এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আখের গোছানো ও দ্বন্দ্ব করে দলের ক্ষতি করা নেতাদের ‘অন্তিম হুঁসিয়ারী’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

আখের গোছানো ও দ্বন্দ্ব করে দলের ক্ষতি করা নেতাদের ‘অন্তিম হুঁসিয়ারী’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

কোচবিহারে রাসমেলার ময়দানে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাকে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনা ছিল রাজনৈতিকমহলে। ব্রিগেড প্রস্তুতির এই সভায় তৃণমূলের রাজ্যস্তরের এই হেভিওয়েট নেতা জেলা প্রশাসনকে কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর ছিল সবার।

প্রত্যাশিত ভাবে সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে শুরু থেকেই অন্য মেজাজে ছিলেন অভিষেক। দলবিরোধী কাজ করলে রেয়াত দেওয়া হবে না কাউকেই। মঙ্গলবার কোচবিহারের জনসভার মঞ্চ থেকে দলীয় অন্দরে তৈরি হওয়া যুব এবং মাদার দ্বন্দ্বকে উদ্দেশ্য করে এভাবেই অন্তিম হুঁসিয়ারী দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন,মূল সংগঠন ছাড়া কোনো শাখা সংগঠনের বাড়বাড়ন্ত সহ্য করা হবে না।

এ প্রসঙ্গে দিনহাটার নিশীথ প্রামাণিকের নাম না করেই তাকে বহিষ্কারের নজির প্রকাশ্যে এনে দলের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্য জনসভার মঞ্চ থেকেই হুমকি দেন তিনি। গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন যাঁরা,তাঁদেরকেও পরোক্ষভাবে তোপ দাগেন অভিষেকে। এমনকী দলের যেসব নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে পকেটপূর্তি করছে তাঁদেরকেও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানাতে ভোলেন না তৃণমূলের এই যুব নেতা।

গতকাল সভামঞ্চে উপস্থিত বিভিন্ন স্তরের যুব নেতা এবং যুবঘনিষ্ঠ বিধায়কদের অস্বস্তিতে ফেলে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তীব্র ভাষায় সতর্ক করতে শুরু করেন অভিষেক। বলেন,”আমি বারবার বলেছি তৃণমূল কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কে বড় কে ছোট এসব করা যাবে না। আমাদের দল একটা। নেত্রীও একজন। মাথায় রাখবেন একজনকে আমি চিহ্নিত করেছি, আমি বারবার সুযোগ দিয়েছিলাম, বলেছিলাম সমঝে চল, নিজেরা সতর্ক হও। কিন্তু কেউ যদি ভাবে দলের ভিতরে থেকে দলকে দুর্বল করব, এই জেলার পর্যবেক্ষকের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আমি ছেড়ে কথা বলব না।”

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি তিনি এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশকেও মনে করিয়ে দেন। বললেন,মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই পুরানোদের সঙ্গে নতুনদের একত্রিত হয়ে দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার বার্তা দিয়ে এসেছেন। এখন সংগঠনের স্বার্থে বিরোধীশিবির থেকে কেউ যদি তৃণমূলে আসতে চায় তাহলে তাহলে স্বাগত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া এদিন জেলার গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে অভিষেক বাবু আরো বলেন,”একটা বটগাছের শাখা প্রশাখা কেটে দেওয়া হলে সেই গাছ শক্তিশালী হয় না। আবার তার শিকড় কেটে দিলেও শক্তিশালী হয়না। যুব যুব’র কাজ করবে। মাদার মাদারের কাজ করবে। মাথায় রাখবেন আমি বুক ঠুকে একটা কথা বলে যাচ্ছি তৃণমূলের মূল সংগঠনকে বাদ দিয়ে কোনও শাখা প্রশাখা চলবে না। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে কেউ যদি দলের ক্ষতি করে তবে এটা আমার শেষবারের হুঁশিয়ারি আমি ছেড়ে কথা বলব না।”

তাঁর দাওয়াইতে কাজ হল কিনা সেটা দেখার জন্যে মাসখানেকের ফেরে তিনি আবার কোচবিহার সফরে আসবেন বলেই আগাম সতর্ক করে দেন দলীয় নেতা-কর্মীদের। এছাড়া বিরোধীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন,তৃণমূল প্রস্তুত হয়েই রয়েছে। লোকসভা ভোটের ময়দানে তৃণমূল দেখিয়ে দেবে কীভাবে গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করে জিততে হয়।

পাশাপাশি, ১৯’এর লোকসভা ভোটের নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে ৫ লক্ষ ভোটে জেতানোর দাবীও করেন গতকালের সভামঞ্চ থেকে। অন্যদিকে,চলতি মাসের ব্রিগেড সভায় জেলা থেকে রেকর্ড পরিমান লোক জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রাও দিয়ে গিয়েছেন তিনি। বিজেপির রথযাত্রার প্রসঙ্গ তুলে দিলীপ ঘোষেদের তুলোধনা করতে ছাড়লেন না তিনি। দাবীতে জানালেন,এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৫০ টি আসনও পাবে না।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত,নিশীথবাবুকে দল থেকে ছাটাই করার পর এখনো দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে রোখা যায়নি। তাই জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রাশ টানতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন,সেটা নিয়ে কৌতূহল ছিল তৃণমূল কর্মীদের। মাদার নাকি যুব কোন গোষ্ঠীকে বেশি গুরুত্ব দেবেন অভিষেক,সেটা নিয়ে সভার আগের থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল দলীয় অন্দরে।

তবে লোকসভা ভোটের দিকে চোখ রেখেই অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উপর ভরসা রেখেছেন অভিষেক। সভা শেষ হওয়ার পর রবীন্দ্রনাথবাবু একজন বিধায়ককে সামনে পেয়েই জানিয়ে দেন,”শিং ভেঙে বাছুরের দলে আর যাবেন না। কোনও এদিক ওদিক করা যাবে না।” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরো আগে জেলার পর্যবেক্ষক হলে দলের সংগঠন আরো মজবুত হতো বলেই বক্তব্যে জানালেন দলের জেলা সহ সভাপতি আবদুল জলিল আহমেদ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!