প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – প্রায় মাসখানেক ধরে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বভারতী। অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিশ্বভারতীর জমির কিছু অংশ দখল করে রেখেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। অভিযোগ করা হয়েছে, অমর্ত্য সেনের পৈতৃক বাড়ি প্রতীচীর কিছুটা অংশ বিশ্বভারতীর জমি। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এই পরিস্থিতিতে অমর্ত্য সেনকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। সবকিছু নিয়েই জমি বিতর্কে অর্থনীতিবীদ অমর্ত্য সেনের অস্বস্তি তিনি বাড়িয়ে দিলেন বহুগুণে।

বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিশ্বভারতীর জমির কিছু অংশ বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এ বিষয়ে অর্থনীতিবীদ জানিয়েছেন যে, বিশ্বভারতীর যদি সত্যিই কোনো অভিযোগ থাকে, তবে তাঁরা তাঁকে চিঠি লিখতে পারতেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, জমির মাপ কি করে জানতে পেরেছে বিশ্বভারতী? কি করে জেনেছে জমিতে গন্ডগোল আছে? কি করে জেনেছে তাঁর বাড়ির এই গন্ডগোলের খবর? প্রশ্ন করেছেন তিনি। এর প্রমাণ চেয়েছেন তিনি। তিনি জানতে চেয়েছেন যে, এ বিষয়ে কি তাঁদের কাছে কোন কাগজ আছে?

এই পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে অমর্ত্য সেনকে গত সোমবার আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সেদিনই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ইমেইল করে অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন। তবে অমর্ত্য সেনের এই ইমেইল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, এই ইমেইলে অমর্ত্য সেনের কোন স্বাক্ষর ছিলনা। তবুও আইনি উপায়ে এই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেবে বিশ্বভারতী। তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁর পক্ষ থেকে কখনোই অর্থনীতিবিদকে কোনরকম অসম্মান করা হয়নি। কিন্তু অর্থনীতিবিদ নিজেকে মিডিয়া-সার্কাসে জড়িয়ে নিয়েছেন।

এবার, এই পরিস্থিতিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে পরিযায়ী বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, যেভাবেই হোক বিশ্বভারতী ফিরিয়ে নেবে বেদখল কৃত জমি। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর ১১৩৮ একর জমির মধ্যে ৭৭ একর জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। অনেক বড় মাপের মানুষ এতে জড়িত রয়েছেন। রাজ্য সরকার যদি সাহায্য করে তবে এই জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ এতে সমর্থন করবেন বলেই তাঁর আশা।

বিশ্বভারতীর সঙ্গে জমি বিবাদে অর্থনীতিবিদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, বিজেপির বিরোধিতা করার কারণেই অর্থনীতিবিদকে এভাবে হেনস্তা করছে বিশ্বভারতী। অর্থনীতিবিদের পাশে থাকায় তিনি বার্তা দিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিজেপির হয়ে কাজ করেন বলে, অভিযোগ করেছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীতে জমি দিয়েছেন বহু মানুষ। তাঁরা যদি জমি চাইতে আসেন, তাহলে তাঁরা তাঁদের পাশে থাকবেন। তবে, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য পদে থাকেন সেক্ষেত্রে। জমি বিতর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ একাধিকবার কটাক্ষ করেছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। ইতিপূর্বে অমর্ত্য সেনকে তিনি জমিচোর বলে কটাক্ষ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রবল রাজনৈতিক তারজাও শুরু হয়েছে।