এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অধিকারীদের ক্ষমতা খর্ব করতে মোক্ষম চাল তৃণমূলের, মমতা-ঘনিষ্ঠের বক্তব্যে জল্পনা!

অধিকারীদের ক্ষমতা খর্ব করতে মোক্ষম চাল তৃণমূলের, মমতা-ঘনিষ্ঠের বক্তব্যে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী গড় মানেই তৃণমূলের সংগঠন, এতদিন এমনটাই জেনে এসেছেন বা বুঝে এসেছেন সকলে। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। অধিকারী গড়ের সঙ্গে তৃণমূলের সংগঠনের যে সমার্থক অর্থ বোঝাত, তা 180 ডিগ্রি ঘুরে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত বিশ্বস্ত শুভেন্দু অধিকারী প্রথম যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে পরবর্তীতে। সেই অধিকারী পরিবারকে আক্রমণ করতে শুরু করে ঘাসফুল শিবির। যার জেরে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা যায় সাংসদ শিশির অধিকারীকে।

তবে শুভেন্দু অধিকারী জার্সি বদল করার আগে মন্ত্রী এবং বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সেদিক থেকে তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি ঘাসফুল শিবির। কিন্তু তৃতীয়বার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরেই এবার অধিকারী পরিবারের বড় কর্তা সাংসদ শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে তৎপরতা গ্রহণ করতে শুরু করল ঘাসফুল শিবির।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে দাবি তুলতে শুরু করেছেন তৃণমূলের এক মুখপাত্র। অবিলম্বে শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ যাতে খারিজ করা যায়, তার জন্য দাবি তুলতে দেখা গেছে তাকে। পাশাপাশি সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার স্বপন দাশগুপ্তের কথা তুলে এনে কেন শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজ হবে না, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা।

পাশাপাশি বর্তমানে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও চাপে রেখে সারদা এবং নারদাকাণ্ডে তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা উচিত বলে দাবি করা হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের পক্ষ থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকারী পরিবারের সদস্য শুভেন্দু অধিকারী যখন বিরোধী দলনেতা হিসেবে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন, তখন সেই অধিকারী পরিবারের রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে কেড়ে নিতে তৃণমূলের মুখপাত্রের এই দাবি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বস্তুত, দল পরিবর্তন করলেও এখনও পর্যন্ত সাংসদ রয়েছেন শিশির অধিকারী। সেদিক থেকে দল পরিবর্তন করলেও সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি তার পদ থেকে ইস্তফা দেননি। তাই এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অধিকারী পরিবারের বড়কর্তার অস্বস্তি বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণেই তৃণমূলের মুখপাত্র এদিন শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে সরব হয়েছেন।

সূত্রের খবর, এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এই তৃণমূল নেতা বলেন, “অবিলম্বে শিশির অধিকারীকে সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত করতে হবে। কারণ 2019 সালের লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে উনি সাংসদ হয়েছিলেন। অথচ একুশের বিধানসভা ভোটের আগে দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন। তাই কাথির সাংসদের সাংসদ পদ খারিজের ব্যাপারে লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিঠি লেখা হলেও সেই বিষয়ে কোনো সাড়া দেওয়া হচ্ছে না।”

আর এরপরই সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বিজেপির হয়ে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু ভোটে পরাজিত হওয়ার পরে তিনি আবার সাংসদ হয়েছেন। তাই তার ক্ষেত্রে যদি নিয়ম এটা হয়, তাহলে কেন শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের জন্য তৃণমূলের আবেদন শোনা হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের এই মুখপাত্র। আর এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে ফেলে দিয়েছেন তিনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে সারদা এবং নারদার কথা তুলে ধরে এই তৃণমূল নেতা বলেন, “অবিলম্বে শুভেন্দু অধিকারীকে সারদা-নারদা কাণ্ডে গ্রেফতার করতে হবে। বিজেপিতে গিয়ে সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী। এটা চলতে পারে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্য সরকারের কাজে বাধা দিতে চাইছে কেন্দ্র। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।”

আর তৃণমূলের মুখপাত্রের অধিকারী পরিবারের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে এইভাবে সরব হওয়ার ঘটনাকে কার্যত রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছেন। তাই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে শুধু রাজনৈতিক নয়, রীতিমত প্রেস্টিজ ফাইটের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। কেননা নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

তাই যেনতেন প্রকারেন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে এখন চাপে ফেলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেদিক থেকে তার পরিবারের সবথেকে প্রবীণ সদস্য তথা প্রাক্তন তৃণমূল নেতার শিশির অধিকারী সাংসদ পদ খারিজের জন্য এবার তৎপরতা গ্রহণ করলেও শাসকদল। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে সারদা এবং নারদার তুলে ধরে তাকে বিড়ম্বনায় ফেলার কৌশল নিলেন তৃনমূলের মুখপাত্র। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!