এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , পর্ব ৩

অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , পর্ব ৩


কুশল অনিচ্ছা স্বত্তেও মাংসর মায়া ত্যাগ করে উঠে গেলো। বাকিরা একটু আলোচনা করলেও খাবার ছেড়ে ওঠার তেমন তাগিদ কারুর নেই। যাই হোক খেয়ে উঠে জানবে। শুধু অভির বাড়ির লোকজন খাবার সামনে নিয়ে চুপ করে বসে নানা ভাবনা চিন্তা করতে লাগলো।

পরিমলবাবু মেয়ের বিয়েতে বড়োই ব্যাস্ত, কিন্তু তাতেও তারাশঙ্করবাবুর (অভির দাদু ) বাড়ির লোকেদের বড়োই যত্ন করছেন।ছেলেরা, বৌমারা, মেয়ে ,জামাই, নাতি নাতনিরা এসেছে। অভিলাষকে আগে দেখেননি। সেও এসেছে। এত মাননি গন্নি লোক তাদেরকে যত্ন না করলে হয়? খাবার টেবিলে ভালো করে বসিয়ে কথা বার্তা বলছিলেন। এমন সময় আশোক এলো। অশোক তাঁর ভাই – কানে কানে বললো-সর্বনাশ হয়ে গেছে ,পরমবাবু এসেছেন, চলো।

কি হয়েছে ? আর কালবিলম্ব না করে তিনি ছুটলেন। গিয়ে দেখলেন ছাদনাতলায় পাশেই চেয়ারে বসে আছেন তারাশঙ্করবাবু। তাঁর সামনে হাত জোর করে দাঁড়িয়ে আছে তাঁর হবু বিয়াই পরমবাবু।পরমবাবু তারাশঙ্করবাবুকে অসম্ভব সম্মান করেন। এই বিয়ের ব্যাপারে তিনি তারাশঙ্করবাবুকেও জানিয়েছিলেন যে মেয়ে তাদের খুব পছন্দ। কিন্তু ছেলের থেকে মেয়ে প্রায় ৯ বছরের ছোট তাই মেয়ের বাড়ি থেকে একটু আপত্তি করছে। গুঞ্জার বয়েস ২৩ ছেলের বয়েস ৩২, তারাশঙ্করবাবুই পরিমলবাবুকে বলেছিলেন চোখ বন্ধ করে বিয়ে দাও , ঠকবে না। বয়েসের তফাৎটা একটু বেশি ঠিক কিন্তু ওর বাবা খুব ভালো মানুষ। তার ছেলে যখন বাবার মতোই হবে। তোমার মেয়ে সুখী হবে। তাই তারাশঙ্করবাবু এখন নিজেকে দোষী ভাবতে শুরু করেছেন। আর এদিকে তার ছেলের জন্য মাস্টারমশাইয়ের মাথা হেঁটে হয়ে গেলো সেকথা ভাবতেই পারছেন না পরমবাবু।

কি, কি হয়েছে ? বিয়াই মশাই। সন্দীপ( হবু বর) কোথায়? এখনো এলোনা ? জিজ্ঞাসা করলেন পরিমলবাবু।
পরিমলবাবুর দিকে ঘুরে হাত জোর করে পরমবাবু বললেন আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি বাবা হিসাবে ব্যর্থ, ছেলেকে কোনো শিক্ষাই দিতে পারিনি। ছেলে বাড়ি থেকে চলে গেছে আজ বিকালে। চিঠি লিখে গেছে সে অন্য কাউকে ভালোবাসে এই বিয়ে সে করতে পারবে না আমাকে ক্ষমা করে দিন।

মাথায় হাত দিয়ে তারাশঙ্করবাবুর পাশে মাটিতেই ধপ করে বসে পড়লেন পরিমলবাবু। আমায় ক্ষমা করে দিন মাস্টারমশাই – আমি এর বিন্দুবিসর্গ জানতাম না। জানলে এমন সর্বনাশ হতো না। আমি এই বিয়ের সম্মন্ধই করতাম না বলে তারাশঙ্করবাবুর পায়ের নিচে মাটিতে বসে পড়লেন পরমবাবু। তারাশঙ্করবাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছিল অভির বাবা, কাকা আর ছোট পিসে। অভির দাদু উঠে দাঁড়াতে গিয়ে পরে যাচ্ছিলেন ধরে ফেললো অভির বাবা।

