এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > করোনা আবহে ৮০% শতাংশ ভারতীয় ক্ষতিগ্রস্ত! আগামী দিনগুলো কি আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে?

করোনা আবহে ৮০% শতাংশ ভারতীয় ক্ষতিগ্রস্ত! আগামী দিনগুলো কি আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে?


করোনা আবহে দেশের অর্থনীতির পরিস্থিতি ক্রমশ যে খারাপ হবে, তা নিয়ে অনেক আগেই অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ওয়াকিবহাল করেছিলেন। এমনিতেই করোনা সংক্রমণের জেরে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি যথেষ্ট বেহাল হয়ে পড়েছে। আর তার সাথে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হবার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একের পর এক নীতি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও অবস্থার বিশেষ কিছু রকমফের হচ্ছেনা বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

শিকাগো বুথ’স রুস্টান্ডি সেন্টার ফর সোশ্যাল সেক্টর ইনোভেশন নামের একটি সংস্থা সম্প্রতি যে গবেষণা চালিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রধানত মানুষের হাত থেকে এই মুহূর্তে টাকা কমে গেছে। এই গবেষণার মাধ্যমে আরো জানা গেছে, লকডাউন এর পর থেকে ভারতে 80% এর বেশি পরিবারের রোজগার কমেছে। ফলস্বরূপ সংসার চালাতে গেলেও তাঁদের কারোর না কারোর ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছ। গত মার্চ থেকে ভারতে 10 কোটির বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে এই গবেষণায়।

এই গবেষণাকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘লকডাউনের আগে মাথাপিছু রোজগার, লকডাউনের প্রভাব এবং তার ফলে বিভিন্ন সংস্থার তরফে সাহায্যের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গিয়েছে, ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১০ কোটির বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তাঁরা বেশিরভাগই দৈনিক মজুরি ও চুক্তিভিত্তিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’ এই গবেষণায় উঠে এসেছে যেসব রাজ্যে সব থেকে বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে লকডাউনের কারণে, সেগুলি হল- ত্রিপুরা, ছত্রিশগড়, বিহার, ঝাড়খন্ড ও হরিয়ানায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

উপরন্তু ওই গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বলা হচ্ছে 34 শতাংশ পরিবারের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তাঁরা কোন সাহায্য না পেলে আর এক সপ্তাহের বেশি তাঁদের জীবন ধারণ করতে পারবে না বলা হচ্ছে। যাঁদের রোজকার মাসে 3801 টাকার কম, তাঁদের মধ্যেই 84% পরিবারের রোজগার কমেছে। এছাড়া যাঁদের রোজকার 3801 টাকা থেকে 5914 টাকা, তাঁদের মধ্যে 92% পরিবারের রোজগার কমেছে। এখানেই থেমে নেই, যাঁদের রোজগার মাসে 5914 টাকা থেকে 8142 টাকা, তাঁদের মধ্যে 93% পরিবারের রোজগার কমেছে।

রোজগার কমার তালিকায় আরও রয়েছে। যাঁদের রোজগার মাসে 8142 টাকা থেকে 12374 টাকা, তাঁদের মধ্যেও 85% পরিবারের রোজগার কমেছে। এছাড়া যাঁদের মাসে রোজগার 12374 টাকা থেকে 1,01902 টাকা তাদের মধ্যেও 66% পরিবারের রোজকার কমেছে। এই সমীক্ষা থেকে একটি কথা স্পষ্ট – যেসব পরিবারের মাসিক রোজগার অনেকটা বেশি, তাঁদের ক্ষতি কম হয়েছে। তার কারণ তাঁরা সরকারি চাকরি বা অন্য কোন স্থিতিশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে দেখা গেছে। কিন্তু যেসব মানুষ দিন আনা দিন খাওয়া হিসাবে রোজগার করেন, তাঁদেরই ক্ষতি হয়েছে সব থেকে বেশি। তার থেকেও বড় আশঙ্কা করোনা আবহে আগামীদিনে কমতে পারে কাজ, বদলে যেতে পারে কাজের পরিবেশ! ফলে কর্মহীনতা বা কর্মী ছাঁটাই বাড়তে পারে লাফিয়ে লাফিয়ে – যা রীতিমত আশঙ্কার!

লকডাউনের ফলে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ যে বিপদে পড়বেন সে কথা আগেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। এবার সমীক্ষায় তুলে ধরা তথ্য থেকে সে কথা আরো স্পষ্ট হলো বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এইসব মানুষদের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি থেকে বার করার জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিভিন্ন আর্থিক নীতি প্রণয়ন করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার পিএম ফান্ড গড়ে তুলে সাধারণ গরিব মানুষদের জন্য কাজ করে চলেছেন, তা যথেষ্ট প্রশংসাযোগ্য। আপাতত সময়ের উপর ভরসা রাখা এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতির হাত থেকে বেরোনোর জন্য ধৈর্য ধরা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছু করার নেই বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!