এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > নিম্নমানের ত্রাণ বিলি করে ব্যাপক জনরোষের সামনে তৃণমূল নেত্রী! অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে!

নিম্নমানের ত্রাণ বিলি করে ব্যাপক জনরোষের সামনে তৃণমূল নেত্রী! অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে!


করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে চলছে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় দফার লকডাউন। এই লকডাউন স্থায়ী হবে আগামী 3 মে পর্যন্ত। লকডাউন এর ফলে মানুষ হয়েছে গৃহবন্দী। বন্ধ হয়েছে রোজগারের সমস্ত রাস্তা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই লকডাউনের ফলে সবথেকে বেশি বিপদে পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া অসহায় মানুষগুলি। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ই দুঃস্থ মানুষদের জন্য ত্রাণ ব্যবস্থার কথা আগাম ঘোষণা করেছেন।

কিন্তু এই ত্রাণ বিলি নিয়েই চরম অশান্তি সৃষ্টি হল রায়গঞ্জের 7 নম্বর ওয়ার্ডে। সূত্রের খবর, ত্রাণ বিলি করতে গেলে এলাকার মানুষ নিম্নমানের ত্রাণের অভিযোগ তুলে চাল ফেলে, ছিটিয়ে, চেয়ার ভাঙচুর করে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। এলাকার মানুষ শুধু ত্রাণ শিবিরেই নয়, এলাকার কাউন্সিলরের বাড়ির সামনেও তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে অবশ্য অবধারিতভাবে আবারও এসেছে শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্বের রাজনীতি।

রায়গঞ্জের এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে 7 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদার এদিন বিরোধী দল বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, “ত্রাণ বিলি ঠিক মতোই চলছিল, সব গোলমাল করিয়েছে বিজেপি।” অন্যদিকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে রায়গঞ্জের বিজেপি জেলা সভাপতি বিশ্বজিত লাহিড়ী জানান, “নিম্নমানের জিনিস দেওয়া হচ্ছিল। এরই প্রতিবাদ করেছেন এলাকাবাসী।” ঘটনার সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার বিকেলে।

জানা গেছে, সেই সময় রায়গঞ্জ পুরসভার 7 নম্বর ওয়ার্ডের মিলন পাড়ায় ত্রাণ বিলি চলছিল। সেই সময় ত্রাণ বিলি নিয়ে গন্ডগোল বাঁধে। এলাকার বাসিন্দারা কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদার এর সম্পর্কে অভিযোগ করেন, তিনি যে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করছিলেন সেগুলি অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল, ব্যবহারযোগ্য ছিলনা। সেই কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা ত্রাণ নেবেন না বলেই বিক্ষোভ শুরু করেন। বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখে কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদার চলে যান।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর তখনই দফায় দফায় বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু হয়। এলাকাবাসীরা সমস্ত ত্রাণের জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে দেন। অন্যদিকে এলাকা উত্তপ্ত হওয়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসেন রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ত্রাণ শিবির এর সামনে থেকে ভিড় সরিয়ে দেওয়ার পরে বাসিন্দারা কাউন্সিলর পুষ্পা মজুমদারের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ সেখানেও বিক্ষোভ থামাতে গেলে বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে ত্রাণ পর্ব নিয়ে তাঁদের অভিযোগ জানান। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এককথায় উড়িয়ে দিয়ে কাউন্সিলর পুষ্পা দেবী এদিন জানান, “আমরা বাজার থেকে কিনে এনে ত্রাণ বিলি করেছি। প্যাকেটে কোন জিনিস খারাপ থাকলে আমরা কি করতে পারি। আসলে বিজেপি উস্কানি দিয়ে এই গোলমাল পাকিয়েছে।” অন্যদিকে কাউন্সিলর পুষ্পা দেবীর অভিযোগ খণ্ডন করে বিজেপি জেলা সভাপতি বিশ্বজিত লাহিড়ী এদিন জানান,”আমরা কোন গোলমাল পাকাইনি। কাউন্সিলর নিম্নমানের ত্রাণ দিয়েছেন। তাই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকার মানুষ। তবে কাউন্সিলর যদি আমাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা দোষারোপ করেন, সেই দোষারোপ আমরা মাথা পেতে নেব। খারাপ মানের ত্রাণ দিলে তা নিয়ে বিক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক।

অন্যদিকে, রায়গঞ্জের এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন সারা দেশ তথা রাজ্য এমন একটি সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে, যেখানে এই মুহূর্তে দুঃস্হ, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলি সামান্য খাদ্যদ্রব্যের জন্য হাহাকার করছে। সেই কথা চিন্তা করে মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে যখন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ দেওয়ার, তখন সেই ত্রাণ নিয়ে যদি এভাবে রাজনীতি করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ অবশ্যই তাঁদের বিক্ষোভ জানাবে, এটাই স্বাভাবিক। আপাতত ত্রাণ বিলি নিয়ে যে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হলো, সে ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেন সেদিকেই লক্ষ্য রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!