এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুজোর চেক বিলিতেও দুই হেভিওয়েটের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে! অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে শাসকদলে

পুজোর চেক বিলিতেও দুই হেভিওয়েটের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে! অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে শাসকদলে

লোকসভা নির্বাচনে গোটা উত্তরবঙ্গেই প্রায় ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তাই, বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে দিদিকে বলো থেকে শুরু করে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু অন্তর্কলহ ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে কি লোকসভা নির্বাচনের পরে, উত্তর দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেন থামার নামই নিচ্ছে না।

আর এবার সেরকমই একটা ছবি ধরা পড়ল সেই উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকায়। গত সোমবার ইসলামপুরের পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকার সূর্যসেন মঞ্চ থেকে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিয়ে পুজো কমিটিগুলোর মধ্যে রাজ্য সরকারের আর্থিক অনুদান তুলে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের বিশেষ এই উদ্যোগে সূর্যসেন মঞ্চে গোয়ালপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের শ্রমদপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানী, উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন।

একইসঙ্গে, উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট সচিন মক্কর, মহকুমা শাসক অলংকৃতা পান্ডে সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় ইসলামপুরের স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আব্দুল করিম চৌধুরীকে। এর আগেও সরকারি বা দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে তৃণমূলের এই বর্ষিয়ান বিধায়ক আব্দুল করিম সাহেবকে। বরাবরের মতো এবারও করিম সাহেবের অভিযোগ ছিল, তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে করিম সাহেব বলেন, “আমাকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হচ্ছে। এখন তা সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। কানাইয়া ও রব্বানীরা গ্রূপ করেছে। তারা নানা দিক দিয়ে আমাকে জব্দ করার চেষ্টা করছে।” করিম সাহেব আরও অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী অনেক আগে পুজো কমিটিগুলোকে 25 হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। তার নির্দেশ ছিল, এই চেক বিতরণ অনুষ্ঠান বহন করবেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাঁর আরও অভিযোগ, সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক সহ স্থানীয় বিধায়ক। সেই মোতাবেক সোমবার ইসলামপুর থানা এলাকায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু আমাকে জানানো হয়নি। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে করিম সাহেব জানান, “রব্বানী মন্ত্রী বলে কি সব জায়গায় ঢুকে পড়বে! পরশু রাত্রি 12 টার সময় একজন এসআই আমাকে ফোন করেছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এসপি আমাকে অবহেলা করে একজন এসআইকে দিয়ে আমাকে জানাচ্ছেন। ডিএম, এসপি মহকুমা প্রশাসককে বলছি, ইসলামপুর কেন্দ্রের মধ্যে যেকোনো রকম অনুষ্ঠান হলেই তার উদ্বোধক হিসেবে থাকবে আব্দুল করিম চৌধুরী। এমনটা না হলে ভালো হবে না। মানুষ এই সমস্ত অনুষ্ঠান বয়কট করবে। এত অপমান আমি আর সহ্য করতে পারব না। মনে হচ্ছে আমাকে তারা বিরোধী দলের এমএলএ বানিয়ে দিয়েছে।”

স্বাভাবিকভাবেই আব্দুল করিম চৌধুরীর এহেন মন্তব্যে জোর জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলের মধ্যে। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দলের আগামী দিনের সংগঠনের পক্ষে যে ভাল দিকে এগোচ্ছে না, সেই বিষয়ে সহমত পোষণ করছে প্রায় সকল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই। যদিও এই ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার সচিন মক্কর বলেন, “এই নিয়ে কোন মন্তব্য করব না।”

তবে উত্তর দিনাজপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, “এটা আমার প্রোগ্রাম ছিল না। প্রশাসন কাকে কাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তা আমি জানি না। আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তাই আমি গিয়েছিলাম।” তবে গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা রাজ্যের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানী জানিয়েছেন, “আমাকে একজন এসআই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আমি গিয়েছিলাম।”

এদিকে গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছেন, জেলাজুড়ে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব যেরকম ঘোরালো আকার ধারণ করছে, তা আগামী দিনে যথেষ্ট ভোগাতে চলেছে ঘাসফুল শিবিরকে। এই বিষয়ে অতি সত্বর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে আগামী দিনে শাসকদলের সমূহ বিপদ উপস্থাপিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!