প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে যখন তৃণমূলে বারবার অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে, তৃণমূলের একের পর এক নেতা-কর্মী যোগদান করছেন বিজেপিতে, সেই সময়ে একেবারে উল্টো স্রোত দেখালেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূম জেলার মুরারাইতে অনুব্রত মণ্ডলের সভায় শতাধিক বিজেপি পরিবার বিজেপি ছেড়ে যোগদান করলেন তৃণমূলে। যে ঘটনায় যথেষ্ট উচ্ছসিত হলো ঘাসফুল শিবির। অনুব্রত মন্ডলের ম্যাজিক যে এখনও অব্যাহত, তা আবার প্রমাণিত হলো।

মুরারাই এর এই সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করলেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তিনি জানালেন যে, প্রধানমন্ত্রী মানবদরদী নন, তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। তাঁর যত দাড়ি বাড়ছে, ততোই দাম বাড়ছে পেট্রোল ডিজেলের ও রান্নার গ্যাসের। প্রধানমন্ত্রীকে বেইমান বলে তিনি কটাক্ষ করলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুব্রত মণ্ডল প্রশ্ন করেছেন যে, তাঁর কি লজ্জা লাগে না? তিনি জানালেন গত ২০১৪ সালে পেট্রোলের দাম ৭২ টাকা হওয়ার কারণে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি কী বলবেন?

এখন দেশের একাধিক স্থানে পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি জানালেন মুম্বাই, কাশ্মীরে পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বড় বড় কথা বলেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি কী করবেন? বাংলায় এসে তিনি বলেছিলেন যে, গ্রামের মা বোনেদের কাঠে রান্না করতে হয় বলে, কষ্টে বুক ফেটে গিয়েছিল তাঁর, কিন্তু তিনি এখন দাম বেড়ে গেছে গ্যাসের। তিনি বলেছিলেন উজ্জ্বলা গ্যাস ফ্রি করে দেয়া হবে, কিন্তু তিনি তাঁর কথা রাখেননি। তিনি জানালেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের কোন উপকারই করেন না।

তিনি জানান যে, রামের দেশে পেট্রোল-ডিজেলের দাম সর্বাধিক। কিন্তু তার চেয়ে রাবণের দেশ শ্রীলঙ্কায় পেট্রোল-ডিজেলের দাম কম। পেট্রোল-ডিজেলের দাম কম সীতার দেশ নেপালে, দাম কম বাংলাদেশ। ভারতেই পেট্রোলের দাম সর্বাধিক। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বেইমান বলে কটাক্ষ করলেন। তিনি অভিযোগ করলেন, দেশের একের পর এক সম্পত্তি বিক্রি করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। রেল, বিমানবন্দর, কয়লা খনি বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করলেন, দেশকে চালাতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী। ৮ বছরে তিনি দেশকে শেষ করে দিয়েছেন।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ বছরে বাংলাকে সাজিয়ে দিয়েছেন। বাংলার যে প্রান্তেই যাওয়া যাবে সেখানেই উন্নয়ন দেখা যাবে। তিনি জানালেন প্রধানমন্ত্রী দিনের-পর-দিন ধরে ভন্ডামি করছেন। তিনি চুল দাড়ি রেখে দিলেও তিনি রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, রামকৃষ্ণ ঠাকুর হতে পারবেন না। তিনি ভারতকে টুকরো টুকরো করছেন। ভারতকে শেষ করে দিচ্ছেন। ত্রিপুরা, গুজরাটকে সোনার করতে পারেননি, বাংলাকে সোনার করতে এসেছেন।

তিনি অভিযোগ করলেন যে, প্রধানমন্ত্রী হলদিয়াতে এসেছিলেন খোঁজ নিতে যে রাজ্যের কি কি জিনিস বিক্রি করা যাবে? তিনি জানান, যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন, ততদিন রাজ্যের কোন কিছুই বিক্রি করতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী। এরপর জনগণদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচন বড় ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি। তিনি জানান, তৃণমূল কর্মীরা সকলের বাড়ি গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে রাজ্যটা শেষ হয়ে যাবে। রাজ্যে রাতের অন্ধকার নেমে আসবে।