চেয়ারে বসিয়ে দিলেন, কেউ একজন জল এনে দিলো। মুখে চোখে জল দেওয়া হলো। অভির ছোট পিসে ডাক্তার। তিনি বললেন প্রেসারটা মাপতে হবে। বিয়ে হচ্ছে বাজারের একটা ভাড়া বিয়েবাড়িতে। জায়গাটা অনেক বড়। উপরে বিয়েবাড়ি। আর নীচে ওষুধের দোকান, জামাকাপড়ের দোকান, কসমেটিক এর দোকান, বিউটি পার্লার, ছোট রেস্ট্রুরেন্ট এই সব। চেনা জানা কেউ গিয়ে কম্পাউণ্ডারকে ধরে আনলো। প্রেসার মাপা হলো। বেড়ে গেছে অনেকটা। সেই কারণেই মাথা ঘুরে গেছে। ছোট পিসে ওষুধ বলে দিলেন কম্পাউণ্ডার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ এনে দিলো। তারাশঙ্করবাবুকে খাওয়ানো হলো। তারাশঙ্করবাবু একটু ধাতস্ত হয়ে অভির খোঁজ করলেন। ছোটকাকু অভিকে ধরে নিয়ে এলো।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অভি অবাক হয়ে ভাবছে কি হলো হঠাৎ? কাকুকে বার বার জিজ্ঞাসা করছে – কাকু বলছে চল গিয়ে দেখবি। হাত ধুলো। এত সাস্পেন্সএর কি হলো বুঝছে না অভি। চারপাশে গুনগুন চলছে। কিছু একটা হয়েছে কিন্তু কি ?

অভি গিয়ে দেখলো দাদু চেয়ারে বসে আছে।পাশে ছোট পিসে আর বাবা দাঁড়িয়ে আছে। দাদুর পায়ের নিচে, হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে পরমকাকু। তার পাশেই মাটিতে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন পরিমলবাবু। চারপাশে চাপা গুঞ্জন। যার বিয়ে গুঞ্জা, যে ওখানে বসে ছিল ওই চেয়ারে ,সেটা ফাঁকা। ওদিকের ঘরের ভিতর থেকে কান্নাকাটির আওয়াজ আসছে। কি হচ্ছে এসব?

মাথা নিচু করে কিছু ভাবছিলেন তারাশঙ্করবাবু। দাদুভাই – বলে অভি ডাকতেই তিনি উঠতে গেলেন। বসে পড়লেন। মাথাটা তাঁর এখনো একটু একটু ঘুরছে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পিসে চেঁচিয়ে বলে উঠলো – বাবা, বাবা উঠবেন না, আপনার শরীর এখনো সুস্থ নয়।

শরীর সুস্থ নয় মানে? কি হয়েছে দাদুভাইয়ের? একটু আগেও তো ঠিক ছিল। চেঁচিয়ে জানতে চাইলো অভি।

ছোট পিসে কিছু বলতে যাচ্ছিলো – তারাশঙ্করবাবু অভিকে ডাকলেন। ইশারা করে কাছে ডেকে বললেন – এই কন্যাদায়গ্রস্থ পিতাকে উদ্ধার করতে পারবে? আমার অনুরোধ রাখবে ? আমি বড় গর্ব করে বলেছিলাম পরিমলকে যে সে ঠকবে না। কিন্তু আমি নিজেই …………. আমার মুখ চেয়ে তুমি পারবে গুঞ্জাবতীকে আপন করে নিতে ?

অভি – চমকে – মানে?

এমনি কিছু হতে যাচ্ছে অভিজিৎ (ছোট পিসে)  আন্দাজ করেছিল। কিন্তু অভি কি রাজি হবে ? অভি যদি রাজি না হয় তবে বাবা আবার টেনশন করবেন, বা ধাক্কা খাবেন। একে হঠাৎ করে এত বেড়ে গেছে প্রেসারটা ,তার উপরে আর যদি দেখেন যে তার নাতি তাঁর মান রাখলেন না। আঘাতটা সামলাতে পারবেন তো ? তাছাড়া অভির জীবনে কেউ নেই থাকলে অভি আগে বলতো তাকে।  এনারা সজ্জন লোক। বড়দার ( অভির বাবা )কাছে শুনেছে পরিমলবাবু কত ভালো মানুষ। গুঞ্জাও খুব ভালো মেয়ে। অভির বৌ হওয়ার সব যোগ্যতা আছে তার। না, অভিকে বোঝাতেই হবে।

এদিকে আয় – বলে অভিকে পাশে সরিয়ে নিয়ে গেলো ছোট পিসে।

অভি – এসব কি ?

