এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > দ্রুত বেতন কমিশন লাগু-র দাবিতে এবার ঝড় তুলতে চলেছে কর্মচারী সংগঠনগুলি

দ্রুত বেতন কমিশন লাগু-র দাবিতে এবার ঝড় তুলতে চলেছে কর্মচারী সংগঠনগুলি

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের তিন বছর পূরণ হতে চলেছে আগামী ২৬ নভেম্বর। যেহেতু সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশেই এটি তৈরি তাই কর্মরত কর্মী থেকে পেনশন প্রাপক, সকলেই বেতন বৃদ্ধির একটি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। বড় অংশের বকেয়া প্রাপ্তির যোগও রয়েছে এর সঙ্গে। সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে বর্ধিত বেতনের সুপ্ত বাসনা জেগেছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীমহলে। তবে স্বপ্ন দেখে হাত পা গুটিয়ে বসে নেই তাঁরা। রীতিমতো কড়ায় গন্ডায় দাবীদাওয়া গুলো আদায় করতে এখন থেকেই উঠে পড়ে লেগেছে কর্মচারী সংগঠনগুলো।

সেই সূত্রে সিপিএম প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন কো – অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্করের তরফ থেকে এই ইস্যুতে চিঠি গিয়েছে নবান্নে। একই দাবীতে সক্রিয় রয়েছেন আইএনটিইউসি প্রভাবিত সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল পেনশনার্স অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সমীর মজুমদার।

দাবীতে বিজয়বাবু জানিয়েছেন, ৫৬% ডিএ বকেয়া রয়েছে বর্তমানে। তার উপর বেতন কমিশনের কাজ এগোচ্ছে না তিন বছর ধরে। দেশের প্রায় সব রাজ্যেই বেতন কমিশন লাগু হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের এখনো কেন বঞ্চিত রাখা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বর্তমানে মাত্রাছাড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ার ইস্যুর ভিত্তিতে কেন কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো দরকার এবং বকেয়া ডিএ প্রদান করা দরকার সে যুক্তি সামনে রেখে বেতন কমিশন লাগু করার দাবী জানান তিনি। এবং ব্যাপারে প্রয়োজন হলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেন তিনি আলোচনায় বসার।

অন্যদিকে,বেতন কমিশন লাগুর পক্ষে সওয়াল করে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারকে হুঁসিয়ারী দেন মলয় মুখোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য,আবার যদি বেতন কমিশনের মেয়াদ বেড়ে যায় তাহলে রাজ্যের কর্মচারীসমাজ অভিরূপবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। তার জেরে পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে উঠতে পারে। তাই রাজ্যসরকারের দিকটা না ভেবে কর্মচারীদের স্বার্থে কমিশনের চেয়ারম্যানকে কাজ করার পরামর্শ দিলেন কনফেডারেশনের এই নেতা।

পাশাপাশি, পেনশন প্রদানের স্বার্থে বেতন কমিশনের মেয়াদ আর না বাড়ানোর আবেদন করলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পেনশনার্স অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক। তার সঙ্গেই অবসরপ্রাপ্তদের কেন্দ্রীয় হারে বেতন সংশোধনের দাবী জানালেন তিনি। একইসঙ্গে বাড়িভাড়া ভাতা কেন চালু করা উচিৎ তার পক্ষে যুক্তি রাখলেন। বয়সকালে কর্মীদের শারীরিক অবস্থার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য বিমার পুরোটাই ক্যাশলেস করার দাবীও তুললেন প্রবীন এই নেতা। বকেয়া ডিএ’র হারের জেরে অবসরপ্রাপ্তরা প্রতি মাসেই মোটা টাকা হারাচ্ছেন,এ নিয়ে আক্ষেপও প্রকাশ করলেন সমীরবাবু। জীবনের বেশীরভাগ সময়ই সরকারের প্রতি দায়বদ্ধতার মূল্য আর কতদিন দিতে হবে,সে বিষয়ে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

উল্লেখ্য,কর্মচারী সংগঠনের বেতন কমিশন লাগুর এই আবেদনে রাজ্যসরকার কবে সাড়া দেন সেটাই দেখার! তবে লোকসভা ভোট যেহেতু সামনে,তাই এই মুহূর্তে রাজ্যের কর্মচারীদের নিশ্চয়ই নিরাশ করতে চাইবে না শাসক দল। কারণ সরকারী কর্মচারীদের ভোটব্যাঙ্কগুলো হারানোর কোনো অভিপ্রায় নেই জোড়াফুল শিবিরের। কাজেই অবিলম্বে রাজ্যের সরকারের কর্মচারীদের দাবীদাওয়া গুলো মেটানো নিয়ে সদর্থক পদক্ষেপ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,এমনটাই মনে করছে অভিজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!