এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > আসানসোলে দুমাসে পুলিশের গাড়ি ভাড়ার বিল ২ কোটি! প্রশাসনিক মহলে শোরগোল

আসানসোলে দুমাসে পুলিশের গাড়ি ভাড়ার বিল ২ কোটি! প্রশাসনিক মহলে শোরগোল


আসানসোলে দু’মাসে পুলিশের গাড়ির ভাড়ার বিল সামনে আসায় চক্ষু চড়কগাছ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের! বিল বাবদ দু’মাসে ১ কোটি ৯২ লক্ষ ৩৫ হাজার ২০৫ টাকা গুনতে হল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে। তথ্য জানার অধিকার আইনের মাধ্যমে এমন তথ্যই উঠে এল। বেশ কিছু পুলিশ আধিকারিক প্রশাসনের কাজের বাইরে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গাড়ির ব্যবহার করেন। এমনটাই অভিযোগ।

এঁরা অযথাই গাড়ির তেল খরচ করেন,প্রশাসনের কাজে ব্যবহৃত গাড়ির অপব্যবহার করেন। এমনটাই অভিযোগ তুলে কয়েকদিন আগে শহরের এক ব্যক্তি আরটিআই অ্যাক্টে কমিশনারেটের গাড়ির খরচ জানতে চেয়েছিলেন। তারপরেই এই তথ্য সামনে এসেছে।

তাকে আরো জানানো হয়েছে,জানুয়ারি মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত গাড়ি ভাড়ার জন্য খরচ হয়েছে ৮২ লক্ষ ১৯ হাজার ২৫ টাকা। ডিজেলের জন্য খরচ হয়েছে ১কোটি ৫ লক্ষ ৬ হাজার ২৪০ টাকা। গাড়ির ইঞ্জিন অয়েলের জন্য দিতে হয়েছে ৫ লক্ষ ২৭ হাজার ৪০ টাকা। কমিশনারেটের সরকারি বড় গাড়ি চলে ছ’টি। মাঝারি গাড়ির সংখ্যা ২৫, ছোট গাড়ির সংখ্যা ৭৬।

সবমিলিয়ে ১০৭টি সরকারি গাড়ি চলে। ভাড়া নিয়ে বড় গাড়ি চলে ৪টি। মাঝারি গাড়ি দু’টি এবং ছোট গাড়ি চলে ৫৭টি। সবমিলিয়ে কমিশনারেটে ভাড়া গাড়ির সংখ্যা ৬৪টি। এ প্রসঙ্গে,খরচের গড়মিল সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেন পুলিশ কমিশনার লক্ষীনারায়ণ মিনা। পুলিশ প্রশাসনের কাজে দেওয়া গাড়ির অপব্যবহার করে,এ অভিযোগও মিথ্যা তাঁর মতে। বক্তব্যে জানান,”সমস্ত খরচ নিয়ে আমাদের অডিট হয়। হিসেবে কোনও ভুল থাকলে সেখানে তা ধরা পড়ত।”

পুলিশ সূত্রের খবর,সাধারণত জেলার প্রতিটি থানাতেই ভাড়া গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। কমিশনারেটের এলাকায় থানার সংখ্যা বেশি হলেও এলাকায় অপেক্ষাকৃত কমই রয়েছো। স্বাভাবিকভাবেই তাকে গাড়ি ছুটতে হয় কম। তবুও মাত্র ন’মাসের মধ্যে খরচের বিপুল পাহাড় জমলো কীভাবে তা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তাছাড়া এই কয়েক মাসে যে জেলায় আইন শৃঙ্খলা অবনতির ঘটনা ঘটেছে,তেমনটাও নয়। তাহলে কীভাবে গাড়ির খরচ বাবাদ এতো বিপুল পরিমান বিল এল? এই প্রশ্ন দফায় দফায় উঠছে।

তবে হিসাবের গড়মিল হলো অডিটে ধরা পড়ত। কারণ সব তথ্যই লিপিবদ্ধ করা আছে,এমনটাই বললেন এক পুলিশ কর্মী। তবে টাকার অঙ্কটা যে চোখে বাঁধছে,এমনটাও স্বীকার করে নিলেন। এই খরচের খতিয়ান সামনে আসায় ভবিষ্যতে রাজ্য সরকার হয়তো পুলিশের গাড়ির অপব্যবহার রুখতে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে পারে,এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

উল্লেখ্য,তথ্য জানার অধিকার আইনে আরো উঠেছে,পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এসআই র‍্যাঙ্কের অফিসারের সংখ্যা ২১৯। এএসআই রয়েছেন ৩৫৭ জন এবং কনস্টেবলের সংখ্যা ৮৮৩ । নতুন করে নিয়োগ করা হয়েছে আরও ৪৭১ জনকে। সব মিলিয়ে কনস্টেবলের সংখ্যা ১ হাজার ৩৫৪জন। লেডি কনস্টেবল রয়েছেন ২১৯ জন। প্রতিটি থানায় ওসি বা আইসিদের জন্য আলাদা গাড়ি রয়েছে। কোনও কোনও থানার আইসি একাধিক গাড়ি ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সমস্ত বিভিন্ন কারণে গাড়ির তেলের খরচ লাগামছাড়া বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন অনেক আধিকারিকরা।

এই প্রেক্ষিতে আসানসোলের এক তৃনমূল নেতা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়া করে বললেন,এতো খরচ করার পরেই অসুবিধায় পড়ে থানায় ফোন করা হলে গাড়ি নেই বলে অজুহাত দেখানো হয়। এতে রাজসরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। অথচ জানাও যাচ্ছে না সরকারী গাড়ি কোথায় কী প্রয়োজনে ব্যবহার করছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

তবে এক পুলিশ আধিকারিকের দাবী,প্রতিটি থানায় সরকারি গাড়ি চেয়ে আবেদন করা হলেও তা এখনো পাওয়া যায়নি। তাই বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কাজে তাঁদের ভাড়ার গাড়ি করেই যেতে হয়। সরকারি গাড়ি থাকলে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হত না বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে পুলিশের গাড়ির ভাড়ার বিল বাবদ যে বিপুল খরচের তথ্য সামনে এসেছে,সেটা নিয়ে রাজ্যসরকার অবিলম্বে পদক্ষেপ নেবে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহালমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!