এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > অধিকারী পরিবারের ভাঙ্গন দিয়েই কি তৃণমূল সাম্রাজ্যের পতন! চর্চা রাজনৈতিক মহলে

অধিকারী পরিবারের ভাঙ্গন দিয়েই কি তৃণমূল সাম্রাজ্যের পতন! চর্চা রাজনৈতিক মহলে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –বিগত বাম শাসনের আমলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের হয়ে জোরদার ব্যাটিং করেছিল অধিকারী পরিবার। শান্তিকুঞ্জের প্রতিটা সদস্য একযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ময়দানে নেমে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, দলনেত্রী প্রতি তাদের আনুগত্য। শুধু তাই নয়, গোটা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যখন অন্যান্য তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কিছুটা হলেও বামেদের ভয়ে পিছিয়ে রয়েছে তখন এই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিকারী পরিবারের অন্যতম সদস্য শুভেন্দু অধিকারী নতুন পথের সৃষ্টি করেছিলেন বামেদের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে তার লড়াই নজর কেড়েছিল সকলের।

সেদিক থেকে 2011 সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে যেমন সিঙ্গুর অন্যতম কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিল, ঠিক তেমনই অন্যতম অবদান ছিল নন্দীগ্রামের। আর সেই নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী কখনও তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করবেন এবং বিজেপিতে যোগ দেবেন, তা সত্যিই কল্পনা করা যায়নি। কিন্তু এবার সেটাই হল। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই তৃণমূলে ভাঙনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এতে কোনো ক্ষতি হবে না শাসকদলের। এমনকি শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিলেও তার পরিবারের কোনো সদস্য বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না।

স্বাভাবিকভাবেই তিনি নিজের পরিবারকে টানতে পারছে না বলে কটাক্ষ করছে তৃণমূল। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীর পর তার ভাই সৌমেন্দু অধিকারী যোগ দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। মুখ খুলতে শুরু করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা শুভেন্দু অধিকারীর পিতা শিশির অধিকারী। স্বাভাবিক ভাবেই এবার কি অধিকারী পরিবারের তৃনমূলে থাকা বাকি সদস্যরাও কি যোগ দিতে চলেছেন গেরুয়া শিবিরে! এখন তা নিয়েই জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

পর্যবেক্ষকদের অনেকে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালোভাবেই দল ভাঙার খেলায় অভ্যস্ত। যিনি বিরোধীদের ঘর ভাঙতে পারেন, তিনি নিজের পরিবারের সদস্যদের তার দেখানো পথে নিয়ে আসবেন না, এটা সত্যিই মানা যায় না। সেক্ষেত্রে সেই শুভেন্দু অধিকারী যে বুঝেশুনেই পা বাড়াবেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল বিশ্লেষকেরা। আর সেই মত করেই পরিস্থিতি যে দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করেছে, তাতে অধিকারী পরিবারের সব থেকে বড় সদস্য শিশির অধিকারীও এবার নিজের হাতে পদ্মফুল ধরতে পারেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

আর যদি অধিকারী পরিবারের সকল সদস্য তৃণমূলের প্রধান বিরোধী প্রতিপক্ষ ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখান, তাহলে 2021 সালে তৃণমূলের ক্ষমতায় তৃতীয়বারের আসার যে স্বপ্ন তা কি এই মেদিনীপুর থেকেই ভঙ্গ হবে! এখন সেটাই চর্চার চর্চিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। একাংশের মতে, তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারছে, অধিকারী পরিবারের এই ভাঙ্গন।

যখন যেখানে দল বিপদে পড়েছিল, তখন সেখানে মুশকিল আসান হয়ে উঠেছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূলের অনেক হেভিওয়েট গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে যদি অধিকারী পরিবারের সব থেকে বড় সদস্য শিশির অধিকারীও যদি বিজেপিতে পা বাড়ান, তাহলে তৃণমূলের পতন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকেই শুরু হবে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের একাংশের।

তবে তৃণমূল অবশ্য তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের দাবি, এতে করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। অতীতেও অনেকে তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়ে বড় কিছু করবে বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু কেউ কিছু করতে পারেননি। তৃণমূলে শেষ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ব্যালটবক্সে তাদের জবাব দেবেন। সেক্ষেত্রে কেউ বিজেপিতে গেলে তৃণমূলের কিছু যায় আসবে না। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, তৃণমূল এর আগে মুকুল রায় যাওয়ার সময় বলেছিল, এতে দলে কোনো ফ্যাক্টর হবে না।

কিন্তু বাস্তবে সেই মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলের একাধিক জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে নিচুতলার অনেক কর্মী বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন। আর লোকসভা নির্বাচনে তার প্রভাব যে যথেষ্ট পড়েছে এবং তৃণমূল যে ব্যাপকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তা প্রশান্ত কিশোরকে দলের দায়িত্ব দেওয়াতেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেছে বলে দাবি একাংশের।

আর এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সেই মুকুল রায়ের মতই তাকে মীরজাফর বলা হলেও তৃণমূল কংগ্রেস অধিকারী পরিবারকে নিয়ে যে যথেষ্ট চাপে রয়েছে, তা তৃণমূলের অন্দরমহল কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা এককালের তৃণমূল কংগ্রেসকে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছিল এবং তার পুরোভাগে ছিল অধিকারী পরিবার, সেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিকারী পরিবার ধীরে ধীরে গেরুয়াময় হতে শুরু করায় তৃণমূল কি সম্পূর্ণরূপে মুছে যাবে! এখন সেটাই দেখার বিষয় সকলের কাছে। তবে এই সমস্ত কিছু স্পষ্ট হবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ব্যালটবক্স খোলার পরই। যার দিকে নজর রয়েছে সকলের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!