এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > অগ্নিগর্ভ অনুব্রত-গড়! তীর-ধনুক নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ, পাল্টা কাঁদানে গ্যাস! তীব্র শোরগোল

অগ্নিগর্ভ অনুব্রত-গড়! তীর-ধনুক নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ, পাল্টা কাঁদানে গ্যাস! তীব্র শোরগোল


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শিক্ষার আলো প্রসারিত হলেও কুসংস্কারের আধার যেন কিছুতেই কাটতে চায় না। শিক্ষার আলো হয়তো তাকে কিছটা লাগাম পরায়, কিন্তু যখনই সুযোগ পায়, তখনই মানব মনের অন্দরের কুসংস্কার তার বিষবাষ্প নিয়ে প্রকাশ হয়ে পড়ে। তা না হলে আজকের এই উত্তর আধুনিক জীবনে কেন ডাইনি অপবাদে হেনস্থায় পড়তে হবে বাংলার কোন গ্রামের হতভাগ্য কোন গৃহবধূকে? গতকাল রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার আউসগ্রামের দিগনগরে ডাইনি অপবাদে এক গৃহবধূকে গ্রাম থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের কবল থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হলো পুলিশকে। প্রথমে চলল পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। তারপর পুলিশকে লক্ষ করে চললো তীর ও ইট বর্ষণ, সেইসঙ্গে পুলিশ ছুড়লো কাঁদানে গ্যাস। সবকিছু নিয়েই গতকাল ধুন্ধুমার কান্ড দেখা দিল আউসগ্রামের দিগনগরে।

স্থানীয় সূত্রের খবর গত বুধবারে দিগনগর গ্রামের কেঁওতলার আদিবাসী পাড়ায় মনসা পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই পূজায় যোগদান করতে নিকটবর্তী অন্য এক গ্রাম থেকে এক মহিলা এসেছিলেন। শোনা যায় সেদিন তিনি খড়িনদীতে স্নান করার পর থেকেই কেমন যেন অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। তারপর থেকে খাওয়া-দাওয়া ভুলে পাড়ার ঠাকুর তলায় টানা হত্যা দিয়ে পড়ে থাকেন। তাঁর এই অস্বাভাবিক আচরণ দেখে গ্রামবাসীদের ধারণা হয় যে, তাঁর উপরে ঠাকুরের ভর হয়েছে।

এরপর অস্বাভাবিক আচরণ করা ওই মহিলা গতকাল রবিবার জানান যে, সেই পাড়ায় এক ডাইনি আছে, যিনি গৃহবধূ। তার জন্যেই তাঁর এই শারীরিক অসুস্থতা। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান যে, ঐ ডাইনির কারণে আগামী দিনে বড় বিপদ আসতে চলেছে পাড়াতে। যথাশীঘ্র ডাইনিকে গ্রাম থেকে না তাড়ালে গ্রামকে বিপদমুক্ত করা যাবে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গ্রামের যে গৃহবধূকে তিনি ডাইনি অপবাদ দেন, তার বাপের বাড়ি ছিল ভেদিয়াতে। তাঁর বাপের বাড়িতে ফোন করে গ্রামের কিছু লোকজন তাঁকে নিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়। কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত তাঁকে নিতে বাপের বাড়ি থেকে কেউ আসেনি। এরপরে গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে তাকে আটকে রেখে দেয়।

এ প্রসঙ্গে নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর স্বামী জানিয়েছেন, ” আমি বাজারে গিয়েছিলাম। গ্রামে ফিরে এসে দেখি আমার স্ত্রীকে সবাই ডাইনি বলছে। ওকে গ্রাম থেকে চলে যেতে হবে বলে। আমি বাধ্য হয়ে গ্রামের লোকজনদের কথা মেনে নিই। সবাই একজোট হওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারিনি।”

গৃহবধূর ওপর এই অত্যাচারের খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের হাতে তাকে ছেড়ে দিতে কিছুতেই রাজি ছিল না গ্রামবাসীরা। পুলিশ জোর করে তাকে গাড়িতে চাপালে, উত্তেজিত বেশকিছু গ্রামবাসী পুলিশের গাড়ি ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। শেষ পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামবাসীরা তাঁকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়। কিন্তু পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, তাকে গ্রামে থাকতে দেবেনা তারা। তারপর বিরাট পুলিশ বাহিনী ও রাফ ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছালে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রাম বাসীরা ইট, তীর ছুড়তে আরম্ভ করে। পুলিশকেও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে হয়। এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে নানা স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!