এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > আবাস যোজনার টাকা যাচ্ছে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের আত্মীয়-পরিজনদের কাছে! দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল

আবাস যোজনার টাকা যাচ্ছে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের আত্মীয়-পরিজনদের কাছে! দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের বিভিন্ন নেতা-কর্মী-সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি বিষয়ে ইতিপূর্বে বহুবার বিভিন্ন অভিযোগ উঠে এসেছে বিরোধী দলসহ বিভিন্ন মহল থেকে। এ প্রসঙ্গে এবার মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা সাহার নামে উঠে এল সরকারি আবাস যোজনার টাকা নিয়ে স্বজনপোষণের এক গুরুতর অভিযোগ।

সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, মালদহের হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিতা সাহা বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রাথমিক তালিকায় নিজের তিন ভাইয়ের নাম নথিভুক্ত করেছেন। সেই সঙ্গে করেছেন তাঁর বোন ও ভাগ্নের ছেলেদের নাম। আর, এখানেই শেষ নয়, এই তালিকাতে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান, জনৈক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার নাম যেমন আছে, সেই সঙ্গে সেই নেতার স্ত্রী, মা, ভাই প্রত্যেকের নাম জ্বলজ্বল করছে এই আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকাতে।

এর সঙ্গেই আবার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্লক অফিসের অস্থায়ী কর্মী থেকে শুরু করে বেশ কিছু দালান বাড়ির মালিকের নামও এই আবাস যোজনা প্রকল্প নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু গরিব মানুষের গৃহ নির্মাণের এই প্রকল্পের তালিকাতে এতজন অবস্থাপন্ন মানুষদের নাম কিভাবে উঠে এলো, এই অভিযোপগে বিরাট শোরগোল পড়ে গেছে মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের আইহো পঞ্চায়েত এলাকায়।

প্রসঙ্গত, আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনিতা সাহা কংগ্রেস দলের টিকিটে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি নিজের জার্সি বদলে তৃণমূলে যোগদান করেন ও গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান পদে উন্নীত হন। এ প্রসঙ্গে জানা গেছে, এই এলাকার পূর্ব পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন তৃণমূল ব্লকের প্রভাবশালী এক নেতা প্রতাপ দাস। যিনি পূর্বে কংগ্রেসের নেতা ছিলেন।

এই নির্বাচনে তাঁর আসনটি মহিলাদের সংরক্ষিত করে দেওয়ায় এই আসনে তিনি অনিতা সাহাকে প্রার্থী করেছিলেন, যিনি জয়ীও হয়েছিলেন। সম্প্রতি, আইহো গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলের বেশকিছু এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন যে, বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা সাহা প্রাক্তন উপপ্রধান প্রতাপ দাস হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছেন। প্রতাপ বাবুর হাতেই আছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে, মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রতিরাম পাড়া গ্রামে থাকেন তৃণমূল নেতা মুকুল দাস। তিনি আবার ব্লক অফিসের জনৈক অস্থায়ী কর্মীও । গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, মুকুল দাসের পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনা প্রকল্প তিনি ও তাঁর স্ত্রী করুণাবালা নামও নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রী করুণাবালা জানিয়েছেন, “আমার স্বামী ব্লকে এবং আমি পঞ্চায়েতে আবেদন করেছিলাম। তাই দু’জনের নাম এসেছে।”

অন্যদিকে মালদহ- লালগোলা রাজ্য সড়কের পার্শ্ববর্তী আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বক্সিনগর গ্রামে একটি দোতলা বাড়ির মালিক হলেন পেশায় ব্যবসায়ী বাবলু বিশ্বাস। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, এই বাবলু বিশ্বাসের নামও আবাস যোজনা প্রকল্পে স্থান পেয়েছে।

এভাবে একাধিক অবস্থাপন্ন তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম আবাস যোজনা প্রকল্প উঠে আসায় তা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন বিভিন্ন বিরোধীদলের নেতৃবৃন্দরা। আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী কংগ্রেস নেতাদীপক সাহা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “সরকারি প্রকল্পের ঘর বিলি নিয়ে চলছে স্বজনপোষণ।” কংগ্রেস নেতা দীপক সাহার এই মন্তব্যের জবাবে পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা সাহা জানিয়েছেন, “আমার ভাইদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। আবেদন করেছিল, যোগ্যতা অনুযায়ীও পেয়েছে। স্বজনপোষনের অভিযোগ ঠিক নয়।”

প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত প্রধানকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছে আবাস যোজনা তালিকায় তবে এতজন তৃণমূল নেতার নাম কি করে এলো? তার জবাবে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, “সরকারি প্রকল্পের ঘর দুই ভাবে জমা পড়েছিল। কে কোথায় আবেদন জমা দিয়েছিলেন তা আমার জানা নেই।” অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে আইহো গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান প্রতাপ দাস এই তালিকায় তাঁর নাম থাকা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “আমি কোথাও আবেদন করিনি। কেন আমার নাম তালিকায় রয়েছে বুঝতে পারছি না। আর মা বয়স্ক, ভাইয়ের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়।”

প্রসঙ্গত, মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ” পঞ্চায়েতের ঘর নিয়ে একাধিক অভিযোগ পাচ্ছি। যোগ্য উপভোক্তারাই ঘর পাবেন। চূড়ান্ত তালিকায় সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!