে রাখা – নার্সিংহোমের “চাপে” ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা রোগীর!

10 লক্ষ টাকার বিল, জোর করে আটকে রাখা – নার্সিংহোমের “চাপে” ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা রোগীর!


এর আগে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে মানবিকভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও রাজ্যের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি হাসপাতালের কাছে রোগীর থেকে বা রোগীর সেবার থেকে অর্থনৈতিক ব্যবসা যে অনেক বড়, তা বারবার প্রমাণ করেছে বেসরকারি হাসপাতালে অমানবিক ব্যবহার বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এরকমই একটা ঘটনা ঘটল। জানা যায়, নার্সিংহোমে চার তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন হূদরোগে আক্রান্ত এক রোগী। বস্তুত, শিলিগুড়িতে অবস্থিত একটি নামকরা বেসরকারি চিকিৎসালয় চিকিৎসাধীন ছিলেন রামনাথ করাতি। তিনি 40 বছর বয়স্ক একজন মানুষ। দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন নিজের বাড়িতে তিনি হৃদ রোগে আক্রান্ত হন। পরিবারের তরফ থেকে তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি নামজাদা নার্সিংহোমে ভর্তি করালে পরিস্থিতি দেখে হূদরোগে আক্রান্ত রামনাথবাবুকে আইসিইউতে রাখেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এরপরে রামনাথবাবুর শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় নার্সিংহোমের সাধারণ বিভাগে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু পরিবারের তরফে অভিযোগ, রামনাথবাবুকে আইসিইউতে রাখার জন্য ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ 10 লক্ষ টাকার বিল চেয়ে বসেন। কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মাঝখানে পুজোর ছুটি থাকার কারণে সেই 10 লক্ষ টাকা অতিসত্বর জোগাড় করা যায়নি। নিজের চিকিৎসার পিছনে এত অর্থ ব্যয় হয়েছে জানতে পেরে ব্যস্ত হয়ে পড়েন চিকিৎসাধীন রোগী রামনাথ করাতি। পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়, রোগীর সার্বিক পরিস্থিতি ও শারীরিক পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নত হওয়া সত্ত্বেও তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেননি বেসরকারি নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষরা। শুধু তাই নয়, রোগীর পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আগামী 15 দিন রামনাথবাবুকে নার্সিংহোমে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। যার ফলে রোগী রামনাথ করাতি ব্যস্ত হয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের ছুটির ব্যাপারে তদবির করে। কিন্তু মৃতের পরিবারের তরফ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, রোগী বা পরিবারের কোনো কথাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেননি। এরপরে সকাল সাড়ে ছটার সময় আচমকাই বেসরকারি নার্সিংহোমে চারতলা শৌচালয়ের জানালা দিয়ে ঝাঁপ দিয়ে দেন রামনাথবাবু। তিনি ঝাঁপ দেওয়ার পরে একটি টিনের সঙ্গে বাড়ি খেয়ে সোজা মেঝেতে গিয়ে পড়েন। ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রামনাথবাবুর। এরপরই পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন, রোগী সকাল সাড়ে ছয়টার সময় মারা গেলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল তিনটের সময় পরিবারের লোকজনকে সেই বিষয়ে খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে রোগীর আত্মীয়স্বজন আসার পরেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের উত্তপ্ত কথোপকথন শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হতে থাকে। কাজেই ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিন এই বিষয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি বিজিত রাজ ভুনদেশ, ডিসিপি ইন্দুর মুখোপাধ্যায় প্রমূখ। জানা যাচ্ছে, এই ঘটনা শুধুমাত্র পরিবার বনাম পরিবারের নাসিংহোম কর্তৃপক্ষের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ নয়, এই বিষয়ে ইতিমধ্যে দাগ কাটতে শুরু করেছে রাজনৈতিক ঘটনা। এদিন এই খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন শিলিগুড়ি বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী। তিনি জানান, মৃত ব্যক্তি তাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিল। বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দাবি করেন, পরিবারকে যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারের। যদিও মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই বিষয়ে তারা কিছু বলতে চাননি। এখন আগত দিনে সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় কতটা পরিমানে প্রাইভেট নার্সিংহোমগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে! সেদিকেই তাকিয়ে বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!