এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > গোষ্ঠীদ্বন্দ ঘিরে বোমাবাজি, অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে

গোষ্ঠীদ্বন্দ ঘিরে বোমাবাজি, অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে

আবারো একবার প্রকাশ্যে এসে পড়ল তৃণমূল দলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। হাজারবার প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের প্রত্যেক সদস্যকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সাবধান করার পরেও বারংবার একই ঘটনা ঘটে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের পর দলের শৃঙ্খলা আনা খুব জরুরি তা অনুধাবন করতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরেই জেলায় জেলায় দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলকে নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। তবে বেশ কিছু জেলায় তৃণমূল নেতারা একত্রিত হয়ে চললেও, বরাবরের মতো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কেন্দ্র উত্তরবঙ্গ জেলার উত্তর দিনাজপুর রায়গঞ্জ থানায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠল সম্প্রতি।

সম্প্রতি, উত্তর দিনাজপুর রায়গঞ্জ থানার গৌরীগ্রাম এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। ওই এলাকায় তৃণমূলের দুই স্থানীয় নেতা রাহুল ইসলাম ও রেজাউল হক। তাঁদেরকে কেন্দ্র করে দুটি গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেই। এবং এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে গৌরীগ্রাম এলাকাটি থমথম করছে। সূত্রের খবর, শনিবার গভীর রাতে গৌরীগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাহুল ইসলামের বাড়িতে তুমুল বোমাবাজি হয়। এই ঘটনায় রাহুল ইসলাম এলাকার জন্য আরেক তৃণমূল নেতা রেজাউল হককে সম্পূর্ণ ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন।

অন্যদিকে, রেজাউল হক এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব সম্পূর্ণ ঝেড়ে ফেলে দাবি জানান, তাঁর সঙ্গে সম্পূর্ণ এলাকার লোকজন রয়েছে। রাহুল এবং তাঁর দলের লোকজন বোমাবাজি করে রেজাউল হককে বদনাম করার চেষ্টা চালাচ্ছে। উল্লেখ্য, রেজাউল হক স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। এ প্রসঙ্গে রাহুল অভিযোগ জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নিয়ে বহু দুর্নীতি এলাকায় চলছে। আর সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন এখন রাহুল। আর তাই রাহুলের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে এই বোমাবাজি ঘটলো। এই ঘটনা সামনে আসার সাথে সাথেই তৃণমূল অন্দরে চূড়ান্ত সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। রীতিমতো অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শনিবার রাতে দীর্ঘক্ষন বোমাবাজির ফলে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এবং এলাকা হয়ে থাকে থমথমে। বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় গিয়ে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাজুড়ে পুলিশের পিকেটিং বসেছে। অন্যদিকে, এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানা। তবে এখনো পর্যন্ত তদন্ত অনুসারে কারোর নাম উঠে আসেনি, যার ফলে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সমান তালে চলে আসছে। এই নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বহুবার সাবধান করেছেন উত্তরবঙ্গের জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে, গোষ্ঠীদ্বন্দ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলিকে।

জেলাগুলির কোথাও দেখা যাচ্ছে জেলা সভাপতি বনাম সংসদ বা কোথাও জেলা পরিষদের সভাপতি বনাম জেলা সভাপতির মধ্যে চূড়ান্ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গ থেকে শূন্য হাতে ফেরার পর তৃণমূল দলের অন্দরেই তদন্ত চলে এবং এই তদন্তে গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি উঠে আসে। যার ফলে নেত্রী বারংবার সাবধান করতে থাকে এই গোষ্ঠী কোন্দল এর বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু শনিবারের ঘটনা প্রমাণ করল আবার তৃণমূল নেত্রীর সাবধানবাণী কোন রকম কাজই করেনি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।

বারংবার এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়েছে শাসক দল। ইতিমধ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে বিরোধী দলগুলি বারংবার সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে নিয়ে রীতিমতন সরব হয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, দলের প্রতিটি স্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ যে দলের সর্বস্তরে কাজ করেনি তা উত্তরবঙ্গের তৃণমূল দলের বেশ কিছু স্তরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আশায় প্রমাণিত হচ্ছে। আপাতত এইসব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সামলাতে আগামী দিনে তৃণমূল সুপ্রিমো নতুন কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, সেদিকেই নজর রাখছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!