সম্প্রতি বাংলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে আমপান নামক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়‌। যার ফলে সাধারণ মানুষ তাদের সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেছেন। কারও মাথার ছাদ উড়ে গিয়েছে, আবার কারও বাড়িতে পড়ে গিয়েছে গাছ। ফলে মানুষের ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই। এমতাবস্থায় সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া গরীব মানুষেরা।

সম্প্রতি দুর্যোগ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে হাজার কোটি টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি। তবে এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী সাহায্য করলেও, আদতে কোনো সাহায্যই মানুষ পাচ্ছেন না বলে সরব হলেন এসএফআইয়ের হেভিওয়েট নেত্রী ঐশী ঘোষ। এদিন এসএফআইয়ের তরফে ছাত্র-ছাত্রীদের খাতা বই দিয়ে সাহায্য করেন সংগঠনের নেত্রী। আর সেখানেই তাদের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর করার ঘোষণাকে কটাক্ষ করেন তিনি।

এদিন তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া হাজার কোটির গ্রাউন্ড রিয়েলিটি শূন্য। হাজার কোটির অনুদান সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছলে তবেই এর গুরুত্ব থাকবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, আর তার কোনো ফল মিলল না, তাহলে কি হবে! এত ঝড়ের পরেও প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া কোনো সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীদের ঝড়-বৃষ্টি এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এই ঝড়কে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করার কথা সবার আগে বলেছিলেন মোহাম্মদ সেলিম‌। আমাদের প্রাক্তন বিধায়ক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিধ্বস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি করেছেন। কিন্তু শাসক দলের নেতা নেত্রী বিধায়ক সাংসদদের দেখা যাচ্ছে না।”

অর্থাৎ এসএফআইয়ের হেভিওয়েট নেত্রী একথা বলে একদিকে যেমন কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করলেন, ঠিক তেমনই রাজ্য সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের দেখা যাচ্ছে না বলেও সরব হয়েছিল তৃঞমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন তিনি। এদিন রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এসএফআই নেত্রী ঐশী ঘোষ। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার অনলাইন এডুকেশন চালু করেছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় অনলাইন এডুকেশনের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের বই খাতা কেনার সামর্থ্য নেই। ইন্টারনেট ব্যবস্থা নেই স্কুলে। ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে বাড়িতে সেই ব্যবস্থা করা অসম্ভব। অনলাইন এডুকেশনে তাই ডিজিটাল বিপ্লব হবে না বাংলায়।”

অর্থাৎ রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের ব্যাপারে তারা যে এখনই সহমত পোষণ করছেন না, তা ঐশীদেবীর এই কথা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এদিন ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা করে যেভাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সাহায্যকে কটাক্ষ করলেন এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন, তাতে তারা বর্তমানে ছাত্র রাজনীতিতে আবার বিকল্প ছাত্রসংগঠন হিসেবে আবার উঠে আসার চেষ্টা করছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।