এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > আইনের শাসন না মানার অভিযোগ! নারদকান্ডে তৃণমূলের বিক্ষোভে বড় হাতিয়ার পেয়ে গেল বিজেপি!

আইনের শাসন না মানার অভিযোগ! নারদকান্ডে তৃণমূলের বিক্ষোভে বড় হাতিয়ার পেয়ে গেল বিজেপি!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের আমলে লোকসভা নির্বাচনে যখন বিজেপি রাজ্যে অভূতপূর্ব ফলাফল করেছিল, তখন থেকেই “রাজ্যে গণতন্ত্র নেই” বলে সরব হতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই রাজ্যে 18 টি আসন পাওয়ার পর ক্রমাগত রাজ্য তৃণমূল সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিজেপিকে সমর্থন করা দরকার বলে মানুষের কাছে আবেদন করতে শুরু করেছিলেন বিজেপি নেতারা।

এমনকি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বিজেপির অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে লাগাতারভাবে রাজ্যে এসে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে বিজেপিকে সমর্থন করার আবেদন জানিয়েছিলেন। সেদিক থেকে বিজেপি যে এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল সকলেই। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের সেই আশা পূর্ণ হয়নি।

তৃতীয়বারের জন্য আবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃতীয়বার সরকারে আসার পরেও দিকে দিকে ফলাফলের পরে বিজেপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে গেরুয়া শিবিরকে। এদিকে মন্ত্রিসভা গঠনের পর নারদ কান্ডে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক প্রাক্তন মন্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার পর যেভাবে রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন, তাতে বড় হাতিয়ার পেয়ে গেল ভারতীয় জনতা পার্টি।

এমনিতেই ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যে হিংসা হচ্ছে বলে সরব হতে দেখা গেছে গেরুয়া শিবিরকে। আর এবার নারদ কান্ডে মন্ত্রী এবং বিধায়করা গ্রেফতারের পর যেভাবে আদালতের নির্দেশ না মেনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করতে শুরু করেছে তৃণমূল, তাতে তারা যে আইনের শাসন বিন্দুমাত্র মানে না, সেই বিষয়টি তুলে ধরে পাল্টা ময়দানে নামার পরিকল্পনা করছে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে তৃণমূলের বিড়ম্বনা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বলা বাহুল্য, সোমবার নারদ কান্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক মদন মিত্র এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। আর এই ঘটনার পরেই কার্যত রাজ্যে লকডাউনের নিয়ম ভেঙে সিবিআই দপ্তরের সামনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। রাজভবনের সামনেও তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মারাত্মক আকার ধারণ করে। যেখানে রাজ্যপাল বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

শুধু তাই নয়, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই দপ্তরের ভেতরে গিয়ে “তাকেও গ্রেপ্তার করতে হবে” বলে দাবি করতে দেখা যায়। যে ঘটনা কার্যত বেনজির বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর এভাবে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বিজেপি সিবিআই দিয়ে সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে নানা মহলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। যার ফলে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এই সময় সিবিআই দিয়ে বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল সরকারকে কাবু করা কি সত্যিই ঠিক হল, তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের একাংশ কিছুটা হলেও সন্দিহান হয়ে পড়ে। তবে এবার সেই সমস্ত বিষয়টি কিছুটা আড়ালে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা আইন না মানার অভিযোগ তুলে সোচ্চার হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করল ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর এইভাবে ময়দানে নামা থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ আইনের শাসনকে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিয়েছে।

তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে ক্ষমতায় আসলেও, আইন না মেনে দলের নেতা এবং মন্ত্রীদের বাঁচানোর জন্য যেভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করছেন বিজেপির একাংশ। অর্থাৎ সিবিআইকে পরিকল্পনামাফিক লাগানো হচ্ছে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও, পাল্টা তৃণমূলের উপর চাপ বাড়িয়ে আইনের শাসন না মানার অভিযোগকে হাতিয়ার করে ঘাসফুল শিবিরের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা যে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে, তা রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই নিজের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছেন। তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী সহ দলের নেতা-কর্মীরা ময়দানে নেমেছেন, তাতে বিরোধীরা যে বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে যাবে, সেই ব্যাপারটি নিয়ে এতদিন নানা মহলে চর্চা হয়েছিল।

কেননা রাজ্যপাল যেভাবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিতে শুরু করেছিলেন, তাতে যদি বিরোধী দল বিজেপি একইভাবে আইন না মানার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়, তাহলে নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের অস্বস্তিতে এই বিষয়টি আরও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে ঘাসফুল শিবিরের কাছে। এক্ষেত্রে বর্তমানে রাজ্যের দায়িত্ব পালন না করে বিক্ষোভ করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করা হচ্ছে বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি।

যার ফলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কার্যত প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে পারে। আর এই গোটা ঘটনা তৃণমূলের কাছে যে খুব একটা সুখকর হবে না, তা বলাই যায়। স্বাভাবিক ভাবেই সিবিআইয়ের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলে যখন বিজেপিকে কাবু করতে তৎপর তৃণমূল, ঠিক তখনই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার বদলে তৃণমূল যে পাল্টা পরিস্থিতিকে জটিল করছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরে ঘাসফুল শিবিরের ওপর চাপ বাড়াতে কৌশলী পদক্ষেপ ভারতীয় জনতা পার্টির। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!