এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার হিড়িক! পথ দেখাচ্ছেন অনুব্রত!

উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার হিড়িক! পথ দেখাচ্ছেন অনুব্রত!


লোকসভা নির্বাচনে সারা রাজ্যে তৃণমূলের কিছুটা ধ্বস নামলেও বীরভূম জেলায় দুটি সিটই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে অনেক বুথেই হেরে যেতে হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। যার ফলে বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা আসন তৃণমূল দখল করলেও, সারা রাজ্যে বিজেপি 18 আসন পাওয়ায় বীরভূমে যে তার প্রভাব পড়বে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল প্রত্যেকেই।

সেই মত বেশ কিছু জায়গায় কিছু দলবদলও হয়েছিল। তবে সম্প্রতি রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে আশ্চর্যজনকভাবে 6 মাস আগের বিজেপির উত্থান কার্যত ফিকে হয়ে গেছে। তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়লাভ করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই সুযোগে এবার বীরভূম জেলায় নিজের দলকে শক্তিশালী করতে বিজেপিতে বড়সড় ভাঙ্গন ধরালেন অনুব্রত মণ্ডল।

সূত্রের খবর, শুক্রবার মুরারই বিধানসভার বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত হন জেলা তৃণমূল সভাপতি। আর সেখানেই তাঁর হাত ধরে বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে নাম লেখান। বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফলের পর যা বিজেপির কাছে অস্বস্তিকর এবং তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত উজ্জীবিত হওয়ার কারণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বস্তুত, বিগত লোকসভা নির্বাচনে বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের জয়ের পেছনে এই মুরারই বিধানসভার অবদান ছিল অনস্বিকার্য। তবে বেশ কিছু বুথে এখানে হেরে যেতে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। এদিন সেই ব্যাপারে এই বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন করেন অনুব্রত মণ্ডল। যেখানে হেরে যাওয়ার কারণ অঞ্চল সভাপতি থেকে ব্লক সভাপতিদের কাছে জানতে চান তিনি।

মুরারই 1 অঞ্চলের 11 টি বুথে দলের শোচনীয় পরাজয় নিয়ে অঞ্চল সভাপতি লালু শেখকে প্রশ্ন করেন অনুব্রত মণ্ডল। আর তখন লালু শেখ বলেন, “আমরা যখন গ্রামে গিয়েছি, তখন মানুষ আমাদের সঙ্গে থেকেছে। কিন্তু বুথের কর্মীরা তলে তলে বিজেপিকে সমর্থন করেছে। তাই হারের কারণ বুথ সভাপতি এবং মেম্বারের কাছে জেনে নিন।” আর এরপরই ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষের উদ্দেশ্য বড়সড় বার্তা দেন অনুব্রত মণ্ডল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তিনি স্পষ্ট বলেন, “প্রত্যেক বুথ সভাপতিকে ডাকুন। আপনাকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। যেসব বুথ সভাপতি আমাদের ভোট করেননি, তাদের রাখবার দরকার নেই। যদি ভাবেন দু-একটা মেম্বার আমাদের সঙ্গে গদ্দারি করেছে, সেই মেম্বারকে সরিয়ে দিন। প্রধানকে বলে দেবেন, সেই মেম্বার যেন কোনো কাজ না পান।” এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের রোষানল থেকে এদিন রক্ষা পাননি তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাও।

জানা যায়, মন্ত্রীর নিজের বুথ কলহপুরে লোকসভা ভোটে তিনি 169 টি ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। এদিন এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওখানে মন্ত্রীর বাড়ি। অনেক রাস্তাঘাট হয়েছে। এবার ওখানে আর কোনো কাজ হবে না। 21 সালে ফল দেখব। তারপর কাজ হবে। মন্ত্রী বলে লাটসাহেব নয়। যদিও মন্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক।”

তবে এদিনের বিধানসভাভিত্তিক কর্মী সম্মেলনে যেভাবে অনুব্রত মণ্ডল বিজেপি থেকে পাঁচ হাজার কর্মী-সমর্থককে তৃণমূলে যোগদান করালেন, তা বিজেপির কাছে অত্যন্ত অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করছে একাংশ। এদিন এই সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার ও দিলীপ ঘোষকে একহাত নেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।

তিনি বলেন, “জয়প্রকাশ মজুমদারকে কেউ লাথি মারেনি। ও পরে যাচ্ছিল। পায়ের আঙ্গুল দিয়ে টেনে ধরতে গিয়েছিল। আর বিজেপি ছাগল পাগলের দল। দিলীপ ঘোষ মস্ত বড় পাগল। ও যখন ট্যাবলেট খায়, তখন ঠিক থাকে।” এদিকে জেলা তৃণমূলের সভাপতির এহেন মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “তিনটি উপনির্বাচনে জিতে উনি উন্মাদের মতো বকছেন। সিংহ তিন পা পিছোলে, সে যে পরাজিত হয়েছে, সেটা ভাবা ভুল। জানবেন, সে আরও বড় শিকারের অপেক্ষায় রয়েছে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের পর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে বিধানসভার দিকে তাকিয়ে অনুব্রত মণ্ডল সাংগঠনিক কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছেন। বর্তমানে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আগামী বিধানসভায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি।

আর এই পরিস্থিতিতে উপনির্বাচনের ফলাফলে বিজেপি পর্যদুস্ত হওয়ায় নিজের গড়ে তৃণমূলকে বাড়তি অক্সিজেন দিতে উদ্যোগ নিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বিধানসভা ভিত্তিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এবার বিপুল কর্মী-সমর্থকদের নিজের দলে যোগদান করিয়ে বিজেপির হাওয়াকে দমিয়ে দিতে চাইলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!