ছোট পিসে – পরমবাবুর ছেলে অন্য কাউকে ভালোবাসে, সে তাকেই বিয়ে করবে, তাই বাড়ি ছেড়েছে। বিয়ে ভেঙে গেছে।

অভি – হ্যাঁ তাতে আমি কি করবো ? আমাকে কেন?

ছোট পিসে – তোর দাদুভাইয়ের শরীর ভালো নয় অভি, এই নিয়েই প্রেসারটা ভীষণ বেড়ে গেছে। আমি মেডিসিন দিয়েছি। মাইল্ড স্ট্রোকের মতো। তুই না করলে হয়তো আর সামলাতে পারবো না।

অভি – উফফ, তোমরা বুঝছো না কেন ? এটা ছেলেখেলা নয়। বিয়ে মানে সারা জীবনের ব্যাপার। আমি গুঞ্জাকে চিনি না , জানিনা , এভাবে কি করে?

ছোট পিসে – বিয়ের পরেও চেনা যায়।তোর ছোট পিসির সাথে আমার দেখাশোনা করেই বিয়ে। আমরা সুখী নয় ?

অভি – দেখাশোনা করে সময় নিয়ে হয়েছে এইভাবে বিয়েবাড়িতে খেতে এসে নয়। তফাৎটা বোঝো। এইভাবে সম্ভব নয় বলে মাথা নাড়লো।

ছোট পিসে- আমার কথা শোন্.তুই,,,,,,,,,,,,, হঠাৎ “বাবা” বলে চেঁচানোর শব্দ হলো। ঘুরে দেখলেন চেয়ারে মাথা হেলিয়ে দিয়েছেন তারাশঙ্করবাবু।

এদিকে তারাশঙ্করবাবু  ও দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। দেখলেন অভি মাথা নেড়ে আপত্তি জানাচ্ছে। – দাদুভাইও না করে দিলো বলে চেয়ারে মাথাটা ঠেকিয়ে দিলেন। অভির বাবা, কাকা জোরে “বাবা” বলে চেঁচিয়ে উঠলো।

ছুটে এসে ছোট পিসে – বাবা চোখ খুলুন ,সব ঠিক আছে। অভি রাজি। ও বিয়ে করবে গুঞ্জাকে। আপনি শান্ত হন।

অভি আর কোনো কথা বললো না। কি বলবে? সত্যিই যদি দাদুভাইয়ের কিছু হয়ে যায়। অভির দাদু যেন স্বস্তি পেয়েছেন । হাত বাড়িয়ে অভিকে ডাকলেন। অভি এলো। দাদু বললেন – আমি জানতাম তুমি আমার গর্ব, আমার অহংকার, তুমি আমার মাথা কখনোই নীচু হতে দেবে না। হয়তো তুমি আজ বুঝছো না। কিন্তু একদিন বুঝবে – একটা খাঁটি হীরা আমি তোমার হাতে তুলে দিলাম। তুমি ঠকবে না দাদুভাই। আমি মানুষ চিনি , শুধু এবারেই ভুল করে ফেললাম। তুমি সুখী হবে – খুব সুখী।

অভি বললো – আমি একবার গুঞ্জার সাথে একা কথা বলতে চাই। এতক্ষনে পরিমলবাবু উঠে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সম্মতি জানালেন। একজন এসে গুঞ্জা যে ঘরে আছে সেই ঘরটায় অভিকে নিয়ে গেলেন।

বিয়েবাড়িটা ৪ তলা। নিচে দোকান, একতলায় – বিয়েবাড়ি, কোনে বসা বা বিয়ে হওয়া। তিন তলায়- বর আসর। আর চার তলায় খাওয়া দাওয়া + বর আসর। কুশল এতক্ষন এইসব দেখছিলো। এবার উপরে ছুটলো সবাইকে বলতে।

 

গুঞ্জা ঘরের মেঝের দিকে তাকিয়ে একটা সোফায় বসেছিল। ওকে ঘিরে ছিল অনেকেই। একটু আগে যে গুঞ্জাকে দেখেছে চেহারাটা এক থাকলেই ভয়, চিন্তা, কান্না, অপমান, অনিশ্চয়তা সব ভিড় করেছে মুখে। কে যেন এক মুহূর্তে খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে ওকে। বুঝতে পারছে অভি গুঞ্জার ভিতরে কি ঝড় বইছে। যিনি অভিকে ঘরে নিয়ে এসেছিলেন তিনি সবাইকে বাইরে যেতে বলে গুঞ্জার কানে কানে কিছু বললেন। গুঞ্জা মাথা তুলে ইশারায় “না” বললো , তিনি কঠিন মুখ করে গুঞ্জাকে ইশারা করে বোঝালেন “হ্যাঁ” । খটকা লাগলেও কিন্তু অভি ব্যাপারটা বুঝলো না।
যাবার আগে তিনি গুঞ্জার পাশের সোফাটা দেখিয়ে অভিকে বসে কথা বলতে বললেন। অভি সোফায় বসলো। গুঞ্জা যেমন বসে ছিল তেমনি ফের মুখ নামিয়ে বসলো।

