এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > বিজেপি সাংসদের রাজনৈতিক হুমকির জেরে বিতর্ক, সমালোচনায় মুখর রাজনৈতিক মহল

বিজেপি সাংসদের রাজনৈতিক হুমকির জেরে বিতর্ক, সমালোচনায় মুখর রাজনৈতিক মহল


লোকসভা নির্বাচনের প্রাক পর্ব থেকেই পশ্চিমবঙ্গের দুই যুযুধান রাজনৈতিক শিবির তৃণমূল ও বিজেপির মহাযুদ্ধ দেখে চলেছে রাজনৈতিক মহল। একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার এর মাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এর সাথে চলছে প্রবলভাবে হুমকি হুঁশিয়ারি দুই পক্ষেই। সম্প্রতি বীরভূম দলের বিজেপির জেলা সম্পাদক ও বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে। এই গ্রেফতারির পর থেকেই বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলকে হুঁশিয়ার করে বিজেপি দল।

তবে এই দুই বিজেপি নেতা 15 ই নভেম্বর ও 16 ই নভেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এরপরে তাঁদের দেখতে আসেন বিষ্ণুপুর সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আর সেখানেই তিনি তৃণমূলের দিকে হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দেন। প্রসঙ্গত, এ বছরের 14 সেপ্টেম্বর ও 16 সেপ্টেম্বর পুলিশ গ্রেপ্তার করে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি ধ্রুব সাহা এবং বীরভূম জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়কে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় বিস্ফোরক আইনে। এর পরেই বিভিন্ন থানায় জামিন-অযোগ্য মামলা দিয়ে তাঁদের আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

তবে 15 ই নভেম্বর ও 16 ই নভেম্বর দুমাস জেল বন্দি থাকার পর জামিনে তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন। দুই নেতার জামিনে মুক্তির খবর পেয়ে তাঁদের দেখতে যান বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। রবিবার বিকেলে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে সৌমিত্র খাঁ হুঁশিয়ারি দেন, তৃণমূল যেভাবে বিজেপি নেতাদের 60 দিন জেল খাটিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল এবং রানা সিংহদেরও একইভাবে 600 দিন জেল খাটানো হবে বলে তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করেন।

রবিবার সৌমিত্র খাঁ মল্লারপুর পৌঁছান দুই জামিন পাওয়া বিজেপি নেতাকে দেখতে। মল্লারপুর শিববাড়ি মাঠে প্রথমে তিনি যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল, জয় শঙ্কর সিনহা, মানস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতিরা। এরপরে সৌমিত্র খাঁ নিজেই মোটর বাইক চালিয়ে পৌঁছান প্রথমে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। সেখানে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও মায়ের সাথে কথা বলে তাদের আশ্বস্ত করেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

অতনু চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকেই সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল, রানা সিংহরা যত আমাদের কর্মীদের জেলে ঢোকাবে আমরা সেই কর্মীদের বাড়ি যাব। সেই সঙ্গে আমরা পুলিশ ও তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ডাক দিয়েছি বীরভূম চলো। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সিউড়িতে আমরা লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করব।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর তিনি পুলিশ ও তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কর্মীদের গ্যাঁজা, বিস্ফোরক কিংবা অস্ত্র আইনে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সময় পাল্টাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা যেন তৈরি থাকেন জেল খাটার জন্য। কারণ কিছুদিন পরেই বিধানসভা নির্বাচন। তখন ওরা কোথায় যাবে। আমাদের তো অন্য রাজ্যে যাওয়ার জায়গা রয়েছে। ওরা কোথায় যাবে। তৃণমূল কংগ্রেস দলটাই উঠে যাবে। তখন কিন্তু ওরা যেন জেল খাটার জন্য প্রস্তুত থাকে।’

এ প্রসঙ্গে বিজেপির বীরভূম জেলা সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো রকম অত্যাচার করা হয়নি। তবে ময়ূরেশ্বর থানা হেফাজতে নিয়ে চরম মানসিক অত্যাচার করে। তবে এই অত্যাচার করে আমাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না। কারণ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে কর্মী, সমর্থক এবং রাজ্য নেতৃত্বের যে সাড়া পেয়েছি তাতে আমি আরো শক্তি অর্জন করেছি। এখন আর কয়েকগুণ আন্দোলন বাড়িয়ে দেবো। জেল যেতে আর ভয় নেই।’

অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি থেকে এদিন সন্ধ্যায় সৌমিত্র খাঁ পৌঁছান বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি ধ্রুব সাহার বাড়িতে। সেখান থেকেও সাংসদ সৌমিত্র খাঁ তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ নেই। আছে শুধু পুলিশ।’ তবে এদিন সৌমিত্র খাঁর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রানা সিংহ বলেছেন, ‘একমাত্র রাষ্ট্রপতি আইনের ঊর্ধ্বে। উনি তাহলে রাষ্ট্রপতি হয়ে গিয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই মনে হচ্ছে। আমরা আইন মেনে চলি। আমরা কাউকে জেলে ঢোকাই না। কাউকে হুমকিও দিইনা।’

তবে সৌমিত্র খাঁ এর এদিনের মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এভাবে খোলাখুলি রাজনৈতিক হুমকি কিভাবে জনসমক্ষে দেওয়া যায়? এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সতর্ক হওয়া উচিত। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, থানা পুলিশ ব্যবহার করার চল রাজনীতিতে আজকের নয়, বহুদিন ধরেই এই নিদর্শন দেখছে রাজ্যবাসী। তবে সৌমিত্র খাঁর এ দিনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষে কোনো বিবৃতি জারি করা হয়নি। আপাতত পরিস্হিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে সেদিকে নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!