এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > লক্ষ্য ২০২১, মমতার প্রাক্তন ৫ সৈনিককে বড়সড় পদ উপহার মোদী-শাহের, চাপ বাড়লো তৃণমূলের?জল্পনা তুঙ্গে !

লক্ষ্য ২০২১, মমতার প্রাক্তন ৫ সৈনিককে বড়সড় পদ উপহার মোদী-শাহের, চাপ বাড়লো তৃণমূলের?জল্পনা তুঙ্গে !


২০১৯ এ দিল্লি দখলের পর মোদী-শাহ জুটির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলার মসনদ থেকে তৃণমূলকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা। যদিও সেই লক্ষে অনেকদিন ধরেই নানা পদক্ষেপ নিয়েছে গেরুয়া শিবির, সে ঘাসফুল শিবিরের হেভিওয়েটদের ভাঙিয়ে বিজেপিতে নিজেদের দলে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে ,বার বার বঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গে আসা। এছাড়া নানা সভা করা। বঙ্গে সময় দেওয়া এসব তো ছিলই।

এবার তার সঙ্গে বঙ্গকে কুক্ষিগত করতে এবার বিশেষ পদক্ষেপ নিলেন মোদী শাহ। শোনা যাচ্ছিলো বঙ্গ বিজেপিতে বড়সড় রদবদল হতে চলেছে। আর সেই খবর সত্যি করে আজ দুপুরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্য স্তরের রদবদলের কথা ঘোষণা করেন।

সেই ঘোষণা অনুযায়ী জানা যাচ্ছে এবার তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা ৫ জনকে বড়সড় দ্বায়িত্ব দিলো বিজেপি। তার মধ্যে রয়েছেন –

১. অর্জুন সিং – অর্জুন সিং লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি তৃণমূলের কাছে ব্যারাকপুর লোকসভা আসনের টিকিট চেয়েছিলেন কিন্তু তৃণমূল নেত্রী সমেত শীর্ষ নেতৃত্বের পছন্দ ছিল দীনেশ ত্রিবেদীকে। ফলে হাতছাড়া হয় আসনটি, অর্জুন সিং বিদ্রোহ ঘোষণা করলে তাঁকে ও দীনেশ ত্রিবেদীকে একসঙ্গে বসিয়ে কোন্দল মেটানোর চেষ্টা করেন নেত্রী। কাজ হয়নি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। ব্যারাকপুর থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড়ান এবং বর্তমানে তিনি ব্যারাকপুরের সাংসদ। এদিন দিলীপ ঘোষের ঘোষণা অনুযায়ী তিনি বিজেপিতে বড় পদ পেলেন। যে ১২ জন সহ সভাপতির পদ পেয়েছেন তার মধ্যে একজন হলেন অর্জুন সিং। তাঁকে সহ সভাপতির পদ দেওয়া হয়েছে।

২. ভারতী ঘোষ – তিনি তৃণমূলের কোনো পদে ছিলেন না ঠিকই কিন্তু তিনি তৃণমূল নেত্রীর খুব কাছের ছিলেন। জঙ্গলমহলের পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি। মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা বলে দেখেছিলেন। কিন্তু এক সময়ে সেই মায়ের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দে। নানা মামলার দায়ে তাঁকে অন্তরালে থাকতে হয় তারপর পাতানো মাকেও পরিত্যাগ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। লোকসভা ভোটে ঘাটাল আসন থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড়ান কিন্তু পরাজিত হন। তবে লোকসভা ভোটে পরাজিত হলেও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁর উপর আস্থা রেখে তাঁকেও সহ সভাপতি পদ উপহার দিয়েছেন।

৩. লকেট চ্যাটার্জী – তিনি অনেক আগে তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু নেত্রীর উপর আস্থা রাখতে না পেরে তৃণমূলের সেই ভরা সময়েও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৯ এ হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি দাঁড়ান ও বর্তমানে তিনি ওখানকার সাংসদ। এর পাশাপাশি এদিন তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন।

৪. সব্যসাচী দত্ত – তিনি তৃণমূল নেত্রীর অন্যতম ঘনিষ্ট ও বিধাননগরের মেয়র ছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের উপর আস্থা না রেখে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন লোকসভা ভোটের পর। এদিন তিনিও পদ পেলেন।তাঁকে বিজেপির তরফ থেকে সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে।

৫. সৌমিত্র খাঁ – তিনিও তৃণমূলের প্রাক্তন সৈনিক। বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ এনে দল ছাড়েন তিনি। মূলত তৃণমূল নেত্রীর ভাইপো ও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর অভিযোগ এনে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর বিজেপির তরফ থেকে তাঁকে বিষ্ণুপুর লোকসভার টিকিট দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানকার বিজেপি সংসদ। এদিন জানা গেছে তাঁর উপর ভরসা রেখে তাঁকে নতুন দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যুব মোর্চার আহ্বায়ক এর পদ পেয়েছেন তিনি।

আর মমতার এই ৫ হেভিওয়েট প্রাক্তন সৈনিককে পদ দেওয়ার ফলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিকমহলের দাবি ২০২১ এ বঙ্গ কাঁপাতে এবার এদের হাতে নতুন করে ক্ষমতা তুলে দিলেন মোদী- শাহ এর ফলে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়বে। কেননা এনারা আগে থেকেই তৃণমূলে ছিলেন ফলে তৃণমূলের সমতট তাদের চেনা। হাতের মুঠোয়। ফলে দল ভাঙ্গানো থেকে শুরু করে তৃণমূলের অন্দরের খবর কোনো কিছুই তাদের পক্ষে অসম্ভব নয়। যদিও এতদিন অসম্ভব ছিল না তবে পদ পেয়ে সেইসব আরো জোরালো হলো বলেই মত রাজনৈতিকমহলের। এখন দেখার এই ৫ প্রাক্তন সৈনিক কি তৃণমূলের ঘুম ওড়াতে পারে কিনা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!