এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অযোধ্যা নিয়ে বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ, জানুন বিস্তারিত

অযোধ্যা নিয়ে বিস্ফোরক বিজেপি সাংসদ, জানুন বিস্তারিত


 

ভগবান রামকে নিয়ে বিজেপি সব সময় রাজনীতি করে বলে অভিযোগ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা বিভিন্ন সময়ে বিজেপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে সরব হন। আর এবার পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর একটি চিঠি সেই বিতর্ককে আরও বাড়িয়ে দিল।

সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার তার নিজের সংসদীয় এলাকার অযোধ্যা পাহাড়ের উন্নয়ন করছে না বলে দিল্লির সাহায্য চেয়ে কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এত পর্যন্ত সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও অযোধ্যা পাহাড়ের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি সেই অযোধ্যা পাহাড়কে ঐতিহাসিক স্থান বলে উল্লেখ করায় প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হল।

সূত্রের খবর, চিঠিতে বিজেপি সাংসদ লিখেছেন, “বনবাসের সময়ে রাম অযোধ্যা পাহাড়ে এসেছিলেন। সীতার তৃষ্ণা নিবারণের জন্য মাটিতে তীর মেরে জলের ধারা বের করেন। সেই স্থান এখন সীতাকুন্ড নামে পরিচিত‌। সবাই রাম সীতার এখানে আসার কথা জানেন। তাতে পাহাড়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে।” কিন্তু বিজেপি সাংসদের এই গোটা ঘটনার বর্ণনার সঙ্গে ঐতিহাসিক ভিত্তির কি সম্পর্ক রয়েছে!

অনুন্নয়ন হচ্ছে, তাই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তিনি সরব হচ্ছেন! সমস্ত কিছু ঠিক। কিন্তু অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে ইতিহাসের যে মিলের কথা তুলে ধরলেন বিজেপি সাংসদ, তা কি তার অযোগ্যতার পরিচয় দিল না! এখন তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে তরফে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়েছে। কিন্তু এই ব্যাপারে ঠিক কি বলছেন বিভিন্ন ইতিহাসবিদরা! এদিন এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলার লোক-গবেষক সুভাষ রায় বলেন, “রামচন্দ্র বা সীতার পাহাড়ে আসার কোনো প্রামাণ্য নথি আমি অন্তত পাইনি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই ব্যাপারে জেলার ইতিহাস গবেষক দিলীপ কুমার গোস্বামী বলেন, “লোককথা আর ইতিহাস দুটোকে মিশিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। ইতিহাসে মহাবীর পুরুলিয়া এসেছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু রামায়ণ বা মহাভারতের কোনো চরিত্রের এই জেলায় পা পড়েছিল বলে কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। শুনেছি, কোনো একজন ভূমিজ রাজার নামে অযোধ্যা পাহাড়ের নামকরণ হয়েছিল।”

এদিকে ইতিমধ্যেই এই বিষয় তুলে ধরে বিজেপি সাংসদকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “সাংসদ রাজনীতিতে নতুন বলে অযোধ্যা পাহাড় সম্পর্কে সব খবর জানেন না। 2011 সাল থেকে ধাপে ধাপে প্রচুর উন্নতি হয়েছে। এখন বছরভর এখানে পর্যটক আসছে।”

এদিকে সাংসদের এহেন মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো। এদিন তিনি বলেন, “বিজেপির রাজ্য সভাপতি কয়েক মাস আগে অযোধ্যা পাহাড়ে এসে একটি বেসরকারি হোটেলে ওঠেন। পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে বলেই তো তিনি সেখানে রাত্রি বাস করতে পারেন। ইউপিএ সরকারের তৎকালীন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী সুবোধ সহায়ের কাছে আর্জি জানানোয় পাহাড়ে উন্নয়নে বরাত এসেছিল। সেকথা বর্তমান সাংসদের জানা উচিত।”

তবে অযোধ্যায় অনুন্নয়ন হয়েছে একথা বললে হয়ত বা অনেকে মেনে নিত। কিন্তু হঠাৎ অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে রাম সীতার কি সম্পর্ক খুঁজে পেলেন বিজেপি সাংসদ, তা নিয়ে কিন্তু চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। অনেকে বলছেন, বিজেপি এখন রামকে স্বপ্নে দেখতে শুরু করেছে। আর তাই তো কোনো কথা বলতে গেলেই তাদের মুখ ফসকে রাম শব্দটি বেরিয়ে পড়ছে। আসলে রাম নিয়ে রাজনীতি করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে রাম সীতাকে জড়িয়ে যাওয়ায় প্রবল বিতর্কে পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!