এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > সামনে আসছে অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্ন, সঙ্গে একাধিক ‘খটকা’! বিধায়ক- হত্যা মামলায় তদন্ত কি ঢিলে পড়তে চলেছে?

সামনে আসছে অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্ন, সঙ্গে একাধিক ‘খটকা’! বিধায়ক- হত্যা মামলায় তদন্ত কি ঢিলে পড়তে চলেছে?


বাগদেবীর আরাধনার যখন গোটা রাজ্যবাসী মেতে উঠেছে, ঠিক তখনই গত শনিবার রাতে সরস্বতী পূজার অনুষ্ঠান চলাকালীন সেখানে খুন হতে হয় কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা নদীয়া জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাসকে। আর যে ঘটনায় সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। জানা যায়, বাড়ি থেকে দু মিনিট দূরত্বে স্থানীয় ক্লাবের সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে সেদিন উপস্থিত ছিলেন নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। আর সেইখানেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওয়ান শাটার দিয়ে গুলি করে খুন করা হয় তাঁকে।

যে ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুজিত মন্ডল ও কার্তিক মণ্ডল নামে দুই অভিযুক্তকে। পাশাপাশি বিধায়ককে গুলি করে খুন করার সাথে সাথেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দিতে দেখা যায় সেই বিধায়কেরই একসময়কার ঘনিষ্ঠ অভিজিৎ পুন্ডারীকে। আর এবার পলাতক মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডারীকেই খুঁজছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই গোটা ঘটনার তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের সিআইডির হাতে। আর তদন্তভার হাতে নিয়েই তৃণমূল বিধায়ক খুনের ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজে পাচ্ছেন না সিআইডি আধিকারিকরা।

প্রথমত, যেদিন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হন সেদিন তাঁর দেহরক্ষী ছুটিতে ছিলেন। ফলে আততায়ীরা জেনে-বুঝেই এদিন সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুন করেছে। আর এখানেই তদন্তকারী আধিকারিকদের প্রশ্ন, তাহলে কি সত্যজিৎ বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছুটিতে ছিলেন এই কথা বিধায়কের ঘনিষ্ঠ কেউ সেই অভিযুক্তদের জানিয়েছিল? অন্যদিকে নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস যে সরস্বতী পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন সেই ব্যাপারেও আততায়ীদের আগে থেকেই জানানো হয়েছে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি সরস্বতী পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিধায়কের আশেপাশে প্রচুর মানুষজন থাকলেও এত কাছ থেকে গুলি চালনা কেন কেউ দেখতে পেলেন না? তাহলে কি সবটাই পরিকল্পনামাফিক? তা নিয়েই এখন উঠতে শুরু করেছেন নানা প্রশ্ন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই দাবি, চোখের সামনে মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুন্ডারী পালিয়ে যায়‌। সকলে তাঁকে ধরতে গেলেও একটি লরি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সেই সুযোগে চম্পট দেয় অভিযুক্ত। আর এখানেই গোয়েন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, একটা লরি পার হতে খুব বেশি হলে মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে।

তাহলে তার মধ্যে কেন মূল অভিযুক্তকে ধরা গেল না? আর সরস্বতী পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালীন দশ থেকে বারোবার লোডশেডিংয়ের ঘটনাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাহলে কি ঘন ঘন লোডশেডিং করার সময় আততায়ীরা নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে টার্গেট করেছিলেন! আর শেষমেশ অবশেষে তৃনমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে ওয়ান শাটার দিয়ে খুন করে দেওয়া হয়? একাংশের মতে, দক্ষ কোনো ব্যক্তি ছাড়া এই ওয়ান শাটার ঠিক মত কেউ চালাতে পারে না।

ফলে দীর্ঘদিন ধরে তা নিয়েও অভিযুক্তরা প্রশিক্ষণ নিয়েছে কিনা সেই ব্যাপারেও নানা জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে সেই তদন্তকারী আধিকারিকদের মনে। সবথেকে বড় কথা, স্থানীয় কলেজে তোলাবাজি ও প্রশ্নফাঁস নিয়ে নিহত বিধায়কের সঙ্গে অভিজিৎ পুন্ডারীর ঝামেলা হয়। দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয় গরু পাচার নিয়েও – যা বিধায়কের ঘনিষ্ঠদের সকলেরই জানা ছিল। অথচ, অভিজিৎ পুন্ডারী এল, খুন করল ও পালিয়ে গেল – বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা কেউ একবার সাবধানও করল না বিধায়ককে? তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত?

এইসব অস্বস্তিকর প্রশ্ন ও খটকা যখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের, ঠিক তখনই স্থানীয়স্তরে অভিযোগ উঠছে তদন্তের গতি ধীরে করে দেওয়ার। প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় প্রথম থেকেই তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে দায়ী করেন, এমনকি মুকুলবাবুর নামে থানায় এফআইআর পর্যন্ত হয়। কিন্তু, তারপরেই মুকুলবাবু আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়ে যান। আর তারপরেই যেন তদন্তের গতিতে ভাটা পরে গেছে – ফলে স্থানীয়স্তরে একদিকে যেমন বাড়ছে ক্ষোভ, অন্যদিকে তেমনি উঠছে বহু গুঞ্জন!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!