এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ডিএর সেকাল ও একাল – জনৈক সরকারি কর্মচারীর হাহাকার!

ডিএর সেকাল ও একাল – জনৈক সরকারি কর্মচারীর হাহাকার!


দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রীয়হারে বেতন না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের করা মামলা বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন। অন্যদিকে, আরেকটি মামলা স্যাটে বিচারাধীন – কলকাতা হাইকোর্ট এই নিয়ে কি নির্দেশ দেয় তার উপরেই অনেকটা নির্ভর করছে সে মামলার ভাগ্যও। এরই মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিএ নিয়ে ভাইরাল হয়ে উঠেছে একটি পোস্ট।

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

জনৈক রাজ্য সরকারি কর্মচারীর লেখা বলেই মনে হয় সেটি। তবে লেখকের নাম বা পরিচয় পাওয়া যায় নি – সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে ঘুরতে সেটি আমাদের হাতে এসে পড়ায় হুবহু তুলে দেওয়া হল সেই পোস্টটি। এখানে দেওয়া তথ্য ও সূত্র যাচাই করে দেখা সম্ভব হয় নি প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফে। এমনকি এই পোস্টটির বয়ানও আমাদের নিজস্ব নয় বা কোন বিশেষ ইস্যুকে সমর্থনের জন্য এটি প্রচারিত নয়। যেহেতু পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে, তাই অনেকের অনুরোধে সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরা হল। লেখাটি নিম্নরূপ –

দাবি উঠুক – বকেয়া ডিএ মেরে দিয়ে পে-কমিশনের ললিপপ দেখানো চলবে না! আসুন বছর দশেক পেছনে ফিরে দেখা যাক –
* ১/৪/০৭ – ৭৪% ডিএ (৫০% বেসিকের সাথে মার্জ করে দেওয়া হলো – ফলে ডিএ দাঁড়ালো ২৪%)
* ১/১/০৮ – ডিএ ২৯%
* ১/৬/০৮ – ডিএ ৩৫%
* ১/১১/০৮ – ডিএ ৪১%
* ১/৩/০৯ – ডিএ ৪৭% (তখন ডিএ-র কেন্দ্রীয় হার ৫৪%)

তারপর এলো রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের জন্য যুগান্তকারী ৫ম পে-কমিশন। ১/১/০৬ এর বেসিককে ১.৮৬ দিয়ে গুণ করে তার সাথে গ্রেড পে যোগ করে রিভাইসড বেসিক পে নির্ধারিত হলো। LDA পোস্টে আমার নিজের প্রি-রোপা বেসিক পে ৩৫৩০/-, আর পোস্ট-রোপা বেসিক পে ৯৩৯০/- হয়েছিল। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিটা যেটা ঘটলো সেটা হচ্ছে বকেয়া ডিএ-কে পরিবর্তিত বেসিক পে-এর সাথে এডজাস্ট করে নেওয়া হলো এইভাবে –
* ১/৪/০৮ – ৩১/৫/০৮ – ২%
* ১/৬/০৮ – ৩১/১০/০৮ – ৬%
* ১/১১/০৮ – ২৮/২/০৯ – ৯%
* ১/৩/০৯ – ৩১/৩/০৯ – ১২%
* ১/৪/০৯ থেকে ১৬%

তখন ডিএ-র কেন্দ্রীয় হার ২২% – অর্থাৎ ২০০৯-র এপ্রিলে যখন বর্ধিত বেতন হাতে পেলাম তখন আমরা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের তুলনায় মাত্র ৬% ডিএ-তে পিছিয়ে ছিলাম, আর এখন সেটা ৪৯%. ভাবা যায়!!

পঞ্চম পে-কমিশন গঠিত হয়েছিল ২৮/৮/০৮ তারিখে (Order No. 6020-F) আর WBS(ROPA) Rules, ২০০৯ কার্যকর হয়েছিল ২৩/২/০৯ তারিখে (Order No.1690-F)। অর্থাৎ কমিশন গঠন করার ৬ মাসের মধ্যেই সরকার সুপারিশ গ্রহণ করে কর্মচারীদের হাতে বর্ধিত বেতন তুলে দিয়েছিল। আর ষষ্ঠ পে কমিশনের বয়স এই নভেম্বরে ৩ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এখনও ‘আগেও এমন হতো’ বলে পাশ কাটিয়ে যাবেন? ১৯৭৭-র আগে ৩০টা বছর অন্য একটি দল পশ্চিমবঙ্গে সরকার চালিয়েছে – ছিল নাকি কোনও পে কমিশন? রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রকৃতপক্ষে পে কমিশনের শুরু WBS(ROPA) Rules, ১৯৮১ দিয়ে।

২০০৭ এর এপ্রিলে আমরা তখন ৭৪% ডিএ পেতাম, ৫০% বেসিকের সাথে মার্জ হলো ফলে HRA, PI এর পরিমাণ বাড়লো। আর এখন ডিএ পাই ১০০% কিন্তু কোনও মার্জিং হলো না প্রশ্ন তুলবো না? হাইকোর্টে সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠা করার যে ‘কোনও ডিএ বকেয়া নেই’, ‘ডিএ কর্মচারীদের অধিকার নয়’ – আরও কত কি! কিন্তু মাননীয় বিচারপতি আগের সরকারে রোপা রুলকে উল্লেখ করে বর্তমান সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছেন।

ষষ্ঠ পে কমিশন যদি আদৌ কোনোদিন দিনের আলো দেখে থাকে আমাদের কিন্তু বকেয়া ডিএ-র হিসেব কড়ায়গণ্ডায় বুঝে নিতে হবে। কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার যে অধিকার আমরা অর্জন করেছিলাম তা কি আমরা ছেড়ে দিতে পারি? আপনি কি বলেন?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!