অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ১ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় March 15, 2020 ফেসবুকে অনেক দিন আছে অভ্রদীপ। চেনাজানারা কেউ অভ্র, কেউ দীপ বলে বাকি বন্ধুবান্ধবরা অনেক নামে ডাকে। সবার যেমন থাকে তেমনি, নতুন কিছু নয়। বাড়ি আসানসোল, চাকরিসূত্রে কলকাতায় থাকে। শনিবার একটু রাত করে ফুটবল খেলে বাড়ি আসে, রবিবার একটু দেরিতে ওঠে তারপর ফ্রেশ হয়ে যদি বন্ধুদের সাথে কোথাও ঘুরতে যাবার থাকে যায় নাহলে রান্নার মাসি যা রান্না করে খেয়ে ঘুম , ও মাঝে মাঝে ফেসবুক আর হোয়াটস্যাপ, সিনেমা দেখতে দেখতেই কখন যে সোমবার চলে আসে বুঝতেই পারে না অভ্র। এমন এক রবিবার ,কোথাও যাবার নেই, যে যার গার্লফ্রেন্ড, বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরছে অভ্রর কেউ নেই, প্রপোস করেছিল কটা, তারা রিজেক্ট করে দিয়েছে , না দেখতে শুনতে খারাপ নয়, চাকরিও করে ভালোই,তবে আজকালকার মেয়েদের কি চায় কে জানে? যদিও অফার পেয়েছে , কিন্তু না ইচ্ছা করেনি তাদের সাথে জড়াতে ফলে আপাতত ব্যাচেলর। লোককে বলে বেশ আছি কিন্তু বুকের ভেতরটা চীন ,জাপান অনেক কিছু করে। ফেসবুক স্ক্রল করছিলো হঠাৎ “পিপল ইউ মে নো” স্ক্রল করে বেরিয়ে গিয়েও ঘুরে এলো। প্রথমেই একটা নাম দীপশিখা ব্যানার্জী। বেশ মিষ্টি দেখতে তো, চোখ আটকে গেছে। প্রোফাইলে গেলো পর পর ছবিগুলো দেখছে। প্রত্যেকটা ছবি সুন্দর। মিষ্টি মেয়েরা যেমন হয় আরকি, প্রোফাইল নিয়ে একটু রিসার্চ করলো অভ্র। তাতে জানা গেলো মেয়ে কলকাতা উনিভার্সিটিতে পড়ে, বাড়ি বর্ধমান। টুক করে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দিলো, এবার হা পিত্তেশ করে বসে থাকা কখন একসেপ্ট করবে, আদেও করবে কিনা ? এর আগেও অনেকবার অনেকের উপর ক্রাশ খেয়ে তাদেরকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে কেউ একসেপ্ট করেছে, কেউ করেনি , কেউ জানতে পেরে ব্লক করে দিয়েছে, কেউ হ্যাঁ বলেছে কিন্তু ফোন নো দেয়নি এইসব চলছিল। কিন্তু এ যদি না করে দেয় খুব কষ্ট হবে। উনিভার্সিটিতে গিয়ে প্রপোজ করবে , যদি বয়ফ্রেন্ড থাকে তাঁকে ভাঙছি দেবে, যা হোক করে ওই মেয়েকেই বিয়ে করবে। যতক্ষণ না একসেপ্ট করছে ততক্ষন ফের প্রোফাইলে ঢুকলো অভ্র। অনেকেক্ষন প্রোফাইলটা দেখছিলো, বলা ভালো – বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিলো। না কিছু লেখা নেই, পিকচার গুলো দেখো কিছু বোঝ যাচ্ছে না। তবে খুব একটা এক্টিভ বলে মনে হলো না, কেননা অনেক দেরিতে দেরিতে পোস্ট। কিন্তু মামনি কি একসেপ্ট করবে অভ্রর ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট? চিন্তার মাঝেই সুখবরটা এসে গেলো ফেইসবুক নোটিফিকেশন পাঠিয়েছে যে দীপশিখা তার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেছে। উফফ নাচতে ইচ্ছা করছে। সঙ্গে সঙ্গেই হাই লিখে একটা ম্যাসেজ পাঠালো অভ্র , না কোনো উত্তর নেই , দেখেওনি। সকাল গিয়ে বিকেল হলো বিকেল গিয়ে রাত্রি। না কোনো উত্তর নেই। কি হলো অনেকবার অনলাইন দেখাচ্ছে তবুও কেন অভ্রর ম্যাসেজটা দেখছে না , রাতের দিকে ফের দেখলো সিন্ হয়েছে কিন্তু কোনো রিপ্লাই নেই। আচ্ছা দেখলো তবুও কেন কোনো রিপ্লাই করলো না কে জানে? যাই হোক ফের একটা হাই পাঠালো। না আর অনলাইন দেখাচ্ছে না। সারারাত কেটেছে চিন্তায়, কেন কোনো রিপ্লাই করছে না।সকালে ফের গুড মর্নিং, পাঠিয়েছে। না সিন্ দেখাচ্ছে না অনলাইন ও দেখাচ্ছে না। তবে এবার কি? কি আবার অপেক্ষা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সোমবার – অফিস আছে আজকে। রেডি হয়ে ফের একবার ফেসবুক দেখলো, না অনলাইন নেই। খেতে খেতেও দেখলো এই তো অনলাইন হয়েছে।এই তো এবার শুধু অপেক্ষা রিপ্লাইয়ের। না এলো না কোনো রিপ্লাই, ফের হাই, গুড মর্নিং। কিন্তু দেখেই নি, যাই হোক আর দেরি করা যাবে না অফিস বের হতে হবে। অফিসে গিয়ে দেখবে ফের। অফিসে গিয়ে দেখলো অভ্র হুম, এখনো অনলাইন কিন্তু নো রিপ্লাই। মিটিংএ গেলো ফিরে আসতেই মন খুশি। আরে রিপ্লাই করেছে। না কোনো হাই নেই , লেখা – বলুন। এখনো অনলাইন আছে ফের অভ্র লিখলো – হাই দীপশিখা – হুম ,বলুন’ অভ্র – ভালো লাগলো দীপশিখা – কি ? অভ্র – এই যে রিপ্লাই করার স্টাইলটা দীপশিখা – ও আচ্ছা, আপনি কি আমাকে চেনেন ? অভ্র – না,বাট না চিনলে এমনি কাউকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো যায় না। দীপশিখা – না না তা নয়। এমনি জানতে চাইছি। আমি আপনাকে চিনতে পারিছিলাম না। তাই ভাবলাম মে বি আপনি আমাকে চিনতে পারেন। অভ্র – ও আচ্ছা , না না তেমন কিছু নয়। ওই দেখলাম ভালো লাগলো তাই দীপশিখা – কোথায় থাকেন? অভ্র – এখানেই, সল্টলেক , এন্ড ইউ ? দীপশিখা – কলকাতা ইউনিভার্সিটির কাছেই মেসে অভ্র – আমরা কি তুমি করে বলতে পারি। দীপশিখা – ওকে নো প্রব্লেম অভ্র – থাঙ্কস দীপশিখা – আচ্ছা রাখলাম ক্লাস আছে ,পরে কথা হবে। বাই মন ভরলো না। আরো কথা বলতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু বাই বলে দিয়েছে তাই আর কিছু করার নেই , রাখতেই হলো। ফের কথা হলো রাত্রে, অনলাইন দেখাচ্ছে। ফের হাই – লিখে পাঠালো অভ্র। উত্তর এলো – বলো অভ্র – কি করছো? দীপশিখা – কিছু না, এই এমনি অভ্র – ডিনার হলো ? দীপশিখা – হুম, তোমার? অভ্র – এই মাত্র দীপশিখা – তোমার বাড়িতে কে কে আছেন? অভ্র – মা, বাবা আমি। এখানে কেউ নেই শুধু আমি। দীপশিখা- ও রান্না করে কে? তুমি? অভ্র – না একটা মাসি আছে। তোমাদের ? দীপশিখা – আমি তো মেসে থাকি। অভ্র – ও হ্যাঁ বলেছিলে। দীপশিখা – আচ্ছা অনেক রাত হলো বাই পরে কথা হবে। অভ্র – ওকে, বাই না খুব বেশি কথা হচ্ছে না একটু আধটু কথা, কিন্তু তাতেই অনেকটা জড়িয়ে যাচ্ছে অভ্র। আরো কথা বলতে ইচ্ছা করছে কিন্তু না জোর করে ভালো , খারাপ ভাবতে পারে। মঙ্গলবার – সকালে – অভ্র – হাই, কি করছো? দীপশিখা – অনেক্ষন পর – এই যে কিছু না , বেরোবো, ক্লাস আছে। তুমি ? অভ্র – মি টু , রেডি হলাম ,অফিস আছে। দীপশিখা – ওকে বাই অভ্র – বাই সব ভালো কিন্তু বড্ডো তাড়াতাড়ি বাই বলে দেয়। কথা শুরুর আগেই শেষ। রাত্রে – অভ্র – হাই দীপশিখা -বলো অভ্র – বয় ফ্রেন্ডের সাথে কথা হচ্ছিলো? ডিসটার্ব করলাম দীপশিখা – সোজা সুজি জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর দিতাম, ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করার কিছু নেই। অভ্র – ?? কি ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম আবার ? দীপশিখা – ন্যাকা, জিজ্ঞাসা করছো আমার বয়ফ্রেইন্ড আছে কিনা! স্টাইলটা মার্কেটে অনেক আগে এসে গেছে? অভ্র সেটা জানতেই চেয়েছিলো বাট ধরে ফেলবে বোঝে নি. অভ্র – উত্তরটা তো পেলাম না। দীপশিখা – না নেই অভ্র- রিয়েলি , এই রকম মার্ কাটারি সুন্দরীর কেউ প্রেমে পড়েনি হতেই পারে না। দীপশিখা – বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে , আমি না মারকাটারি সুন্দরী না মিথ্যা বলছি। যাই হোক , তোমার গার্লফ্রেন্ড এর সাথে কথা হলো। অভ্র – হা হা আমার কেউ নেই মানে গার্লফ্রেইন্ড দীপশিখা – আচ্ছা? তো এত রাত্রে মানে রাত ১১ টার সময় কি করছো ফেসবুকে ? অভ্র – তোমার সাথে চ্যাট দীপশিখা – আর কার সাথে ? অভ্র – সত্যি আর কারুর সাথে নয়। দীপশিখা – আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে পরে কথা বলবো আবার,বাই। না বাই বলতে ইচ্ছা করছে না কিন্তু যদি উল্টোপাল্টা ভাবে। অনিচ্ছা থাকলেও বাই বলতেই হলো বুধবার – সকালে অভ্র – হাই দীপশিখা – বলো অভ্র – কি করছো? দীপশিখা – কিছু না। তুমি ? অভ্র – অফিস যাবো। রেডি হচ্ছি। দীপশিখা – ফেসবুকে চ্যাট করতে করতে ? অভ্র – না মানে খাচ্ছি দীপশিখা – ও আচ্ছা , কি করো তুমি। অভ্র – জব, সেক্টর ফাইভ এ। দীপশিখা – বা , ভালো ছেলে। অভ্র – ?? দীপশিখা – এই যে জব করো, মেয়ের বাবা ঝাঁপাবে তাই বললাম। অভ্র – দূর, দীপশিখা – আচ্ছা রাখো বেরোবো ক্লাস আছে। রাত্রে – অভ্র – কি করছো? দীপশিখা – এই তো ফেসবুক ঘাঁটছি। অভ্র – আচ্ছা একটা কথা বলি ? দীপশিখা – বলো অভ্র – না মানে সাউন্ডটা একটু অড দীপশিখা – শুনি অভ্র – একচুয়েলি, আই হ্যাভ এ ক্রাশ অন ইউ , ব্লক করো না প্লিজ দীপশিখা – হা হা, বেশি হয়ে গেলো না ? অভ্র – না বেশি কম নয়, সত্যি প্রেমে পড়েছি তোমার। রাগ হলো? দীপশিখা – না, বাট, আমি তোমার উপরে ক্রাশ খাইনি, সরি, সো আগে দেখো অভ্র – আমি সিরিয়াসলি বলছি – আই হ্যাভ এ ক্রাশ অন ইউ। সবসময় তোমার কথাই ভাবছি। সত্যি দীপশিখা- ব্লক করলেই সব অসুখ সেরে যাবে অভ্র – এই না – প্লিজ, মরে যাবো দীপশিখা – তোমার গার্লফ্রেন্ড জানে? অন্য মেয়েকে বলছো তার উপরে ক্রাশ খেয়েছো। অভ্র – আমার কোনো গার্ল ফ্রেন্ড নেই। দীপশিখা – আমার আছে বয় ফ্রেন্ড অভ্র – তবে যে বলেছিলে নেই দীপশিখা- আমার ইচ্ছা হয়নি তাই বলিনি অভ্র – শোনো না , প্লিজ মজা করোনা। আমি কিন্তু সিরিয়াস। দীপশিখা – আমি নোই অভ্র – হুম, আরো খাটতে হবে দীপশিখা – তাতেও লাভ হবে না অভ্র – লেটস সি দীপশিখা – অনেক রাত হয়েছে যাও ঘুমাও অভ্র – ঘুম আসবে না, তোমার কথাই মনে পড়বে দীপশিখা – আবার? অভ্র – আচ্ছা একটা জিনিস দেখেছো – আমার নামের সাথে তোমার নামের কত মিল দীপশিখা – কিসের? অভ্র – এই যে আমার নাম অভ্রদীপ তোমার নাম দীপশিখা। মানে যেখান থেকে আমার নাম শেষ হচ্ছে সেখান থেকেই তোমার নাম শুরু। দীপশিখা – হুম, ঠিক ভাই বোনের মতো অভ্র – নো প্লিজ। খানিকটা ওই গানটার মতো – “মেরে পেয়ার তুম হো সনম, মেরে নাম সে শুরু ,তেড়ে নাম পে খতম ” দীপশিখা – এটা ঠিক লিরিক নয়। অভ্র – না এটাই লিরিক। দীপশিখা – তাহলে এটা কি ? ” মেরে প্যায়ার কি উমার হো ইতনি সনম, তেড়ে নাম সে শুরু তেড়ে নাম পে খতম। ইউটিউব থেকে লিংকটা পাঠালো। অভ্র – ও আচ্ছা আমার মনে ছিল না ঠিক। বাই দা ওয়ে কিছু ভাবলে? দীপশিখা – কি নিয়ে? অভ্র – আমাকে নিয়ে? দীপশিখা- হ্যাঁ অভ্র -কি? দীপশিখা – তোমাকে খুব তাড়াতাড়ি ব্লক করতে হবে। অভ্র – প্লিজ নো, আমি খুব ভালো ছেলে। দীপশিখা -রাখো অভ্র – বলছি একটু ভেবে দেখলে হতো না দীপশিখা – না অভ্রদীপ – এত ভালো একটা ছেলেকে কষ্ট দিতে কষ্ট হচ্ছে না। দীপশিখা – না অভ্র – শোনো না, বলছি আমাকে বয় ফ্রেন্ড রাখা যায় না ? দীপশিখা – না অভ্র – ওকে তাহলে তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড হয়ে যাও । দীপশিখা – না অভ্র – ওকে তাহলে ওই কথাই রইলো ,রাখি দীপশিখা – এই দাড়াও দাড়াও, কি কথা ? অভ্র – ওই যে তুমি আমাকে পছন্দ করো – বাই। দীপশিখা – নো না আর দেখেনি অভ্র , না মানে দেখেছে কিন্তু চ্যাটবক্স খুলে দেখেনি তাই সিন্ দেখাচ্ছে না। দীপশিখা ফোনটা রেখে খুব হাসছে। ছেলেটা পারেও। আচ্ছা মজা করছে নাকি সত্যি ? যদি মজা করে ঠিক আছে সত্যি বললে – না সম্ভব নয়। চলো দুদিন একটু মজা করে নেবে। তারপর তো। ……………………….. পরের পর্ব – এনসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ২ আপনার মতামত জানান -