এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > অন্তর্ঘাত অতীত, লড়াইয়ের ময়দানে সম্মুখে বিপ্লব-সোনা!

অন্তর্ঘাত অতীত, লড়াইয়ের ময়দানে সম্মুখে বিপ্লব-সোনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এক সময় তাদের দুজনের মধ্যে গভীর সখ্যতা ছিল। গুরু-শিষ্যের ভাব ছিল প্রচুর। কিন্তু হঠাৎ করেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় দুর্যোগের ঘনঘটা। হরিরামপুরের শুভাশিস পাল ওরফে সোনা পালের সঙ্গে গভীর দূরত্ব তৈরি হয় জেলা তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা বর্তমান জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা হরিরামপুরের প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের। মাঝেমধ্যেই তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে শুরু করে।

একে অপরের সঙ্গে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। দলের ভেতরে দুজন থাকলেও, একজন অপরজনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে জেরবার করে দেয় তৃণমূলের অন্দরমহলকে। মাঝে বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পান শুভাশিস পাল। বিপ্লববাবুকে রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক করতে নানা চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি। পরবর্তীতে বিপ্লব মিত্র আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসলে অস্বস্তিতে পড়ে যান সোনা পাল।

পাল্টা সোনা পালকে রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক করতে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আর এর পরেই বেশ কিছুদিন ঘরে বসে থাকার পর সম্প্রতি বিজেপিতে যোগদান করেন হরিরামপুরের সোনা পাল। বর্তমানে হরিরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিপ্লব মিত্র। একাংশ বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে এখানে সোনা পাল অন্তর্ঘাত করার কারণে বিপ্লব মিত্র জয়লাভ করতে পারেননি।

কিন্তু এবার বিজেপিতে চলে যাওয়া সোনা পালের সঙ্গে সম্মুখ সমরে লড়াই হবে বিপ্লব মিত্রের। যদিও বা সোনা পালকে হরিরামপুর বিধানসভায় বিজেপির পক্ষ থেকে প্রার্থী করা হয়নি। কিন্তু সেখানে বিজেপি প্রার্থী নীলাঞ্জন রায়ের সমর্থনে ভোটব্যাংককে শক্ত করতে বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে পথে নামবেন সোনা পাল। স্বাভাবিক ভাবেই এতদিন দলের মধ্যে দুই নেতার মধ্যে লড়াই চললেও, এবার যে তা কার্যত সম্মুখ সমরে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, তা বলাই যায়।

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, যখন তৃণমূলে ছিলেন সোনা পাল, তখন তিনি হরিরামপুরে শেষ কথা বলতেন। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী হিসেবে পছন্দ না হওয়ার কারণে তার অঙ্গুলিহেলনে এখানে বিপ্লব মিত্র পরাজিত হয়েছেন বলে দাবি করেন একাংশ। তবে এবার সেই সোনা পাল বিজেপিতে যাওয়ার কারণে তিনি তাঁর রাজনৈতিক ক্রেজ কতটা দেখাতে পারেন, সেটাই লক্ষণীয় বিষয়।

দলের ভিতর থেকে এতদিন অন্তর্ঘাতের অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার বিরোধী শিবিরে যোগ দিয়ে সরাসরি বিপ্লব মিত্রের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে সোনা পাল কতটা বিপ্লববাবুকে চাপে ফেলতে পারেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হরিরামপুরের ফলাফল প্রমাণ করে দেবে, সেখানে শুভাশিস পাল বা বিপ্লব মিত্রের গ্রহণযোগ্যতা কতটা।

অনেকে বলছেন, দলের ভেতরে থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করা খুব সহজ‌। কিন্তু দলের বাইরে বেরিয়ে এসে প্রতিপক্ষ শিবির থেকে লড়াই করা অত্যন্ত কঠিন। তাই এবার হরিরামপুরের লড়াই দেখার মত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিপ্লব মিত্র। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন নীলাঞ্জন রায়। কিন্তু হরিরামপুরের মাটি চেনা সোনা পাল অতীতে যেমন অন্তর্ঘাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, ঠিক তেমনই এবার প্রতিপক্ষ শিবিরে যোগ দিয়ে কতটা বিপ্লব মিত্রের পথের কাটা হতে পারেন, সেটাই দেখার বিষয়।

অন্যদিকে বিপ্লববাবু নিজের মত করে রাজনৈতিক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে হরিরামপুরে। একদা দুই সতীর্থ এখন প্রতিপক্ষ শিবিরে বলে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত কার দখলে যায় হরিরামপুর বিধানসভা কেন্দ্র, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!