এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সামনে এল বাকি থাকা অন্য এক ডিএ মামলার রায়, সঙ্গে নতুন তথ্য – জেনে নিন বিস্তারিত

সামনে এল বাকি থাকা অন্য এক ডিএ মামলার রায়, সঙ্গে নতুন তথ্য – জেনে নিন বিস্তারিত


প্রিয় বন্ধু এক্সক্লুসিভ – দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষে সপ্তাহ দুয়েক আগে সামনে আসে রাজ্য সরকারি কর্মীদের করা ডিএ মামলার রায়। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা স্যাট রায় দেয় – ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা সিপিআই (সেন্ট্রাল প্রাইস ইনডেক্স) অনুযায়ীই পাবেন এবং ২০০৬ সাল থেকেই এর ‘এফেক্ট’ দিতে হবে অর্থাৎ এই দীর্ঘ ১৩ বছরের এরিয়ার রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা পাবেন।

যদিও, সেই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেদিনই এক প্রশাসনিক সভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, টাকা দিতে আপত্তি নেই, কিন্তু টাকা থাকলে তো টাকা দেব! এমনকি, এই প্রসঙ্গে রাজ্যকে কি পরিমান ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতে হচ্ছে সেদিন সেকথা জানাতেও ভোলেননি তিনি। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই মনে হচ্ছিল, ডিএ মামলা এখানেই শেষ হচ্ছে না আপাতত। তা যেতে পারে উচ্চতর আদালতে।

আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে, আজ সামনে এল ডিএ সংক্রান্ত আরেকটি মামলার রায়। রাজ্য সরকারি কর্মীদের নিয়ম মেনে, ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হয়ে ইউনিটি ফোরাম ও কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ, যৌথভাবে স্যাটে মামলা করে। এই মামলার কিছুদিন পরেই স্যাটে ডিএ সংক্রান্ত আরেকটি মামলা করে সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু, প্রথম মামলাটিতে স্যাট ততদিনে রায় দিয়ে দেয় যে, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার নয়।

ফলে, ইউনিটি ফোরাম ও কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ পুনরায় যৌথভাবে এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। ফলে, সরকারি কর্মচারী পরিষদের মামলাটির রায়দান স্যাট স্থগিত রাখে এবং জানিয়ে দেয়, এই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিলে, তারপরে এই মামলার রায়দান হবে। এদিকে, কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দেয়, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকার। এর পাশাপাশিই, স্যাটকে নির্দেশ দেয় ডিএর হার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে।

আর তাই, ইউনিটি ফোরাম ও কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ পুনরায় যৌথভাবে স্যাটে ফিরে আসে মামলাটি নিয়ে। সেই মামলারই রায় গত ২৬ শে জুলাই স্যাট দিয়েছে। এদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের রায় সামনে আসতেই সরকারি কর্মাচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল স্যাটকে পুনরায় তাঁর করা মামলাটির শুনানি চালু করতে অনুরোধ করলে তা গ্রাহ্য হয়। একসময় মনে করা হচ্ছিল, যেহেতু দুটি মামলারই ‘ম্যাটার’ প্রায় এক, তাই হয়ত একত্রে শুনানি হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু, সেইসময় এই দুই মামলা একত্রে শুনানি করতে বাধা দেয় প্রথম মামলার অন্যতম মামলাকারী কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ। রাজ্য সরকারও দুটি মামলা পৃথকভাবে লড়তে রাজি হয়। ফলে, প্রথম মামলাটির রায় আগে বেরিয়ে গেলেও সরকারি কর্মচারী পরিষদের করা মামলার রায় আজ সামনে নিয়ে এল স্যাট। আজকের রায়ে, স্যাট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যেহেতু দুটি মামলার ‘ম্যাটার’ প্রায় এক, তাই প্রথম মামলার রায়ই এক্ষেত্রেও বলবৎ রইল।

