অমিতের পঞ্চপান্ডবের ঘোষনাতেই কি শুভেন্দুর দাম বাড়লো তৃণমূলে, নড়লো টনক? উঠছে প্রশ্ন? তৃণমূল মেদিনীপুর রাজনীতি রাজ্য November 19, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সাম্প্রতিককালে রাজ্যজুড়ে যে ব্যক্তিকে নিয়ে সব থেকে বেশি জল্পনা ছড়িয়েছে, তার নাম তৃনমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। অনেকেই বলেন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পর যদি তৃণমূলে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা কারও থেকে থাকে, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই এমন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাম্প্রতিককালে নিজের মত করে পথ চলতে শুরু করেছিলেন। যেখানে দল এবং সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছিল তাকে। বিভিন্ন সভায় গিয়ে অরাজনৈতিক বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জেলাতে তার ছবি যুক্ত পোস্টার দিয়ে নিচে লিখে দেওয়া হচ্ছিল, আমরা দাদার অনুগামী। যা নিয়ে জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, এই শুভেন্দু অধিকারী যদি দলবদল করেন, তাহলে বড় ফাটল দেখা দিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসে। আর এই অবস্থাতে এবার বিজেপি নতুন করে বাংলার জন্য সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পাঁচ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। যার ফলে কি এবার শুভেন্দু অধিকারীকে নিজেদের দলে আরো বেশি করে সক্রিয় করতে উদ্যত হল তৃণমূল কংগ্রেস এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। জানা গেছে, ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রবীণ সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। বস্তুত, এতদিন শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হলেও, তাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায়নি শাসক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের। যেখানে প্রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের অনেকে পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারীর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন। অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, এত কিছু দেওয়া সত্ত্বেও কেন এই বিরোধিতা! এক্ষেত্রে বিগত দিনে মুকুল রায়কে যেমন মীরজাফর বলে কটাক্ষ করে ছিল তৃণমূলের একাংশ, ঠিক তেমনই শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক আচার-আচরণ নিয়ে যখন জল্পনা তৈরি হয়, তখন তার মান না ভাঙিয়ে তাকেও সেই রকম ভাবে আক্রমণ করতে শুরু করে ঘাসফুল শিবিরের অনেকে। যার ফলে শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে দলের দূরত্ব আরও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। তবে অবশেষে বিজেপির পক্ষ থেকে যখন বাংলা দখলের ব্যাপারে আরও জোর দিয়ে পাঁচ নেতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হল, তখন নিজেদের দলের শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগ আটকাতে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করলেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা তারা প্রায় সকলেই জানেন যে, গোটা রাজ্যে শুভেন্দু অধিকারীর ব্যাপক বিস্তার রয়েছে। ফলে তিনি যদি দলত্যাগ করেন বা গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা কার্যত সংশয়ের মুখে পড়ে যাবে। এমনিতেই অমিত শাহ বাংলাকে পাখির চোখ করে এগিয়ে যেতে শুরু করেছেন। তার মধ্যে যদি শুভেন্দু অধিকারীর মত শীর্ষস্তরের নেতা এবং গ্রহণযোগ্য নেতাকে তৃনমূল কংগ্রেস নিজেদের দলের সক্রিয় করতে না পারে, তাহলে ভবিষ্যৎ কার্যত তৃণমূলের পক্ষে অন্ধকার হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন একাংশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর সেই আশঙ্কাতেই যখন মেঘ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে, তখন তৃনমূলের পক্ষ থেকে সেই শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে বনিবনা মিটিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে অনেকে আবার বলছেন, তৃণমূল এখন শুভেন্দু অধিকারীকে দলের সক্রিয় করবার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলেও সময়ের অনেকটাই দেরী হয়ে গেছে। কেননা এতদিন অখিল গিরি থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম, এমনকি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত অনেক নেতারা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে তার সঙ্গে দূরত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল শাসকদলের। কিন্তু তা সত্ত্বেও তৃণমূলের কাউকে সেই শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। কিন্তু বিজেপির পক্ষ থেকে যখন সাংগঠনিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে পাঁচটি জোনে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হল, তখন ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এখন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে প্রয়োজন পড়ল শাসকদলের বলে দাবি করছেন সমালোচক মহলের একাংশ। এখন দেখার বিষয়, শুভেন্দু অধিকারীর মান ভাঙানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তিনি এই ব্যাপারে কি করেন, কি হয় রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীর পরবর্তী কৌশল, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -