এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > অবশেষে গনি মিথ ধুয়ে মুছে সাফ! জেলা জুড়ে একটাই রিংটোন – ‘মমতাং স্মরণম গচ্ছামি’!

অবশেষে গনি মিথ ধুয়ে মুছে সাফ! জেলা জুড়ে একটাই রিংটোন – ‘মমতাং স্মরণম গচ্ছামি’!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  মালদহকে বলা হত কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। 2011 সালে বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসলেও, মালদহে আধিপত্য বজায় রেখেছিল হাত শিবির। পরবর্তীতে যত সময় গিয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের তিক্ততা বেড়েছে। কিন্তু মালদহের মানুষ কংগ্রেসের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। বারবার নির্বাচনে কংগ্রেস এখানে ব্যাপকভাবে সাফল্য পাওয়ার কারণে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে হয়েছিল, এবার মালদহের মানুষ যেন আমাকে ফিরিয়ে না দেয়।

অর্থাৎ এখানে কংগ্রেসের ভিত শক্তিশালী হওয়ার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এইরকম কথা বলেছিলেন, তা একপ্রকার স্পষ্ট। কিন্তু 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই মালদহ জেলা কংগ্রেসের ফাটল কার্যত চোখে পড়ার মতো। গনি গড় হিসেবে পরিচিত এই জেলা থেকে এবার একটি আসনও দখল করতে পারেনি হাতফুল শিবির। যেখানে কোতোয়ালি ভবনের অন্যতম সদস্য তথা জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূরের উদ্যোগে মালদহ জেলা থেকে ব্যাপক আসন লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

স্বাভাবিক ভাবেই যে কোতোয়ালি ভবনকে একসময় কংগ্রেসের রননীতির মূল জায়গা বলে ধরা হত, সেই কোতোয়ালি ভবন কি এবার চলে যেতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে? বর্তমানে এই প্রশ্নই দানা বেঁধেছে মালদহ জেলাজুড়ে। একাংশ বলছেন, গনি পরিবারের অন্যতম সদস্য মৌসম বেনজির নূর অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। এর আগেও আবু নাসের খান চৌধুরী থেকে শুরু করে গনি পরিবারের একাধিক সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেভাবে সাফল্য আসেনি।

তবে মৌসম বেনজির নূর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব পেয়ে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে অপ্রাসঙ্গিক করে সেই গনি গড়ের দখল নিয়ে তুলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। কার্যত কংগ্রেসের যে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে ধরা হত মালদহ জেলাকে, এখন সেখানে তৃণমূলের পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা এতটাই তীব্র হয়ে উঠেছে এই মালদহ জেলায় যে, কংগ্রেসকে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যেতে হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে গোটা মালদহ জেলা জুড়ে কংগ্রেসের গড় কোতোয়ালি ভবন থেকেই যে এখন তৃণমূলকে আরও জনপ্রিয় করার কাজ শুরু করে দেবেন মৌসম নূর, তা বলাই যায়।

কিন্তু কিভাবে তিনি এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন? অতীতে যে কাজ কেউ করতে পারেনি, সেখানে গনি পরিবারের অন্যতম সদস্যা হয়ে দলের দায়িত্ব নিয়ে গোটা মালদহ জেলাকে কিভাবে সবুজ আবিরে রঙিন করলেন তিনি? এদিন এই প্রসঙ্গে মৌসম বেনজির নূর বলেন, “আমাদের কৈশোরে দেখেছি বরকত মামা সিপিএম বিরোধী এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আস্থা রাখতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে। বরকত মামা সিপিএমকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলার ডাক দিয়েছিলেন। হাতে-কলমে সেই কাজ করে দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন তিনি। আমি তার সৈনিক হিসেবে বাধ্য ছাত্রীর মত তার নির্দেশ মেনে চলাতেই এই সাফল্য এসেছে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার মালদহ জেলা নিয়ে বড় চিন্তা ছিল স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। কেননা এই জেলার সিংহভাগ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত যে মালদহ জেলা কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল সকলের কাছে, সেখানে ঘাসফুল ফুটিয়ে গনি মামার ভাগ্নি মৌসম নূর তা তুলে দিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। যার ফলে কংগ্রেসের মিথ এখানে ভেঙেচুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের স্রোতের সঙ্গে মিশে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!