এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > অধীরকে নিয়ে কি দলের অন্দরে ক্ষোভ জমেছে তাই সভাপতি বদলের আর্জি জানিয়ে দিল্লিতে নেতারা

অধীরকে নিয়ে কি দলের অন্দরে ক্ষোভ জমেছে তাই সভাপতি বদলের আর্জি জানিয়ে দিল্লিতে নেতারা


দীর্ঘ চার বছর ধরে দলের সেবা করেও লোকসভা ভোটের মুখে দলীয় অন্দর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে উঠছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সভাপতি পদে নতুন যোগ্য নেতৃত্বকে বসানোর আবেদন জাতীয় কংগ্রেস সুপ্রিমোর রাহুল গান্ধীর কাছে জানিয়ে এলেন কংগ্রেসের চারজন সাংসদ,২১ জন বিধায়ক,তিন শাখা সংগঠনের প্রদেশ নেতৃত্ব এবং আরো চার জন প্রদেশ স্তরের নেতারা। কথা হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। তাকে সভাপতির কুর্সি থেকেই হটাতেই একজোটে অভিমত প্রকাশ করলেন রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা। রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটে রাজ্যে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী প্রসঙ্গে আলোচনা করতে ডাক পাঠিয়েছিলেন বঙ্গের কংগ্রেসী নেতাদের। সেখানেই অধীর চৌধুরির বিরুদ্ধে অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিলেন নতুন সভাপতি পদের আর্জি জানিয়ে এলেন রাজ্য কংগ্রেসি নেতারা।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

——————————————————————————————-

 এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সম্প্রতি ‘লোকসভা ভোটে কে হবে কংগ্রেসের শরিক দল?’ এ প্রশ্নের জবাবে কংগ্রেসের অন্দেরের নেতাদের মধ্যেই দেখা মিলেছে বিস্তর মতামতের ফারাক। কেউ বামেদের দিকে ঝুঁকেছেন,কেউ আবার তৃণমূলের সাথে পথ চলার পক্ষে সায় দিয়েছেন। সেরকমভাবেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তৃণমূলের হাত ধরার ব্যাপারে মোটেই রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে সাপ-বেজির লড়াই চলছিল দলীয় অন্দরেই। এ প্রসঙ্গেই দলের একজন বয়স্ক সাংসদের মত ছিল, লোকসভা ভোটে কংগ্রেসেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদচিহ্ন অনুসরণ করারই যথোপযুক্ত কাজ হবে। নয়তো কেন্দ্রের কুর্সি থেকে বিজেপিকে হটানো সম্ভব হবে না। কিন্তু অধীর বাবু বক্তব্য হল কেউ তাকে এখনো অব্দি জোট গঠন নিয়ে প্রস্তাব দেননি। দলের কিছু কিছু নেতারা প্রয়োজনের বেশি এ বিষয় নিয়ে লাফালাফি করছেন।

আবার অধীরবাবুর সঙ্গে একই রাজনৈতিক অবস্থানে আছেন তাঁরা সভাপতি বদলের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। জানিয়েছেন বিধ্বস্ত দশা থেকে কংগ্রেসকে ঘুরে দাঁড়তে হলে প্রয়োজন মজবুত সংগঠনের। অধীর বাবু দলের সেই সাংগঠনিক ভীত গড়তেই পারেননি গত চার বছরে। তাই অবিলম্বে দলের প্রয়োজনে সেনাপতি পরিবর্তন করা দরকার। খাতিয়ান তুলে ধরে রাহুল গান্ধীকে তাঁরা বলে এসেছেন,মাত্র দু বছরেই ১৫ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে চলে গেছে,আরো ছাড়বেন যদি সভাপতি পরিবর্তন না হয়। রাজ্য কংগ্রেসের এক হেভিওয়েট নেতা রাহুল গান্ধীকে হুসিয়ারী মন্তব্যে বলেও এসেছেন যে, অবিলম্বে অধীর চৌধুরীকে প্রদেশ কংগ্রস সভাপতির পদ থেকে হটানো না হলে বহু কংগ্রেসী নেতারা পদত্যাগ করবেন লোকসভা ভোটের আগেই। রাজ্যের কংগ্রেসঘাঁটির সংস্কার করা হোক এমনটাই মত তাঁদের তবে সভাপতির দায়িত্বে কাকে আনলে দলীয় সংগঠন চাঙ্গা হবে এ ব্যাপারে কংগ্রেসী নেতারাও জাতীয় কংগ্রেস সভাপতিকে কোনো নাম বাতলে দিতে পারলেন না।

এদিকে তাকে নিয়ে দলীয় অন্দরে যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে তা আগেই আন্দাজ করে নিয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। তার তরফের যুক্তিতে জানা গেলো, তিনি দায়িত্বে আসার পরই বাংলার কংগ্রেসের ৪ জন সাংসদ এবং বিধানসভায় ৪৪ জন বিধায়ক পেয়েছে,এটা নজর কাড়া রেকর্ড থাকবে। তৃণমূলের ‘গাজর ও ডান্ডা’ নীতির জন্য বিধায়করা যে কংগ্রেস ছাড়তো বাধ্য হচ্ছেন এটা নিয়ে কারোর কোনো বক্তব্য বা অভিযোগ নেই। অধীর বাবুর বক্তব্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া তো অনেক দূরের কথা,তিনি কখনো মুর্শিদাবাদ জেলার কংগ্রেসের দায়িত্ব পেতেও রাহুল বা সনিয়া গান্ধির কাছে ছোটেননি। জাতীয় কংগ্রসের শীর্ষ নেতৃত্বরা যেচেই তাকে দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। এর পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর উদ্দেশ্য বার্তা দিয়ে তিনি জানান যে,কংগ্রেস সুপ্রিমো যদি মনে করেন তাকে সরিয়ে অন্য কোনো যোগ্য ব্যক্তিকে আনলে দলের পক্ষে লাভজনক হবে তাহলে সেটা তিনি অবিলম্বে করতে পারেন। তবে এই দলীয় কচকচি নিয়ে কোনো বিতর্কিত মন্তব্যে না জড়িয়েই রাজ্য কংগ্রেস পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈ জানালেন যে এই মুহূর্তে বাংলায় তাঁদের একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত-দলীয় সংগঠনকে মজবুত করা।

তবে দলীয় নেতাদের রদবদলের জন্য রাহুল গান্ধীর কাছে আর্জি জানানোর বিষয়টা নতুন কিছু নয়। যখনই কেউ দায়িত্বভার সামলান, তার বিরুদ্ধে গোছা গোছা অভিযোগ তৈরি হয়ে যায়। নালিশের ঝুড়ি নিয়ে গোষ্ঠীর নেতারাই সোজা হাজির হয়ে যান জনপথা আকবর রোডে রাহুল গান্ধীরা বাসভবনে। কিন্তু বর্তমানে কংগ্রেসের অস্তিস্ত সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেই বদলে ফেলার জন্য এতো জন দলীয় নেতা-বিধায়কদের সম্মিলিত প্রয়াসের নজিরটি অভিনব। এমনটাই জানালেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!