২২ নয় ১৮ আসন জিতলেই ২০২১-এ পরিবর্তন সম্ভব, অঙ্ক কষে ঘনিষ্ঠমহলে দাবি মুকুল রায়ের! কলকাতা বিশেষ খবর ভোটের সমীক্ষা রাজ্য October 1, 2018 আর কয়েক মাসের মধ্যেই সারা দেশের রায় জানতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন। আর সেই লোকসভা নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্ত্বপূর্ন স্থান পেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। কেননা, কেন্দ্র থেকে বিজেপি সরকারকে সরাতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী, তিনি আস্থা রেখেছেন স্থানীয় দলগুলির জোট ফেডারেল ফ্রন্টের উপরে। আর তাই বঙ্গবাসীর কাছে তাঁর আবেদন তাঁর দলকে বাংলার ৪২ টি আসনেই জয়যুক্ত করানোর। এমনকি, তৃণমূল নেতা-কর্মীরা একথাও বিশ্বাস করতে শুরু করে দিয়েছেন – যে ৪২ এ ৪২ হলেই প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী পেতে পারে দেশ অর্থাৎ দেশের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে পারেন তাঁদের প্রিয় দিদি। অন্যদিকে, এযাবৎকাল বঙ্গদেশের রুক্ষমাটিতে সেভাবে ‘কমল’ না ফুটলেও – এবারে বাংলায় অসাধ্যসাধন করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। ৪২ টির মধ্যে অন্তত ২২ টি আসনে জয়লাভ করতে চান অমিত শাহরা। আর সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বাংলায় বেশ কয়েকবার সফর করে ফেলেছেন খোদ নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ। এমনকি বাংলায় নিয়মিত ভাবে অমিত শাহের নির্দেশিকা নিয়ে আসছেন কেন্দ্রীয় নেতারা, ঘনঘন বৈঠকে বসছেন রাজ্য নেতৃত্ত্বের সঙ্গে। আর তাই গেরুয়া শিবির আওয়াজ তুলেছে ত্রিপুরার দেখানো পথেই – চলো পাল্টাই, এবার বাংলা। তবে দলীয় নেতৃত্ত্ব ২২ টি আসন জিততে চাইলেও বিজেপি নেতা মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন ১৮ টি লোকসভা আসনে জিততে পারলেই চাপে পরে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস। ২২ টি আসন জিতলে তো কথায় নেই, কিন্তু ১৮ টি আসন জিততে পারলেই নাকি ২০২১-এ পরিবর্তনের পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু কোন অঙ্কে তিনি এতখানি জোড় দিচ্ছেন ১৮ টি আসনের উপরে। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, মুকুল রায় দলীয় কর্মীদের জানিয়েছেন – বাংলায় মোট বিধানসভার সংখ্যা ২৯৪, আর সরকার গড়তে লাগে ন্যূনতম ১৪৮ টি আসন। রাজ্য বিজেপির এক অন্যতম শীর্ষনেতার কথা অনুযায়ী, মুকুলবাবুর হিসাবে – যেহেতু প্রতিটি লোকসভার মধ্যে ৭ টি করে বিধানসভা থাকে, তাই যেকোন লোকসভা জিততে গেলে অন্তত তার অন্তর্গত ৫ টি বিধানসভাতে জিততেই হবে। এর মধ্যে ৩ টি বিধানসভা বড় ব্যবধানে ও ২ টি বিধানসভা ছোটব্যবধানে হলেও ক্ষতি নেই। ফলে ৭ টির মধ্যে ২ টি বিধানসভা বড় ব্যবধানে হারলেও – বাকি ৫ টির অনুপাতে সেই লোকসভা জেতা হয়ে যাবে। আর তাই ১৮ টি লোকসভা জেতা মানে – ন্যূনতম ৯০ টি বিধানসভা দখল করা। অন্যদিকে, বাকি ২৪ টি লোকসভা হারা মানে, সেখানে অন্তত দ্বিতীয় হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে ওই নেতার কথায়, সেক্ষেত্রে বাকি ২৪ টি লোকসভাতে যদি গড়ে ২ টি করে আসনেও জেতা যায় – তাহলে আরো ৪৮ টি বিধানসভাতে পদ্ম ফুটবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১৩৮ টি বিধানসভা গেরুয়া শিবিরের দখলে থাকবে – যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে মাত্র ১০ টি আসন কম। মুকুলবাবু নাকি বিশ্বাস করেন ওই ১০ টি আসনও বাকি আসন থেকে ঠিক ‘বের’ করে নেওয়া যাবে। অন্যদিকে, ওই নেতার আরো দাবি – অঙ্ক বলছে কংগ্রেসের যত খারাপ অবস্থায় হোক না কেন এখনো রাজ্যে বেশ কিছু ‘পকেটে’ কংগ্রেসের ভোট আছে। ফলে কংগ্রেস খুব কম করে ১০-১২ টি আসন জিতবেই। অন্যদিকে, ওই নেতার আরো দাবি – বামফ্রন্টের একটা ‘ডেডিকেটেড ভোটব্যাঙ্ক’ এখনো থেকে গেছে। যার ফলে, বামফ্রন্টও এখনো রাজ্য থেকে ন্যূনতম ২০-২২ টি আসন জেতার মত জায়গায় আছে। আর তা যদি সত্যিই হয়, তাহলে প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ১১০-১১৫ টি আসন পরে থাকবে, যা সংখ্যা গরিষ্ঠতা থেকে অনেকটাই পিছনে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের পূর্ন সমর্থন নিয়েও তাদের পক্ষে সরকার গঠন করা সম্ভব হবে না। সেক্ষত্রে সরাসরি বামফ্রন্টের সমর্থন দরকার হয়ে পড়বে – যা রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের পক্ষে রীতিমত ‘সঙ্কটজনক’ পরিস্থিতি হবে। আর তাই নাকি, রাজ্য বিজেপির অন্দরে এখন ঘোরাফেরা করছে ১৯ শে ১৮-এর অঙ্ক। যে অঙ্ক মেলাতে পারলেই নাকি নবান্নের রঙ নীল-সাদা থেকে গেরুয়া হয়ে যাবে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা – খাতায়-কলমের অঙ্কের সঙ্গে রাজনীতির বাস্তবের অঙ্কের অনেক পার্থক্য হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের মত মহীরূহকে সরিয়ে নবান্নের রঙ গেরুয়া করতে এখনো অনেক পথ হাঁটতে হবে। অন্যদিকে, আরেকাংশের ধারণা – বঙ্গ-রাজনীতির পটভূমিকে নিজের হাতের তালুর মতন চেনেন মুকুল রায়। এর আগে বহু নির্বাচনী বৈতরণী অঙ্ক কষেই তৃণমূলকে পার করেছেন তিনি – সেই রাজনৈতিক প্রজ্ঞাকেও এত সহজে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। সবমিলিয়ে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের সাথে সাথেই ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের সূক্ষ্ম কূটনৈতিক চালের খেলা যে শুরু হয়ে গেল সেকথা বলাই বাহুল্য। আপনার মতামত জানান -