টাকা দিয়ে দলীয় পদ বিক্রি করছেন জেলা সভাপতি? ধুন্ধুমার গেরুয়া শিবিরের অন্দরে রাজ্য হাওড়া-হুগলি December 5, 2019 ভারতীয় জনতা পার্টিতে যেন পোস্টারের লড়াই শেষই হচ্ছে না। কয়েকদিন আগেই বারাসাতে দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে পোস্টারিং করতে দেখা যায় ভারতীয় জনতা পার্টির কিছু বিক্ষিপ্ত কর্মী-সমর্থকদের। আবার এদিন আরামবাগের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সেইরকমই পোস্টারিং করতে দেখা গেল ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী থেকে শুরু করে অনুগামীদেরকে। এদিন আরামবাগ সাংগঠনিক বিজেপির জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে দলীয় পদ বিতরনের অভিযোগ তুলে পোস্টার লাগায় দলেরই কিছু বিক্ষিপ্ত কর্মী সমর্থক। এক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে ভারতীয় জনতা পার্টির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদ থেকে বিমান ঘোষকে পদত্যাগ করতে হবে। বলাইবাহুল্য, দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে এইরকম ধরনের প্রতিবাদ উস্কে দিচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী কোন্দলকে। আর এই কারণে যে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব যথেষ্ট পরিমাণ অস্বস্তিতে পড়েছেন, তাই নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু দলের অন্দরেই নয়, আরামবাগে এই ধরনের পোস্টারিংকে কেন্দ্র করে গোটা শহর জুড়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে। অবস্থানের দিক দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির দলীয় কার্যালয়টি আরামবাগের মহকুমা আদালত এলাকাতেই বিদ্যমান। কাজেই কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে যেন আদালতের আইনি কার্যক্রমে কোনো রকম বাধা না পারে, সেই কারণে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে রীতিমতো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল এলাকায়। শুধু এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করাই নয়, ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে বিজেপির কর্মীদের সমস্ত বিক্ষোভ থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ প্রশাসন। যদিও বিক্ষোভ সম্পর্কে ভারতীয় জনতা পার্টির একটি অংশ দাবি করছেন, যে সমস্ত বিজেপি সদস্যরা মন্ডল সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন পেশ করা সত্ত্বেও পেরে ওঠেনি, তারাই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বিজেপি সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত 28 নভেম্বর আরামবাগ জেলা সংগঠনের অধীনে থাকা দুটি পুর মন্ডলের সভাপতি এবং 28 টি জেডপির সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ইতিমধ্যেই তারকেশ্বর পুরমণ্ডল কমিটির সভাপতি পদের জন্য 12 লক্ষ টাকা এবং 33 নম্বর মন্ডল সভাপতি পদের জন্য 5 লক্ষ টাকা নিয়েছেন আরামবাগের জেলা বিজেপির সভাপতি বিমানবাবু। এদিন এই প্রসঙ্গে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও 1996 সালের তারকেশ্বর বিধানসভায় ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী সুকুমার খাড়া বলেন, “গরু কেনাবেচা করার মত অর্থের বিনিময়ে দলীয় পদ বিক্রি করার জন্য দরকষাকষি হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমানবাবু তৃণমূল থেকে আসা দুই কর্মীকে আমাদের দলের দায়িত্ব দিয়েছেন।” তবে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী সমর্থকদের তরফ থেকে জেলা কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখানো হলেও সেই সময় জেলা অফিসে উপস্থিত ছিলেন না সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ। বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিমানবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগস্থাপন সম্পন্ন হয়ে ওঠেনি। তবে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেভাবে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তাতে করে দলের সাংগঠনিকভাবে বদনাম ছাড়া আর অন্য কোনো কিছুই হচ্ছে না। এমতঅবস্থায় ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করে যদি গোটা প্রক্রিয়ায় রাশ না টানা হয়, তাহলে আগামী দিনে ভারতীয় জনতা পার্টির ভাবমূর্তি যথেষ্ট পরিমাণে আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। তাই গোটা প্রক্রিয়াকে অনুশাসনে আনতে আগামীদিনে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব থেকে শুরু করে ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব, কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -