২০২১ এ বুথ স্তরে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নয়া পদক্ষেপ বিজেপির, কলকাতা বিজেপি রাজনীতি রাজ্য December 14, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই লড়াই জমে উঠেছে বাংলার রাজনৈতিক মঞ্চে। রাজ্যের প্রতিটি রাজনৈতিক দল এই মুহূর্তে বিধানসভার মসনদ দখল করতে তৈরি। বলা যেতে পারে, এই নির্বাচন বর্তমানে রীতিমত যুদ্ধের রূপ নিয়েছে এবং যুদ্ধে জয়লাভ করার জন্য প্রত্যেকটি রাজনৈতিক শক্তি এই মুহূর্তে চেষ্টা চালাচ্ছে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার। রাজ্যের গেরুয়া শিবিরও এক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্যের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তবে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে বুথ স্তরে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, রাজ্য বিজেপির প্রায় প্রত্যেক নেতাই স্বীকার করে নিচ্ছেন বুথ স্তরে যদি সংগঠন জোরদার না হয়, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনে জয় পাওয়া নিতান্তই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। আর তাই রাজ্য থেকে বিধানসভা ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি জেলাতে পাঠানো হয়েছে 23 দফা নির্দেশিকা। এই নির্দেশিকার প্রতিটি নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে জেলাগুলিকে। যথারীতি নির্দেশ অনুযায়ী জেলা নেতৃত্ব ঝাঁপিয়ে পড়েছে কাজে। জেলা নেতারা এইসব নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করার জন্য মণ্ডল কমিটির মাধ্যমে বুথ স্তরে পৌঁছে দিতে শুরু করেছে। অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরে হয়ে গেল এদিন দলবদল। রাণাঘাটে বিজেপি নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে দলবদলকারী নেতাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এদিন বিজেপিতে যোগদান করেছেন ফুলিয়ার তৃণমূল কর্মী চঞ্চল চক্রবর্তী, যিনি একসময় সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। পরে অবশ্য তিনি তৃণমূলে যোগদান করার পাশাপাশি এদিন শান্তিপুরের সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর রাধাকান্ত বিশ্বাস বিজেপিতে যোগ দেন বলে জানা গিয়েছে। গেরুয়া শিবিরের সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে গেরুয়া শিবির ভালো ফল করলেও সার্বিকভাবে কিন্তু এখনো বিজেপির সংগঠন ততটাও শক্তিশালী হয়নি। আর সে কথা একপ্রকার মেনে নিচ্ছেন দলেরই নেতাদের একাংশ। জানা যাচ্ছে, বুথ স্তরে এখনও বহু জায়গায় কমিটি তৈরি করা হয়নি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তার ওপর করোনার কারণে এ বছর বুথসংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি নির্বাচন কমিশনের। আর সেক্ষেত্রে এই দুর্বলতা যে আরও ব্যাপকভাবে প্রকাশ পাবে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে টেক্কা দিতে গেলে অবশ্যই প্রয়োজন বুথ স্তরের সংগঠনকে শক্তিশালী করা। এবং সে কারণেই রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে পৌঁছে গিয়েছে 23 দফা নির্দেশিকা। যেখানে বলা হয়েছে, মন্ডল স্তরের সংগঠন এবং মোর্চা পদাধিকারীদের পাঁচটি করে বুথের দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি এতদিন পর্যন্ত মিসড কল দিয়ে সদস্য পদ পূরণের যে কর্মসূচি চলছিল, তার সত্যতা যাচাই করতে হবে এবং যারা মিসড কল দিয়ে সদস্য হয়েছেন তাঁদের দলীয় কাজকর্মে যুক্ত করতে হবে। এ ছাড়াও বিগত দুটি লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের বুথ ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সামাজিক স্থিতি বা অবস্থান অনুযায়ী বুথ কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিটি বুথ কমিটিতে যেসব সদস্য থাকবেন, তাঁদের মধ্যে অতি অবশ্যই তপশিলি জাতি উপজাতি ও মহিলাদের রাখতে হবে বলে নির্দেশ এসেছে। এছাড়া প্রতিটি বুথে ভোট কেন্দ্র গঠন করে সদস্য কর্মীদের ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত ব্যাপারে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রতিটি বুথ থেকে তিনজন এমন মানুষ বেছে নিতে হবে যারা সব সময় বুথ এলাকায় সক্রিয় থাকবেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান নিয়মিত সম্প্রচার করতে হবে প্রতিটি বুথে। এবং স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন করতে হবে। বোঝাই যাচ্ছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো উঠে পড়ে লেগেছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজেপি যেভাবে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তা থেকে কিন্তু পরিষ্কার একুশের বিধানসভা নির্বাচন কিন্তু তৃণমূল বা অন্যান্য দলের জন্য খুব একটা সহজ জয় হবেনা। রীতিমত কড়া টক্কর দেবে গেরুয়া শিবির। একুশের বিধানসভা নির্বাচন গেরুয়া শিবিরের কাছে রীতিমতো প্রেস্টিজের লড়াই বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই লড়াই জিততে যে তাঁরা মরিয়া, তা তাঁদের কর্ম পদ্ধতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আপাতত দেখার, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে কতটা জোরে ধাক্কা দিতে পারে গেরুয়া শিবির একুশের বিধানসভা নির্বাচনে। আপনার মতামত জানান -