২০২১ এর মুখে ফের উত্তপ্ত হচ্ছে ভাঙড়ের মাটি, আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দলের সাথে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে তৃণমূল, বাড়ছে চাপ তৃণমূল নদীয়া-২৪ পরগনা রাজনীতি রাজ্য November 6, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভাঙ্গড় একসময় শাসকদল তৃণমূলের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। তবে, সম্প্রতি ভাঙ্গড়কে নিয়ে মাথা ব্যথা বাড়ছে শাসকদল তৃণমূলের। ইতিপূর্বে, ভাঙ্গড়ে দেখা গিয়েছিল পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলন। যাকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙ্গড়। জমি কমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল তৃণমূল। দু’পক্ষের তুমুল, গন্ডগোল, বিক্ষোভ, হানাহানি চলে। পরবর্তীতে পঞ্চায়েত ভোটে ভাঙ্গড় ২ ব্লকের পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের বেশকিছু আসলে জমি কমিটি জয়ী হয়। সম্প্রতি জমি আন্দোলন আর নেই, কিন্ত আবার রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে ভাঙ্গড়ে। ভাঙ্গড়ে আহলে সুন্নাতুল জামাত এর সঙ্গে বারবার সংঘর্ষ বাঁধছে শাসক দল তৃণমূলের। বাড়ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আহলে সুন্নাতুল জামাত রাজ্যের ৪৪ টি আসনে লড়বে বলে ঘোষণা করেছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামাত শুরু করেছে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা। এরফলে আহলে সুন্নাতুল জামাততের সঙ্গে শাসকদল তৃণমূলের বারবার গন্ডগোল দেখা দিচ্ছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গত দুমাস ধরে শাঁকশহর, পদ্মপুকুর, বোদরা, চাঁদপুর, দুর্গাপুর, হরিহরপুর, নিমতলায় বারবার সংঘর্ষ দেখা গেছে জামাতের সঙ্গে তৃণমূলীদের। তাঁদের এই সংঘর্ষের ফলে কখনো রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিমতলায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর ও মারধর চালিয়েছে আহলে সুন্নাতুল জামাতের সদস্যরা। অনেকে মনে করছেন যে, শাসক দল তৃণমূলের একটি বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর সদস্যরা ক্রমাগত দলভারী করছেন সিদ্দিকী শিবিরে। তাদের সঙ্গে সঙ্গে সিপিএম, কংগ্রেসের বেশ কিছু লোকও এই শিবিরে যোগ দিয়েছেন। একটু একটু করে শক্তিশালী হচ্ছে জামাত শিবির। একদা সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য শরিফুল মোল্লা এখন ভাঙড় ১ ব্লকর আহলে সুন্নাতুল জামাতের নেতা।শরিফুল মোল্লা জানিয়েছেন, সিপিএমে থাকার কারণে ২০১১ সালের পর থেকে মানুষের জন্য কোন কাজ করতে পারছিলেন না তিনি। সম্প্রতি সরকারি প্রকল্পের ঘর থেকে শুরু করে, আম্পানের ক্ষতিপূরণের টাকা সমস্ত কিছুতেই শাসকদল তৃণমূল কাটমানি নিচ্ছে গরিবদের থেকে। এর প্রতিবাদ করতে গেলেই পড়তে হচ্ছে শাসকদলের রোষানলে। সে কারণে আব্বাস সিদ্দিকীর দলে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে চান তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে সিপিএমের জেলা সম্পাদকণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ জানালেন যে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতা দখলে তৃণমূল সাহায্য করছে। তৃণমূলের অত্যাচারে মানুষ খড়কুটোর মত যাকে পাচ্ছে তাকেই আঁকড়ে থাকতে চাইছে। অন্যদিকে জামাত প্রসঙ্গে কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জয়ন্ত দাস জানালেন যে, তাঁরা ধর্মীয় মেরুকরনে বিশ্বাসী নন। তিনি দাবি করেছেন, কংগ্রেস একটি সর্বভারতীয় দল। অনেক সময়ে কংগ্রেস ভেঙে বেশকিছু রাজনৈতিক দল তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ আব্বাস সিদ্দিকীর শিবির গিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, তাঁরা আব্বাস সিদ্দিকেকে সমর্থন জানাচ্ছেন। অন্যদিকে আব্বাস সিদ্দিকীর দলের প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অভিজিৎ দাস বা ববি জানালেন, ” আসলে আব্বাস সিদ্দিকী তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ করে তৃণমূলকেই রাজনৈতিক সুবিধা করে দিচ্ছে। পক্ষান্তরে শাসক দল তাকে মদত দিচ্ছে। তিনি (আব্বাস) রাজনৈতিক দরকষাকষি করে নিজের পকেট ভরতে চাইছেন।’’ তবে, তৃণমূলের জনৈক বিধায়ক সেইসঙ্গে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শওকত মোল্লা জানালেন যে, আব্বাস সিদ্দিকী ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভেদ করতে চাইছে। সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে দিয়ে বিজেপিকে রাজনৈতিক সুবিধা করে দিচ্ছে। তারপর সিপিএম কংগ্রেসের এতে মদত রয়েছে। তিনি আব্বাস সিদ্দিকীকে ধর্মীয় জার্সি খুলে রাজনৈতিক ময়দানে নামার চ্যালেঞ্জ করলেন। প্রসঙ্গত আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের রাজনৈতিক উত্থানে তৃণমূলের লাভ হবে? না বিজেপির লাভ হবে? তার উত্তর দাওয়া এখনই সম্ভব নয়। তবে এটা ঠিক যে, আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের বারবার আক্রান্ত হচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। আব্বাস সিদ্দিকী নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছেন শাসকদল তৃণমূলকে, এমনটাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত। আপনার মতামত জানান -