মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের পরেই বাংলায় হেভিওয়েট প্রচারক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিজেপির, বাড়ছে জল্পনা জাতীয় বিশেষ খবর রাজ্য May 7, 2018 বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ার আগে থেকেই বঙ্গ বিজেপি নেতারা বলতে থাকেন, পঞ্চায়েতেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস টের পাবে এই রাজ্যে পরিবর্তনের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য বিজেপি কতটা তৈরি। কিন্তু রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নয়, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে নিজেদের ক্ষমতা বজায় রাখাই কি বিজেপির মূল লক্ষ্য? প্রশ্নটা উঠে গেল এই জন্যেই, কারণ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্থির করেছে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রচারকার্যে কোনো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বা হেভিওয়েট প্রচারককে পশ্চিমবঙ্গ সফরে পাঠানো হবে না, বঙ্গ-বিজেপির নেতাদেরই পঞ্চায়েতের প্রচারের সম্পূর্ণ দায়িত্ত্ব নিতে হবে। কিন্তু হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ কী? রাজনৈতিক মহলে তাই নিয়ে চলছে চূড়ান্ত জল্পনা। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ প্রশ্ন করছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লী সফরের পরেই গেরুয়া শিবির রাতারাতি এই সিদ্ধান্ত কেন নিল? তাহলে বামেদের তোলা সেই পুরোনো ‘মোদীভাই-দিদিভাই সেটিং’-এর তত্বই কি ঠিক? আর গেরুয়া শিবিরের এই সিদ্ধান্তের পরে বামশিবির উচ্চগ্রামে বিজেপি-তৃণমূল সমঝোতা নিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। তাঁদের মতে এমনিতে মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন তিনি বিজেপির বিরোধী, এমনকি গুরুত্ত্বপূর্ন বৈঠকে যোগ দেন না বা রাজ্যের প্রতিনিধি পাঠান না। কিন্তু এবারে মহাত্মা গান্ধীর জন্মজয়ন্তী পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ডাকা মিটিঙে তিনি ছুটে গেলেন, যেখানে বিজেপি বিরোধী প্রায় কোনো মুখ্যমন্ত্রীই যান নি! আর তারপরেই যে বিজেপি এতদিন জানাচ্ছিল পঞ্চায়েত থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করে ফেলবে, তারাই সিদ্ধান্ত নিল বাংলার জন্য কোনো তারকা প্রচারক কেন্দ্র থেকে আসবে না! যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই। মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ-শতবর্ষ পালন উপলক্ষেই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, কেননা মহাত্মা গান্ধীর এই জন্মজয়ন্তী পালনের পরিকল্পনা পশ্চিমবঙ্গ অনেক আগে থেকে অনেক ব্যাপক ভাবে করে রেখেছে। অন্যদিকে, গেরুয়া শিবিরও এইরকম কোনো সমঝোতার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফ থেকে রাজ্য বিজেপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারাই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করবেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের প্রত্যাশিত তারকা প্রচারকরা আসবেন। আবার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এমনিতেই ‘শাসকদলের সন্ত্রাসের’ অভিযোগে বহু আসনে প্রার্থী দেওয়া যায় নি, আর যেখানেও বা দেওয়া গেছে সেখানেও শাসকদলের নিরন্তর ‘চাপে’ আশাতীত ফল করা শক্ত। তাই সবমিলিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের প্রত্যাশিত সাফল্য আসবেনা জেনেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তা সত্ত্বেও, মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরের পরেই গেরুয়া শিবিরের এই ঘোষণায় ‘আশ্চর্য-সমাপতনই’ দেখছেন বিরোধী শিবির। আপনার মতামত জানান -