এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুরভোট নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত মমতা সরকারের, জানালেন কলকাতার মেয়র, জেনে নিন

পুরভোট নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত মমতা সরকারের, জানালেন কলকাতার মেয়র, জেনে নিন

ভোট বড় বালাই। আর তা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার নিরিখেই হোক বা রাজনৈতিক পালাবদলের নিরিখেই – বরাবরই ভোটের ব্যাপারে শাসকদলের কিন্তু অনাগ্রহ থেকেই যায়। আর সেটা যদি নিজের সত্তা বিরোধী ভোট হয় তাহলে তো কথাই নেই। তাই এবার বিধানসভায় পৌরসভাগুলোতে প্রশাসক বসানোর মেয়াদ বাড়ানোর বিল আনলে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী কথা কলকাতার মহানাগরিক জনাব ফিরহাদ হাকিম বারবার ভোট না করে রাজ্যে পুরসভাগুলি নির্বাচন একসঙ্গে করব এবং সেই ভোটের ফলে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করবে বলে বিধানসভায় জানান।

মন্ত্রীর বক্তব্য, লোকসভা ভোটে বিজেপি বড় জয় পেলেও তাদের সংখ্যা শাসকদলের সংখ্যার চেয়ে অনেকটা কম। এছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্য, যথা, রাজস্থান, কর্ণাটক ইত্যাদি জায়গায় লোকসভায় বিজেপি ভালো ফল করলেও তার প্রভাব স্থানীয় নগর ও গ্রামের নির্বাচনে পড়েনি।

যার থেকেই আশা করা যায় বাংলাতেও লোকসভার ফল যাই হোক স্থানীয় পুরসভার ভোটগুলোর ফল রাজ্যের শাসক দলের পক্ষে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভায় আলোচনায় এমন কথাই উঠে আসে পুরমন্ত্রীর কন্ঠে।

তিনি বলেন, “রাজ্যে বিরোধী দল হিসেবে বাম ও কংগ্রেস থাকুক। কংগ্রেস ও সিপিএমকে আমরা সময় দিতে চাই। কিন্তু তারা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না এদিন তা বলে গেরুয়া শিবিরকে খোঁচা দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। এমনকি কংগ্রেস, সিপিএম যদি না চায় তাহলেও তৃণমূল কংগ্রেস তা মেনে নেবে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, আগে পুরসভার প্রশাসক বসানোর মেয়াদ পর্যন্ত ছিল। কিন্তু এবারে তা বাড়িয়ে 12 মাস অর্থাৎ 1 বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। তাছাড়াও কাউন্সিলার নির্বাচিত না হয়ে যে কেউ চেয়ারম্যান হতে পারে। পরে ছয় মাসের মধ্যে তাকে কাউন্সিলর হিসেবে জিতে আসতে হবে। আর এর জন্য এইরকম সংশোধনী বিল কয়েকদিন আগেই বিধানসভায় পাস করা হয়েছে। জানা যায়, কাউন্সিলর নির্বাচিত মেয়র হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল কলকাতা পুরসভা।

যেখানে মেয়র হয়েছিলেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু পুরসভাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সরকার ভোটে সম্মুখীন হতে ভয় পাচ্ছে এমন অভিযোগ করে সরকারপক্ষকে বিধানসভায় চেপে ধরে বিরোধীপক্ষ। বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী এবং সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তদের মূল অভিযোগ ছিল, পুরসভা ভোট করতে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল।

অনেকদিন আগেই এই রাজ্যে 17 টি পৌরসভার কার্যকাল শেষ হয়ে গেছে। এরপর সেখানে প্রশাসক বসানো হয়েছে কেন! হাওড়া পুরসভার নিগমের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেখানে ভোট হচ্ছে না। এটা জনগণের মতপ্রকাশে বাধা বলে সরকারের সমালোচনা করেন বিরোধীরা। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন জবাবী ভাষণে পুরমন্ত্রী বলেন, “আমরা কোনভাবেই পশ্চিমবঙ্গকে কর্ণাটক হতে দেব না। বিজেপি কেনাবেচার খেলা শুরু করলেও তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”

হলদিয়া পুরনিগমের উদাহরণ টেনে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “সেখানকার কাউন্সিলরদেরকে ভয় দেখিয়ে বিজেপিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আজকে তারা আবার ফিরে এসেছে। এরকম ঘটনা যেন না হয় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” আর এরপরই নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “আমরা যদি সবসময় নির্বাচনের মধ্যে থাকি তাহলে রাজ্যের উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হবে। তাই বারবার নির্বাচনের সম্মুখীন না হয়ে একবারে সমস্ত পৌরসভা এবং পৌরনিগমের নির্বাচনের মাধ্যমে একদিকে যেমন জনগণের রায় মূল্য পাবে, অন্যদিকে তেমনি রাজ্যের উন্নয়নের কাজ অব্যাহত থাকবে।” তাই উন্নয়নের স্বার্থে এই বিলের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে বলে বিধানসভায় জানান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেসের দিকে কিছুটা হালকা সুরে তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসকে নয়, বস্তুত সিপিএম, কংগ্রেসকে সুযোগ করে দিতেই পুরভোট দেরিতে করা হচ্ছে।” প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, রাজ্যে বিজেপির উত্থান ঘটাতে একদিকে যেমন প্রবল চাপের মুখে রাজ্যের শাসক দল

অন্যদিকে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে কংগ্রেস ও বামেরা। মালদা এবং মুর্শিদাবাদে দুটি আসন কংগ্রেসের কপালে জুটলেও গেরুয়া ঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যদি কেউ হয়ে থাকে তাহলে সেটা বামফ্রন্ট। এবারের ভোটে তারা ধুয়েমুছে এই রাজ্য থেকে লোকসভা আসনের নিরিখে একেবারে সাফ হয়ে গেছে।

অন্যদিকে বামেদের রক্তক্ষরণ বেকায়দায় ফেলেছে তৃণমূলকে। বামেদের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে রাজ্যে গেরুয়া শিবির একেবারে শাসকের চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে। যার কারণে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে কিছুটা অক্সিজেন দিতে চাইছে শাসক দল। কারণ বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হলে তা শাসক দলের পক্ষে যে কতটা হিতকর তা বলাই বাহুল্য। সবকিছু মিলে এই নতুন পৌর সংশোধন বিল কতটা কার্যকর হয় এবং এই বিলকে পরবর্তীতে কোনো আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় কিনা! এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!