এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > আর ভরসা নেই অভিষেক-পিকের উপর? মমতার এই নতুন পদক্ষেপ ঘিরে তীব্র চর্চা শুরু রাজনৈতিক মহলে

আর ভরসা নেই অভিষেক-পিকের উপর? মমতার এই নতুন পদক্ষেপ ঘিরে তীব্র চর্চা শুরু রাজনৈতিক মহলে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এখন তিনিই দলের সমস্ত সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ার পর – তৃণমূলের প্রধান রনকূশলী এখন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা প্রশান্ত কিশোরের উপরে কি এখন ভরসা হারাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী? বিস্ফোরক এই প্রশ্নটিই এখন উঠে গেল রাজ্যের রাজনৈতিক ময়দানে।

সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ খুললেই – এখন এটি যেন অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু কেন হঠাৎ এমন একটি বিষয়ে জলঘোলা হওয়া শুরু করল? এর পিছনে বড় কারণ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক একটি বড়সড় সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর, হুগলি জেলার গোষ্ঠী কোন্দল বন্ধ করতে বুধবার সেখানকার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর সেই বৈঠক চলাকালীন সবাইকে অবাক করে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এবার থেকে তিনি নিজে হুগলি জেলার সংগঠন দেখভাল করবেন। স্বাভাবিকভাবেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠক করলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে যেভাবে নিজে সংগঠন দেখার কথা জানিয়ে দিলেন, তাতে দলনেত্রীর ভরসা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর থেকে কমে আসছে বলে দাবি করছেন একাংশ।

যার ফলে এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভরসা উঠে যাওয়া নিয়ে দলের অন্দরে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই হুগলি জেলার গোষ্ঠী কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছিল। সম্প্রতি সেই জেলার একাধিক তৃণমূল বিধায়ক এবং সাংসদ প্রকাশ্যে এমন কিছু মন্তব্য করছিলেন, যার ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছিল শাসক দলকে। তাই এই পরিস্থিতিতে বুধবার সেই জেলার সমস্ত নেতা, বিধায়ক এবং সাংসদদের নিয়ে নিজের অফিসে একটি বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে ধরেন তিনি। যেখানে সেই ফোনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় বলে দেন যে, এখন থেকে সেই জেলার সংগঠন তিনি দেখভাল করবেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পর নানা মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তাহলে যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলা নিয়ে বৈঠক ডাকলেন, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই জেলার দায়িত্ব না দিয়ে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেই জেলার দায়িত্ব নিলেন?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা প্রশান্ত কিশোর নয়, এখন থেকে তিনিই তৃণমূলের কঠিন সমস্যাগুলোর সমস্ত কিছু দেখভাল করবেন! একাংশ বলছেন, এর ফলে অভিষেকবাবুর গুরুত্ব অনেকটাই কমিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এর পেছনে প্রকৃত কারণ কি, তা নিয়ে নানা মহলে নানা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ আবার মনে করছেন সম্পূর্ণ অন্য কথা। তাঁদের মতে, একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রধান দুই কান্ডারী হতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোর। আর তাই, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা নেই’ – এই ধরনের কথা একেবারেই বালখিল্য! এই ধরনের কথা বলে শুধুমাত্র হাওয়া গরম করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাঁদের মতে, তৃণমূলে শেষ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁর সবথেকে বড় ভরসার জায়গা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর গোসা করে নয়, বরঞ্চ সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি নিজেই সরাসরি হুগলি জেলা দেখার কথা বলে সমস্ত নেতাদের সতর্ক করে দিলেন। অর্থাৎ তিনি তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সকলকে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, এখন থেকে কোনো গোষ্ঠী কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না।

এছাড়াও, তাঁদের মতে, অভিষেক ব্যানার্জি বা পিকের উপরেই গোটা রাজ্যের দায়িত্ব। সুদূর দার্জিলিং থেকে দীঘা, সুন্দরবন থেকে ঝাড়গ্রাম – যেখানেই সমস্যা সেখানেই আসরে নামতে হচ্ছে এই দুই মাহারথীকে। আর তাই, তাঁদের ভার কিছুটা হালকা করতেই ঘরের কাছের হুগলীর দায়িত্ব নিজের কাঁধে টেনে নিলেন। ফলে, বাকি জায়গায় আরও বেশি করে সময় দিতে পারবেন অভিষেক-পিকে জুটি।

পাশাপাশিই, তৃণমূল নেত্রী দলকে বার্তা দিতে চাইছেন, সকলকে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। আর সকলের কাজ কেমন হচ্ছে, তা সরাসরি নিজে দেখবেন। আর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সরাসরি হুগলি জেলার প্রতি নজর রাখেন, তাহলে সেখানকার নেতারা অনেকটাই সতর্ক থাকবেন বলে দাবি একাংশের। তাই এক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে কোনো দূরত্ব নয়, বরঞ্চ সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দাবি একটা বড় অংশের।

জানা গেছে, এদিন সমস্যার সমাধান করতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেখানে এই কমিটি বৈঠক করে আগামী দিনে জেলার কোথায় কোন কর্মসূচি নেওয়া হবে, তা চূড়ান্ত করবেন বলে খবর। লোকসভা নির্বাচনে দেখা গেছে হুগলী জেলায় ব্যাপক প্রসার হয়েছে বিজেপির। একটি আসন ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি, বাকি দুটি আসনেও তৃণমূলের ঘুম উড়িয়ে ছেড়েছে তারা। আর তাই বিধানসভার আগে, কিছুটা অতিরিক্ত সতর্কতা নিলেন তৃণমূল নেত্রী বলেই অভিমত অনেকের।

কেমন হল এই বৈঠক? এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তরপাড়া তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল বলেন, “বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফোন করে অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। আশা করছি, সমস্যা মিটবে। ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে।” সব মিলিয়ে এবার হুগলি জেলার সংগঠন নিজে দেখার কথা বলে জেলা নেতাদের কার্যত সতর্ক করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তাল পর হুগলি জেলার সংগঠন কতটা চাঙ্গা হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!