অভি – দেখুন, দেখো-বাইরে সবাই চাইছে আমার সাথে তোমার বিয়ে হোক। কিন্তু এটা ছেলেখেলা নয়, আমি এইসবে প্রস্তুত ছিলাম না বা এখনো নই। কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে এগাচ্ছে তাতে না করার জায়গা নেই ।
একটু থেমে বললো কিন্তু তুমি যদি রাজি না তাহলে কিছুতেই হবে না এই বিয়ে আমি কথা দিচ্ছি। তুমি রাজি ?

দরজা থেকে জোরে জোরে চুরি নাড়ার শব্দ এলো। এবার অভি বুঝলো “না” আর “হ্যাঁ”
গুঞ্জা মাথা নেড়ে ” হ্যাঁ ” বললো।

অভি বুঝলো- ভুলটা অভিরই। এই অবস্থায় গুঞ্জার ইচ্ছার কেউ ধার ধারবে না। না চাইলেও তাকে বিয়েতে বসতেই হবে। অভি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। বাইরে যারা তাদেরকে ঘরে একা ছেড়ে দিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে সবটা শুনেছে তারা অভি কিছু বলার আগেই ‘ছেলে মেয়ে দুজনেই রাজি’ বলে চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটলো ছাদনাতলায়।

এদিকে কুশল ফিরে এসে জানালো  বর অন্য মেয়ে নিয়ে কেটে পড়েছে। বিয়ে হচ্ছে না। দাদু চায় অভি গুঞ্জাকে বিয়ে করুক। তাই কাকু অভিকে ধরে নিয়ে গেছে। অভি রাজি হয়েছে। পরি মরি করে সবাই নিচে ছুটলো। অভি বাইরে এসে দেখলো মায়েরা সবাই এসে দাদু, বাবা, কাকা, পিসের সাথে কথা বলছে।

নীচের দোকান থেকে অভির জন্য পাঞ্জাবি আর দরকারি নতুন জামাকাপড় এলো। পার্লার এর দিদি আবার এসে ফের একপ্রস্থ গুঞ্জাকে সাজালো। কিন্তু গুঞ্জার ভেতরের ঝড়কে ঢাকতে পারল না। অভির ঠাকুমা গলা থেকে একটা বড় হার খুলে গুঞ্জাকে আশীর্বাদ করলেন।

মাকে বিয়ে দেখতে নেই তাই অভির মা ঘরের ভেতরেই রইলেন। অভির কাকা বাড়ি গিয়ে ঠাকুরের পায়ে ঠেকানো সিঁদুর নিয়ে এলেন। বাড়ির ঠাকুরের পায়ের ছোঁওয়া সিঁদূরেই এই বাড়ির ছেলেরা কনেকে পরিয়ে নিজের করে নেয়। এটাই রীতি। বিয়ে শুরু হলো। পান পাতা চাপা দিয়ে পিঁড়ের ওপর চড়ে কনে সাতপাক ঘুরলো। দুজনেই ক্ষণিকের জন্য চোখে চোখ রেখে চোখ নামিয়ে নিলো। কোনো মতে অভি গুঞ্জার শুভদৃষ্টি হলো। মালা বদল থেকে সিঁদুরদান তাও হলো সেই মতেই। গুঞ্জা নিরুত্তাপ। যে যা বলছে যন্ত্রের মতো করে যাচ্ছে , চোখ এড়ালোনা অভিরও।অভি যে ঘন্টা দুয়েক আগেও জানতো সে গুঞ্জার বাড়ির শুধুমাত্র অতিথি। সে এখন সাত জন্মের বাঁধনে বাঁধা পড়লো গুঞ্জার সঙ্গে।

 

আগের পর্ব – অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , পর্ব ২

 

পরের পর্ব   — অকালে প্রেমের বোধন – কলমে – অপরাজিতা , পর্ব ৪

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!