এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আমপান দুর্নীতি! ক্রমশ আছড়ে পড়ছে জনরোষ! ‘ভুল বুঝতে পেরে’ দোষ স্বীকার শুরু প্রভাবশালীদের!

আমপান দুর্নীতি! ক্রমশ আছড়ে পড়ছে জনরোষ! ‘ভুল বুঝতে পেরে’ দোষ স্বীকার শুরু প্রভাবশালীদের!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –ভয়াবহ দুর্যোগের পর রাজ্যজুড়ে এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। যেখানে পঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, ক্ষতিগ্রস্তদের রাজ্য সরকার সাহায্যের জন্য আর্থিক অনুদান পাঠালেও, নিচুতলার জনপ্রতিনিধিরা তালিকায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম দিচ্ছেন না। যেখানে তারা নিজের আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নাম ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। যার ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা সাহায্য পাওয়া অপেক্ষা তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা সাহায্য পাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।

এমনকি এর জেরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে, প্রতিবাদ হয়েছে। অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। কিভাবে তালিকায় এত দুর্নীতি ধরা পড়ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে গোটা রাজ্যজুড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেহেতু এই ঘটনায় তৃণমূলের অনেক জনপ্রতিনিধি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে, সেহেতু তৃণমূলের তরফে দলকে শুদ্ধিকরণ করতে সেই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে জনপ্রতিনিধিরা ব্যাপক মাত্রায় ভুল করায় এবার তারা প্রকাশ্যেই এই ব্যাপারে আফসোস করতে শুরু করেছেন।

জানা গেছে, পঞ্চায়েতে সুপারভাইজারের মায়ের নামে বাড়ি ভাঙার জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে গাইঘাটার পঞ্চায়েতে। তবে যার নামে টাকা ঢুকেছে, তার বাড়ির তেমন কোনোই ক্ষতি হয়নি বলে অভিযোগ। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই সেই সুপারভাইজারের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা‌। আর এরপরই রীতিমতো চাপে পড়ে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন সেই সুপারভাইজার‌।

এদিন আনন্দ ঘোষ নামে ওই সুপারভাইজার বলেন, “ভুল করে আমার নাম ক্ষতিপূরণের তালিকায় উঠেছিল। তালিকা তৈরির সময় এলাকায় ছিলাম না। শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলাম। পঞ্চায়েত সদস্য নাম তুলে দিয়ে থাকবেন তালিকায়।” তবে ক্ষতি পূরণের তালিকা তৈরীর সময় তো যে ব্যক্তির নামে সেই তালিকা তৈরি হবে, সেই ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর লাগে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এক্ষেত্রে সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর পাওয়া গেল কি করে! সুপারভাইজারের দাবি, তার বাড়িতে এসে পঞ্চায়েতের লোকেরা তার মায়ের অ্যাকাউন্ট নম্বর নিয়ে গিয়েছে। তবে গোটা ঘটনায় যে ব্যাপক দুর্নীতি লুকিয়ে আছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাই এবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই যেভাবে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে, তাতে রীতিমত চাপে পড়ে এখন সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে সুপারভাইজারের গলায়। কিন্তু কেন এমনটা হল! কেন যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সাহায্য না দিয়ে এভাবে দুর্নীতি হচ্ছে?

এদিন এই প্রসঙ্গে ঝাউডাঙ্গা পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সমীর বিশ্বাস বলেন, “অভিযুক্ত সুপারভাইজারকে শোকজ করা হয়েছে। তাকে কাছ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মায়ের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এদিকে সুপারভাইজার বাড়ি তৈরির টাকা পেয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সদানন্দ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।

গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, সদানন্দবাবুর ছেলে সৌরভ বিশ্বাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে। সুপারভাইজারের পাশাপাশি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও ক্ষতিপূরণের টাকা ঢোকায় এখন রীতিমত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যদিও বা এই ব্যাপারে সদানন্দ বিশ্বাস বলেন, “নিজের অজান্তে তালিকা তৈরি করতে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে গিয়েছে। আমার টিনের বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমি ভুল স্বীকার করছি। ক্ষতিগ্রস্থ না হয়েও যারা টাকা পেয়েছেন, সেই টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব পালন করব। আর আমার ছেলের আসা টাকাও ফিরিয়ে দেব।”

কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে! সরকারের পক্ষ থেকে যেখানে বলা হচ্ছে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করা হবে, সেখানে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা যাচ্ছে কি করে! তাহলে কি গোড়াতেই গলদ রয়েছে? অনেকে বলছেন, যদি সাধারন মানুষের নজরে এটা না আসত, তাহলে সেই সুপারভাইজার এবং তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সেই টাকা ভোগ করতেন। ফলে মানুষ কতদিন এইভাবে সুচারু দৃষ্টি রাখবেন এবং তার ফলে দুর্নীতি বন্ধ হবে, তা নিয়ে একটা বিরাট প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

তাই সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখানোর পর এখন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে সুপারভাইজার প্রকাশ্যে ভুল স্বীকার করে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললেও, দুর্নীতি যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে গরীব আরও গরীব হবে বলেই মনে করছেন সকলে। তাই সকলেই চাইছেন, দুর্নীতি আটকাতে সরকারের এই ব্যাপারে আরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!