এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শুধু বিজেপি নয়, মমতার ঘুম ওড়াতে এবার আসরে আরেক হেভিওয়েট দল, ঘোষণা বড়সড় রাজনৈতিক কর্মসূচির

শুধু বিজেপি নয়, মমতার ঘুম ওড়াতে এবার আসরে আরেক হেভিওয়েট দল, ঘোষণা বড়সড় রাজনৈতিক কর্মসূচির

ভারতবর্ষের সংসদ ভবনে সবথেকে বেশি সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রশ্নতে সরব হন হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলে প্রচার করে থাকে তার দল এআইএমআইএম। শুধু সংসদের মধ্যেই নয়, সংসদের বাইরেও অনেক সময় বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা গেছে ওয়েইসিকে। ভারতবর্ষের রাজনীতিতে তাকে উগ্র মৌলবাদী নেতা হিসেবেও সনাক্ত করা হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ইতিপূর্বে যেমন কখনই শক্তিশালী হতে দেখা যায়নি ভারতীয় জনতা পার্টিকে, তেমনই কোনো মৌলবাদী সংগঠনও জায়গা করে নিতে পারেনি বাংলার মাটিতে।

কিন্তু বিগত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই আমূল বদলে গেছে পশ্চিমবাংলার চিত্র। একদিকে যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক রক্তচাপ বাড়িয়ে রাজ্যে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে হিন্দুত্বের রাজনীতি করা ভারতীয় জনতা পার্টি, অন্যদিকে তেমনই লোকসভা নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে হায়দ্রাবাদের আসাদউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএমের মৃদু পদধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

মনে রাখার বিষয়, ইতিপূর্বে যখন হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, ঠিক সেইসময় বিহারের কিশানগঞ্জ এলাকায় উপনির্বাচনে জয়যুক্ত হয়েছে মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন। ভৌগলিক মানচিত্র অনুযায়ী বিহারের এই কিষানগঞ্জ পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে নিকটবর্তী জেলা। কাজেই বিহারে জয়যুক্ত হওয়ার পরে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল যে বাংলাকে লক্ষ্য করবে, তা বলাই বাহুল্য। কারন মুসলিম মৌলবাদের রাজনীতি করা এআইএমআইএম খুব ভালোমতোই জানে, বাংলার নির্বাচকমণ্ডলীর মধ্যে সংখ্যালঘু ভোটার খুব একটা কম নেই।

পশ্চিমবঙ্গে অন্ততপক্ষে একশটি এরকম আসন রয়েছে যে আসনে সংখ্যালঘু ভোট রীতিমতো ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। তাই যখন বাংলা জুড়ে ভারতীয় জনতা পার্টির হিন্দুত্বের রাজনীতি চরম হারে চলছে, সেই সময় নিরপেক্ষ রাজনীতি করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপ বাড়িয়ে বাংলায় নিজেদের পাকাপোক্ত আসন করতে চায় এআইএমআইএম বলে খবর। তবে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল বাংলায় সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, কয়েকদিন আগেই কোচবিহারের সভা থেকে নাম না করে এআইএমআইএমকে নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, “হায়দ্রাবাদ থেকে কয়েকটি দল ভারতীয় জনতা পার্টির পয়সায় বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু বাংলায় কোনো সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই।” আর এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস আমাকে এবং আমার দলকে ভয় পাচ্ছে। সেজন্য আগামী দিনে বাংলায় নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির সবরকম চেষ্টা চালাবে এআইএমআইএম।”

সূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মজবুত সংগঠন তৈরির লক্ষ্যে আসছে জানুয়ারি মাসের ব্রিগেডে বড়সড় সভা করে নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা সেরে নিয়েছেন এআইএমআইএম। সভায় কমপক্ষে 10 লক্ষ জনসমাবেশের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে ওয়েইসির দল। জানা যাচ্ছে, সভায় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি এসসি, এসটি ওবিসিদেরকেও লক্ষ্য করেছে তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্কের একটা মূল ভিত্তি সংখ্যালঘু ভোট।

2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে দেখা যায় অধিকাংশ হিন্দু ভোটই পড়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টির খাতায়। কিন্তু মুসলিম ভোট এককাট্টা পাওয়ার জন্য এবং বিভক্ত হিন্দু ভোটের ফলে বিজেপির থেকে অন্তত চারটি আসন বেশি পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে যদি মৌলবাদী রাজনীতি করা এআইএমআইএম বাংলায় নিজেদের ঘাঁটি গাড়তে সক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে কিন্তু সংখ্যালঘু ভোট দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যাতে মূল লাভ হবে ভারতীয় জনতা পার্টির, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্রিগেডের সভা সম্পর্কে এআইএমআইএম সূত্রে জানা গেছে, 10 লক্ষ জমায়েতের সেই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এবং তার ভাই আকবরউদ্দিন ওয়েইসি। তাদের নিয়ে বাংলার বিভিন্ন জেলায় সভা করারও পরিকল্পনা করেছে এআইএমআইএম।

সভার অনুমতির বিষয়ে ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামিরুল হাসান। সব কিছু মিলিয়ে এআইএমআইএম পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করতে পারে কিনা, আর রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস সেই এআইএমআইএমকে প্রতিহত করতে পারে কিনা, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!