চার মাস ধরে বেতন নেই! ধারের বোঝায় বহুকষ্টে দিন চলছে রাজ্যের বহু অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর! নদীয়া-২৪ পরগনা বিশেষ খবর রাজ্য September 16, 2019 আমাদের দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক কাঠামোতে আজও বহু শিশুর শিক্ষার হাতেখড়ি যাঁদের হাত ধরে হয়, যাঁদের হাতেই সমাজের বহু মধ্য ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুর স্বাস্থ্যের ভালো-মন্দ নির্ভর করে – রাজ্যের সেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের এক বৃহদংশ আজ একেবারেই ভালো নেই। এমনিতেই, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে কোনো অবসরকালীন সুবিধা ছাড়াই ৬৫ বছরে অবসর নিতে বাধ্য হওয়াই – এক অনিশ্চিত অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। আর এবার সূত্রের খবর অনুসারে, মাস গেলে যে সামান্য টাকা বেতন বা ভাতা হিসাবে পান – তার দেখা নেই এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের এক বৃহদংশের কাছে। ফলে, বহু কুণ্ঠায় কুন্ঠিত হয়ে, আমাদের শৈশবকে সযত্নে লালিত করা এই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ধার করে কোনোরকমে দিনপাত করছেন। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা ঐক্যমঞ্চের অন্যতম উপদেষ্টা ও পশ্চিমবঙ্গ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এমপ্লয়ীজ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সুবীর সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, ঘটনার সত্যতা তিনি স্বীকার করে নেন। সুবীরবাবু জানান, গত শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ১ নম্বর প্রজেক্টের পশ্চিমবঙ্গ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা মঞ্চের ব্লক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের কাছে জানতে পারেন যে, ওনারা প্রায় বিগত ৪ মাস ধরে কোনো সন্মানিক ভাতা পাচ্ছেন না! লোকের কাছে ধার করে খুবই কষ্টের মধ্যে দিয়ে কোনওরকমে তাঁরা তাঁদের সংসার চালাচ্ছেন! তবে ধারের বহর রকমস বেড়ে যাওয়াই এবং কবে সেই ধার পরিশোধ করা যাবে তার নিশ্চয়তা না থাকায়, বর্তমানে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সুবীরবাবুর কথায়, দোকানদার আর ধার দিতে চাইছেন না I আগামী দিনে কি হবে – এই নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা রীতিমত আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন! সামনেই বাঙালির সব থেকে বড় দুই প্রাণের উৎসব দুর্গাপূজা ও ঈদ। অথচ, সময়মত সন্মানিক ভাতা না পেলে কি ভাবে কাটবে তাঁদের – এই আতঙ্কেই উৎসব শুরুর আগেই কালো অন্ধকার রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মধ্যে! সুবীরবাবুর দাবি, আমরা মনে করছি, উক্ত প্রজেক্টের সি.ডি.পি.ও থেকে শুরু করে উপরের এক শ্রেণীর অফিসারের জন্য আজ প্রায় ৬০০ জন কর্মী বিগত ৪ মাস ধরে সন্মানিক ভাতা(বেতন) পাচ্ছেন না। একই সঙ্গে অত্যন্ত ক্ষেদ নিয়ে তিনি জানান, কিন্তু আমরা যতদূর জানি, উক্ত প্রজেক্টের অফিসার থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের কর্মচারীদের বেতন আটকে নেই, তাঁরা যথারীতি বেতন পাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে, পরিকল্পিতভাবে এক শ্রেণীর অফিসাররা কর্মীদের সন্মানিক ভাতা আটকে দিয়ে, অসুবিধার মধ্যে ফেলে সরকারের সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে। একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছেন। এর পাশাপাশিই সুবীরবাবু আবেদন করেন, দুর্গাপুজোর আগেই উক্ত প্রায় ৬০০ কর্মী যাতে তাঁদের বকেয়া ৪ মাসের সন্মানিক ভাতা হাতে পান – সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে হস্তক্ষেপ এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। বারাসত ১ নম্বর ICDS প্রজেক্টের প্রায় ৬০০ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের এই দু:সময়ে তাঁদের পাশে থাকার জন্য – রাজ্যের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা, রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী, পঞ্চায়েত ও পৌর কর্মচারী, আশাকর্মী, প্যারাটিচার, চুক্তি ভিত্তিক বা অস্থায়ী কর্মচারী এবং সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। আপনার মতামত জানান -