অধীর চৌধুরীকে লোকসভায় মাত দিতে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী তালিকায় চূড়ান্ত চমক দিতে চলেছে তৃণমূল মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য February 22, 2019 এবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে অধীর চৌধুরীকে ঘায়েল করতে তাঁর শ্যালক অরিৎ মজুমদারকেই অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে উদ্যোগী তৃণমূল কংগ্রেস,এমনটাই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিকমহলে। মুর্শিদাবাদে তৃণমূল এবং প্রদেশ কংগ্রেসের জোট বাঁধা সম্ভাবনা একেবারেই নেই। কাজেই এই কেন্দ্র কংগ্রেসের থেকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টায় কোনো খামতি রাখতে চায় না তৃণমূল। সেজন্যে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ময়দানে তাঁরই শ্যালক অরিৎবাবুকে তৃণমূলের তরফ থেকে নামানোর প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ছাত্র রাজনীতির মধ্যে দিয়েই রাজনৈতিক জীবনের হাতেখড়ি অরিৎবাবুর। স্থানীয় সূত্রের খবর,১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতির পদে ছিলেন তিনি। সেসময় জেলায় অধীরবাবুর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। অধীরবাবুর ছায়াসঙ্গী হিসাবেই এসময় পরিচিতি লাভ করেছিলেন অরিৎবাবু। ২০০১সালে বিধানসভা ভোটে নবগ্রাম কেন্দ্রে অরিৎকে প্রার্থী করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফ থেকে। জেলা সিপিএমের তদানীন্তন সম্পাদক নৃপেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভোটে হারার পরও জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্বে বসানো হয় তাকে। এরপর ২০০৬সালে বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। ২০১০ সালে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদে এলেও দলে গুরুত্ব হারাতে থাকেন তিনি। রাজনৈতিক আঙিনা একেবার কোনঠাসা হয়ে যাওয়ায় গুরুত্ব বাড়াতে ২০১৬ সালের ২১জুলাই কংগ্রেস-সিপিএম জোটের বিরোধিতা করে তৃণমূলে শামিল হন অরিৎ। বর্তমানে তিনি তৃণমূলের বহরমপুর মহকুমা কমিটির সভাপতি পদে বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাঁর নেতৃত্বেই পঞ্চায়েত ভোটে এই মহকুমার বহরমপুর, বেলডাঙা-১ ও ২, নওদা ও হরিহরপাড়া, এই পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তৃণমূল। ধীরে ধীরে একজন দক্ষ সংগঠক হিসাবে তৃণমূলে যায়গা করে নেন তিনি। সম্প্রতি দলের টাউন সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় শহরে মিনি ব্রিগেড সভা করে তিনি নজরে এসেছেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের। এমনকি নওদা পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় কোন্দল মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। কাজেই এরকম একজন প্রার্থীকে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটযুদ্ধে নামানোই দলের পক্ষে ফলপ্রসূ হবে বলেই মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ। অবে অরিৎ বাবু অবশ্য জানিয়েছেন,’লোকসভা ভোটের প্রার্থী নিয়ে কে, কী বলছে, তা জানা নেই। তবে, এবার বহরমপুর সহ জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রেই ঘাসফুল ফুটবে বলে আশা করছি।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর তালিকায় আরো কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন একসময়ের অধীর ঘনিষ্ঠ কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার। এছাড়া প্রতিযোগিতায় নাম রয়েছে পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ও নদীয়ার করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্রের। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে,অরিৎ বাবু এবং অপূর্ববাবু বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে অধীরবাবুর জনপ্রিয়তার সামনে টিকতে পারবে না। কারণ একে তো বহরমপুর কংগ্রেসের শক্তিঘাঁটি তারউপর অধীর চৌধুরী রাজনীতিতে পোড় খাওয়া একজন দক্ষ সংগঠক। এলাকায় সর্বত্রই তাঁর গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। কাজেই ওই সংশ্লিষ্ট দুজনের মধ্যে একজনকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তে বেঁকে বসতে পারে তৃণমূলের একাংশ। কাজেই দলের ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে শুভেন্দু বা মহুয়ার মতো হেভিওয়েট নেতাদের অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নামাতে পারে তৃণমূল। কারণ দুজনেই দক্ষ এবং পরিশ্রমী। দুজনেরই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে। উল্লেখ্য,বহরমপুরে তৃণমূলের কয়েকটি জনসভায় শুভেন্দুবাবুকে প্রার্থী করার দাবি তোলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দলনেত্রী নেবেন বলেই আপাতত বিষয়টি এড়িয়ে যান শুভেন্দু বাবু। ওদিকে,তৃণমূল যতোই উচ্চবাচ্য করুক না কেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের রাশ আলগা করতে পারবে না বলেই আশা রয়েছে কংগ্রেস নেতাদের। অরিৎ বাবু হোক বা অন্য কেউ,অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তৃণমূল কখনোই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে জিততে পারবে না বলেই আগাম জানিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মহফুজ আলম। আপনার মতামত জানান -