এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > নিজেদের দাবিতে অনড় অধীর-দীপা, দুই আসনের ‘গাঁটে’ ভেস্তে যাওয়ার পথে বাম-কংগ্রেস জোট

নিজেদের দাবিতে অনড় অধীর-দীপা, দুই আসনের ‘গাঁটে’ ভেস্তে যাওয়ার পথে বাম-কংগ্রেস জোট

রাজ্যে কংগ্রেস-সিপিএম জোটে আশঙ্কার মেঘ জমেছে সম্প্রতি। বহু বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপি-তৃণমূল রোধে দুই দল এক ছাতার তলায় আসার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সেই পরিকল্পনা আদৌ সফল হবে কিনা তা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিকমহলে।

দিন কয়েকআগেই রায়গঞ্জ জেলা কংগ্রেসের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,কংগ্রেসের জন্যে রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন না ছাড়লে সিপিএমের সঙ্গে জোট নৈব নৈব চঃ। এ ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেসের অটল মনোভাবই সামনে এসেছে।

আগামী রবিবারের মধ্যেই এব্যাপারে সিপিএমকে সীদ্ধান্ত নেওয়ার সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সোমেন মিত্র। রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে লড়াই করার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নিজেদের অটল অবস্থান দেখিয়েছেন দীপা দাশমুন্সি এবং অধীর চৌধুরী। রায়গঞ্জে দীপা স্বয়ং দাঁড়াতে চাইছেন এবং মুর্শিদাবাদে অধীর নিজের অনুগামী বিধায়ক আবু হেনাকে প্রার্থী করতে চাইছেন।

প্রথমে কংগ্রেসের এই অনড় মনোভাবে বামেরা নমনীয়তা দেখালেও বেজায় হতাশ এবং ক্ষুব্ধ রাজ্য সিপিএম। তাঁদের বক্তব্য,বিজেপি-তৃণমূল বিরোধীতার ঐক্য প্রতিষ্ঠার দায় কেবল সিপিএমের নয়। আসন সমঝোতা বা নির্বাচনী জোটের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শর্ত না মানলে আলোচনা অর্থহীন হয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদের আসনে লড়াই করার প্রদেশ কংগ্রেসের অযৌক্তিক জেদ না ছাড়লে সিপিএমের কিছু করার থাকবে না বলেই জানিয়েছেন আলিমুদ্দিন কর্তারা।

কংগ্রের আবার আগামী রবিবারের মধ্যে বামেদের কাছ থেকে বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে জোটের ব্যাপারে আলোচনা সেরে ফেলার উদ্যোগ করছে। আর সেজন্যেই তড়িঘড়ি করে এদিন বৈঠকে বসল সিপিএমের রাজ্য কমিটি। এরপর আগামী ৩-৪ মার্চ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে বামেদের। বৈঠকে জোটের ব্যাপারেই একপ্রস্থ আলোচনা হবে,তা বলাবাহুল্য৷ সিপিএম সূত্রের খবর,রাজ্য কমিটির বৈঠকে সম্পাদক হিসেবে সূর্যবাবু প্রারম্ভিক ভাষণে জোট বিষয়ক সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে জেলা ও গণসংগঠনের নেতাদের মতামত শোনেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাজ্য কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য এতদিন প্রদেশ কংগ্রেসে সঙ্গে জোটের পক্ষেই সায় দিয়ে এসেছেন। সেই জন্যে এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে সিপিএমেদের শীর্ষ নেতৃত্বরা লোকসভা ভোটে সোমেন মিত্রদের হাত ধরতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ নিয়ে দীপা-অধীরদের জেদকে যদি সোমেন মিত্ররা প্রশ্রয় দেন তাহলে সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএম আদৌ গাঁটছড়া বাঁধবে কিনা সে নিয়েই রাজ্যকমিটির মনোভাব বুঝিতে চাইলেন সূর্যকান্ত মিশ্র-বিমান বসুরা।

তবে শেষমেশ যদি জোট না হয়,তাহলে সিপিএম তাদের কোটায় সব আসনে লড়বে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। যদিও রায়গঞ্জ-মুর্শিদাবাদ ছাড়াও কংগ্রেসের জেতা বাকি সব আসনে বাম প্রার্থী যাতে লড়তে পারে সেই উদ্যোগই নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা।

প্রসঙ্গত,দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য গত রাতে জানিয়েছেন,প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে বামফ্রন্ট শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করে জোটের ব্যাপারে একটা প্রাথমিক সিদ্ধান্তে আসা গিয়েছিল। কিন্তু সিপিএমের জেতা আসনেই যদি সিপিএমকে লড়তে না দেয় কংগ্রেস তাহলে জোটো যাওয়ার কোনো মানেই হয় না। বহরমপুর কেন্দ্রটি জোটের স্বার্থে ছাড়তে রাজি করানো হয়েছিল আরএসপি’কে। এই প্রেক্ষিতে যদি জোট না হয়,তাহলে সিপিএমও লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারবে।

উল্লেখ্য,গত লোকসভা ভোটে সিপিএমের তরফ থেকে লড়াই করে জিতেছিলেন মহম্মদ সেলিম। কাজেই এবারও মহম্মদ সেলিমই রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতবেন এমনটাই আশা রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা সিপিএম নেতৃত্বের। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রও হাতছাড়া করতে চাইছে না বামেরা। এই প্রেক্ষিতেই এই দুই কেন্দ্র নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বাম-কংগ্রেস জোটে। এই অবস্থায় বাম-কংগ্রেস জোট ফের প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল।

সিপিএমের যা মনোভাব তাতে রায়গঞ্জ-মুর্শিদাবাদ আসন কংগ্রেসের জন্যে ছাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ওদিকে এই দুই আসন থেকে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর প্রদেশ কংগ্রেস। এই প্রেক্ষিতে আদৌ এই নির্বাচনী জোট হবে কিনা তা নিয়ে এই মুহূর্তে সংশয় রয়ে গিয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!