এই প্রসঙ্গে মামলাকারী সরকারি কর্মাচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল জানান, কলকাতা হাইকোর্ট বা স্যাট যে রায়ই দিক না কেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকার সেই রায়কে বলবৎ করার কোনো সদিচ্ছা এখনও পর্যন্ত দেখান নি। ফলে, আগামী দিনে ডিএর অধিকার ছিনিয়ে নিতে উচ্চতর আদালতে আরও আইনি লড়াই ও রাস্তার আন্দোলনকে তীব্রতর করতে হবে। পরপর দুটি মামলায় একই রায় অবশ্যই করে রাজ্য সরকারের উপর ডিএ নিয়ে চাপ বৃদ্ধি করল। তবে এরপরেও রাজ্য সরকার ডিএ দিতে না চাইলে, এই রায় আগামীদিনের উচ্চ আইনি লড়াইকে একত্রিতভাবে লড়ার জায়গায় নিয়ে এল।

এর পাশাপাশিই, ডিএ মামলার আরেক কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘প্রাক্তন’ কনফেডারেশন শীর্ষনেতা (গত ২৬ শে জুলাই, এই মামলার রায়দানের দিনেই তিনি সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন) সুবীর সাহা বলেন, ডিএ মামলায় সরকারি কর্মচারী পরিষদের এই জয়কে অভিনন্দন জানাই। এই রায়ের ফলে প্রমাণিত হল, কনফেডারেশন ও ইউনিটি ফোরামের করা মামলা আর দেবাশীষবাবুদের করা মামলার মধ্যে কোনো ফারাক ছিল না। এই দুটি মামলা স্যাটে একত্রে লড়ার জন্য তখন কনফেডারেশনের তরফে বাধা দেওয়া হয়েছিল, আমার মনে হয় তা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

সুবীরবাবু আরও বলেন, ডিএ নিয়ে মামলা করতে চাওয়াই আমাদের প্রয়াত নেতা ও রাজ্য আইএনটিইউসির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রমেন পাণ্ডে সাথেসাথেই অনুমতি দিয়েছিলেন। দেবাশীষবাবুদের ক্ষেত্রে হয়ত সাংগঠনিক অনুমতি আনতে দুদিন দেরী হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও, দুটি মামলার বিষয় যেহেতু এক, আমার মতে দুটি মামলা একত্রে লড়াই শ্রেয় ছিল। এই নিয়ে কনফেডারেশনের অন্যান্য নেতৃত্বের সঙ্গে মতপার্থক্য ও অন্যান্য আরও বেশ কিছু কারণে আমি ও আরও বেশ কিছু নেতা কনফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করি। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, দাবি ছিনিয়ে নিতে গেলে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাস্তায় নেমে আন্দোলন করাটা বেশি জরুরি।

সুবীরবাবুর বক্তব্য, কিন্তু কনফেডারেশন নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, ডিএ মামলা চলাকালীন কিছুতেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা যাবে না। অথচ উস্থি দেখিয়ে দিয়েছে, রাস্তায় নেমে আন্দোলনই একমাত্র পথ। মুখ্যমন্ত্রী দুদিন আগে যে শিক্ষকদের বলেছিলেন কেন্দ্রের হারে বেতন চাইলে, কেন্দ্রে চলে যান – সেই মুখ্যমন্ত্রীই দুদিনের মধ্যে আন্দোলনের চাপে পরে শিক্ষকদের বেতনবৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন। তাই আগামীদিনে ডিএর অধিকার ছিনিয়ে নিতে মামলাকারীরা যেমন আইনি পথে চলছেন চলুন, আমরা যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ব্যানারে দুই যুগ্ম-আহ্বায়ক ফটিক দে ও দেবাশীষ শীলের নেতৃত্বে রাস্তার আন্দোলন তীব্রতর করব । আর সেই কারণেই আমরা বেশ কিছু নেতা কনফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেছি – যাতে আমাদের রাস্তার আন্দোলনে আর কেউ বাধা দিতে না পারেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!