এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রেশনের ভর্তুকিতে আধার সংযোগ নিয়ে কি তীব্র বিরোধের পথে কেন্দ্র ও রাজ্য? বাড়ছে জল্পনা

রেশনের ভর্তুকিতে আধার সংযোগ নিয়ে কি তীব্র বিরোধের পথে কেন্দ্র ও রাজ্য? বাড়ছে জল্পনা

রেশনের ভর্তুকিতে চাল-গম দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার সংযোগ নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সংঘাত নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে। দিন কয়েক আগে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, ২০১৯ এর জানুয়ারি থেকে রেশন দেওয়ার সময় আধার দেখানোটা বাধ্যতামূলক।

তবে, রেশন গ্রাহকের বয়স জনিত কারণ বা ইন্টারনেট পরিষেবার সমস্যার কারণে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে ই-পিওএস যন্ত্রের মাধ্যমে আধার যাচাই নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে, রেশন কার্ডের সঙ্গে গ্রাহকদের আধার কার্ড দেখানোটা বাধ্যতামূলক। এই প্রক্রিয়ায় খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হলে, তা রেশন দোকানের রেজিস্টারে নথিভুক্ত করে রাখতে হবে।

তবে যেসব গ্রাহকরা এখনো আবেদন করা সত্ত্বেও আধার কার্ড পাননি, তাঁদের শুধু আধার কার্ড দেখানো থেকে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র। তবে সেক্ষেত্রে প্রমাণস্বরূপ তাঁদেরকে আধারের জন্যে আবেদন করার নথি দেখাতে বলা হয়েছে এবং তার সঙ্গে রেশন কার্ড ও নির্দিষ্ট একটি পরিচয়পত্র আনাটা জরুরি। ভোটার সচিত্র পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদির মধ্যে যেকোনো একটি দেখালেই হবে।

কেন্দ্রের তরফ থেকে এই নির্দেশিকা জারির পর রাজ্য সরকারও তড়িঘড়ি এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেয়। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকে আধার কার্ডের উপর নির্ভর করে কাউকে রেশনের খাদ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের ৬টি জেলার ৩৬৬টি রেশন দোকানে ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেলস (ই-পিওএস) যন্ত্রের মাধ্যমে রেশন দেওয়ার পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে।

এই যন্ত্রে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই করে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই ই-পিওএস যন্ত্র কীভাবে কাজ করবে সে সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে রাজ্য খাদ্যদপ্তরের প্রধান সচিব মনোজ আগরওয়ালের তরফ থেকে। তাতে বলা হয়েছে, গ্রাহকের আধার নম্বর রেশন দোকানের যন্ত্রে দিতে হবে।

তবে কোনও গ্রাহকের আধার নম্বর যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে তাঁর মোবাইলে ‘ওটিপি’ পাঠাতে হবে। ওই দুই পদ্ধতিতে আধার যাচাই সম্পন্ন না হলেও রেশন কার্ডের ভিত্তিতে খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার সাফ নির্দেশ রয়েছে রাজ্য সরকারের। নির্দেশনামার নীচে স্পষ্ট উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে, আধার নম্বর না দিতে পারলেও বা তা যাচাই না হলেও কাউকে রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

পাশাপাশি এই প্রশ্নও ওঠে যে কেন্দ্রীয় সরকার আধার বাধ্যতামূলক করার ফলে আগামী দিনে কোনও জটিলতা দেখা দিলে খাদ্যদপ্তর কীভাবে সে সমস্যার সমাধান করবে? এই প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, আধার সংক্রান্ত বিষয়টি নবান্নে জানানো হয়েছে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

খাদ্যমন্ত্রী আরও জানান, নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হবে। তবে ই-পিওএস যন্ত্রে ভোটার সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বরও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি। এদিকে ই-পিওএস যন্ত্র ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের তরফ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে খাদ্যমন্ত্রীকে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটে নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যার জন্যে কাজ থেমে যাচ্ছে। অন্যদিকে, আধার নম্বর যাচাই করা, বিল তৈরি করতেও নানান সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমনটাই চিঠিতে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। এই সব সমস্যার প্রেক্ষিতে যন্ত্র চালু হওয়ার জন্যে ডিলারদের যে অতিরিক্ত কমিশন পাওয়ার কথা সেটাও দাবী করেন তিনি।

অন্যদিকে, কেন্দ্র আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যকে অবিলম্বে ই-পিওএস যন্ত্র চালু করার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে এটা চালু না হলে রেশনের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে এমনটাই মৌখিকভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র।

সূত্রের খবর, এরপর রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি করে পাইলট প্রকল্প চালু করে দেয়। তবে সব রেশন দোকানে এই যন্ত্র বসাতে সময় লাগবে বলেই জানা যাচ্ছে খাদ্যদপ্তর সূত্রে। তবে লোকসভা ভোটের আগে রেশন ব্যবস্থার এই ইস্যুকে নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সংঘাত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!