এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আমপানের টাকা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের পকেটে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কপালে জুটছে মার, বাড়ছে ক্ষোভ

আমপানের টাকা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের পকেটে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কপালে জুটছে মার, বাড়ছে ক্ষোভ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –সাধারণ হতদরিদ্র মানুষের ওপর শাসকের ছড়ি ঘোরানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীর নাম যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন মানুষের উপর তৃণমূলের নিপীড়ন অবাস্তব হিসেবেই মনে করেছিলেন সকলে। কিন্তু রাজনীতি বরাবর নিচুতলার কিছু নেতার কারণে কলুষিত হয়েছে। এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হচ্ছে।

ভয়াবহ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা না পাওয়া সাধারণ বাসিন্দারা এবার টাকা চাইতে গিয়ে শাসক দলের নেতাদের হুমকির মুখে পড়লেন। সূত্রের খবর, হুগলির আরামবাগের মায়াপুর 1 পঞ্চায়েতের মাদারতলা গ্রামের বেশকিছু দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন যে, তাদের ক্ষতিগ্রস্ত তালিকায় জায়গা দেওয়ার পর তারা ব্লক প্রশাসনের কাছে ক্ষতি পূরণের আবেদন করায় এবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাদের মারধর এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

প্রসঙ্গত, প্রথম দফায় ভয়াবহ দুর্যোগে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কারা সাহায্য পাবে, তার তালিকা বেশকিছু পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি প্রশাসনকে সংশোধিত তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেন। আর সেগুলোতে আবেদন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

তবে মাদারতলা গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেন যে, ক্ষতিগ্রস্থের পঞ্চায়েতের তালিকায় তাদের জায়গা হয়নি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বার্তা দেওয়ার পরেও সেই তালিকায় স্বজনপোষণের চিহ্ন রয়েছে। আর এরপরই তারা ব্লক অফিস থেকে আবেদন নিয়ে প্রায় ছয় দিন আগে তা জমা দেন। অভিযোগ, এরপর থেকেই অঞ্চল তৃণমূলের নেতা রফিক মল্লিকের নেতৃত্বে সেই অসহায় গ্রামবাসীদের হুমকি এবং মারধর করা হচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে শেখ বাদশা নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “আসলে আমরা নেতাদের কর্তৃত্ব এড়িয়ে সরাসরি প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়াই ওদের মনে ভয় ঢুকে গিয়েছে। যদি তদন্তে ওরা আগের তালিকা নিয়ে ফেসে যায় তাই সমস্ত বিষয়টা মহকুমা শাসককে জানিয়ে আমরা 16 জন আবেদন করেছি।” কিন্তু কেন এমনটা করা হবে? সাধারণ মানুষ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে তারা আবেদন জমা দেবেন। সেক্ষেত্রে শাসক দলের নেতারা কেন তাদের উপর চোটপাট দেখাবেন?

এদিন এই প্রসঙ্গে আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “বিষয়টা আমাকে কেউ জানায়নি। কেউ নিজেরা ক্ষতিপূরণের আবেদন করলে সেখানে নেতাদের হস্তক্ষেপের খবরদারি করার প্রয়োজন নেই। বিষয়টা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।” এদিকে যাকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রফিক মল্লিক কি বলছেন? কেন তিনি হুমকি দিচ্ছেন সাধারন মানুষকে?

এদিন এই প্রসঙ্গে রফিক মল্লিক বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা ক্ষতিপূরণ পাক, আমরাও চাই। ওদের অনেককে আমরাই বলেছি, ব্লকে আবেদন করতে। এতে আমাদের আপত্তি থাকবে কেন? তদন্ত করবে তো ব্লক প্রশাসন।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন তৃণমূলের নানা জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

কিন্তু ব্লকে সাধারণ মানুষ ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করায় যেভাবে তাদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে উঠল, তাতে তৃণমূলের অস্বস্থি আরও বাড়ল। সাধারণ মানুষের জন্য সরকার। সেক্ষেত্রে কেন শাসক দলের নেতাদের দাপট বারবার সাধারণ মানুষকে সহ্য করতে হবে! কেন এভাবে হুমকির শিকার হতে হবে অসহায় মানুষদের! এখন এই প্রশ্নই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রত্যেকের কাছে। সব মিলিয়ে গোটা ঘটনায় তদন্ত ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তৃণমূলের অস্বস্তি কতটা বাড়ে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!