2021 এর জন্য পিকে ফর্মুলা: পুরনো কর্মীদের নিয়ে নয়া ভাবনায় ভোট গুরু রাজ্য November 19, 2019 1998 সালের পয়লা জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর চলেছে সুদীর্ঘ লড়াই, আন্দোলন। আর এই লড়াইয়ের পথটা কুসুমাকীর্ন ছিল না, ছিল কণ্টকাকীর্ণ। হাজরা মোড় থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে গড়বেতা, বিভিন্ন জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে সেই সময়ের তৃণমূলের কর্মীরা কখনও প্রাণ দিয়েছেন, আবার কখনও শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করে গিয়েছেন। অবশেষে 2011 সালে সেই তৃণমূল কর্মীদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে ক্ষমতায় বসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এরপর থেকেই যেন অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করেছিল। তৃণমূলের দুর্দিনে যে সমস্ত কর্মীরা লড়াই আন্দোলন করেছিলেন, তারা ক্রমশ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন। যার কারণ হিসেবে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল দলে সিপিএমের কর্মীদের দাপটকেই দায়ী করে একাংশ। বারবার দলীয়স্তরে পুরোনোরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বলে দাবি করা হলেও সেই ব্যাপারে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। তবে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে গোষ্ঠী কোন্দল এবং পুরনোদের কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়ার কারণে যে অনেক জেলায় তৃণমূলকে হারতে হয়েছে, তা ফলাফল পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। আর তাই তো সেই পুরোনোদের উপর ভরসা করেই আগামী 2021 এর বিধানসভা বৈতরনী পার হতে চায় ঘাসফুল শিবির। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দলের খারাপ ফলাফলের পর তৃণমূলের রননীতিকার হিসেবে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সাধারণ মানুষ থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়েছে, একথা অনুধাবন করে দিদিকে বলোর মতো কর্মসূচি দিয়ে গোটা তৃণমূল দলকে ময়দানে নামিয়ে দিতে সক্ষম হন ভোটগুরু। ইতিমধ্যেই এই দিদিকে বলো কর্মসূচির ফলে অনেক মানুষ তৃণমূলের দিকে আসতে শুরু করেছে বলে দাবি তৃণমূল ঘনিষ্ঠ মহলের। তবে শুধু জনসংযোগ ফেরালেই হবে না, দলের বসে যাওয়া পুরোনো কর্মীদেরও যে দলে নিয়ে আসতে হবে, এবার তা উপলব্ধি করল পিকের টিম। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোরের দপ্তর থেকে ফোন মারফত তৃণমূল বিধায়কদের কাছে নির্দেশ যেতে শুরু করেছে, পুরনোদের সক্রিয় করতে হবে। আর এই ঘটনাই রাজ্য রাজনীতিতে বাড়িয়ে দিয়েছে জল্পনা। তাহলে কি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের ময়দানে নামিয়ে নিজের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! অনেকেই বলছেন, ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসে অন্য দল থেকে আসা নেতাকর্মীদের হিড়িক অনেকটাই বেড়েছে। যার ফলে দলের প্রথমদিনকার দুর্দিনের কর্মীরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়লেও তারা কিছুটা অভিমানেই এখন মুখ বুজে বসে পড়েছেন। তবে তারা এখনও অন্য দলে নাম লেখাননি। কারণ তাদের মনে এখনও সেই তৃণমূলই রয়েছে। তাই সেই সমস্ত পুরনো নেতাকর্মীরা দলের সম্পদ, তাদের কথা মনে রেখে এবার তাদের ময়দানে নামতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। আর এই সূক্ষ্ম পরিকল্পনা প্রশান্ত কিশোরের মাথাতেই এসেছে বলে দাবি করছে বিশেষজ্ঞরা। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান বিধায়ক বলেন, “বসে গেলে অনেকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। তাদেরকে দলের সাংগঠনিক পরিসরে সক্রিয় করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সেই উদ্দেশ্যেই আইপ্যাকের তরফে ফোন করে পুরনো কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আর সেই কথা অনুধাবন করেই এবার দলের পুরোনো কর্মীদের নিয়ে এসে 2021 এর বৈতরণী পার করতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পুরনো কর্মীদের এই সেতুবন্ধনে প্রশান্ত কিশোরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত সকলেই। তবে পুরনো কর্মীরা নিজেদের অভিমান ভেঙে আদৌ দলের সাথে নামেন কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -