এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল নেতাদের জেলযাত্রা থেকে দুর্গাপুজোয় অনুদান – অনুব্রত-গড়ে গিয়ে তুফান তুললেন দিলীপ ঘোষ

তৃণমূল নেতাদের জেলযাত্রা থেকে দুর্গাপুজোয় অনুদান – অনুব্রত-গড়ে গিয়ে তুফান তুললেন দিলীপ ঘোষ

এক দাপুটে তৃণমূল নেতার গড়ে বিজেপির দাপুটে সভাপতি। প্রথম থেকেই আঁচ করা হচ্ছিল যে, কিছুটা হলেও এক বাঘের গড়ে অন্য বাঘ হানা দেওয়ায় অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। আর যেমনটা সন্দেহ হয়েছিল ঠিক তেমনটাই হল। সূত্রের খবর,
বৃহস্পতিবার বীরভূমের সাঁইথিয়ায় অর্থাৎ যে বীরভূমের তৃণমূলের সভাপতির নাম অনুব্রত মণ্ডল, সেই বীরভূমে বলরাম জয়ন্তী উপলক্ষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পা রাখলেন।

এদিন দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, এই মিছিল চলাকালীন দিলীপ ঘোষকে লক্ষ্য করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা প্রবল বিক্ষোভ দেখান। আর তার জেরেই সাঁইথিয়া শহরের ডাকবাংলো মোড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে পুলিস গোটা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা যায়, এদিন সকালে দিলীপবাবুর সাথে সাঁইথিয়া শহরে বলরাম জয়ন্তীতে যোগ দেন বিজেপির অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। সাইথিয়ার মুরাডিহি কলোনি থেকে শুরু হওয়া এই মিছিলে দিলীপ ঘোষ হুডখোলা জিপে চেপে অংশ নেন। আর সেই মিছিল কিছু দূর আসার পরই দিলীপ ঘোষ নিজের গাড়িতে উঠে পড়েন।

অন্যদিকে যখন বিজেপির এই মিছিল আসছিল, ঠিক সেসময় ডাকবাংলো মোড় সংলগ্ন এলাকায় একটি গণেশ পুজোর মণ্ডপের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের জমায়েত ছিল। দিলীপবাবুর গাড়ি সেদিকে আসতেই মণ্ডপের বাইরে থাকা মাইকে তারস্বরে তৃণমূলের প্রচার গানের সঙ্গে টিএমসিপির সদস্যরা নাচতে নাচতে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে বিক্ষোভ দেখান।

শুধু তাই নয়, এক যুবক নিজের পরনের কালো গেঞ্জি দেখিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে দিলীপবাবুর গাড়ি পেরিয়ে গেলে মিছিলে থাকা কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে স্লোগান দেওয়া হয়। পাল্টা বিজেপির মিছিল থেকেও ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়া হয়। আর সেসময়ই তীব্র উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে দুপক্ষকেই শান্ত করে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে বোলপুরে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ” ওরামাইক বাজিয়ে নাচছিল। এটা ওদের অভ্যাস। আমরা আমাদের কাজ করব।” কিন্তু কেন হঠাৎ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা বিজেপির মিছিলকে উদ্দেশ্য করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গেল? এটা কি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে!

এদিন এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দলীয়ভাবে এখানে গণেশ পুজো করি। এদিন কোনও রাজনৈতিক দলকে হেয় করে কিছু করা হয়নি। শুধু নিজেদের দলের স্লোগান দিয়েছি।” এদিকে মিছিল শেষে এদিন দুপুরে দিলীপ ঘোষ বোলপুরে বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে একটিভ চা-চক্রে যোগ দেন। আর এরপরই লাভপুরের পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে জনসভায় যোগ দিয়ে অন্য দল থেকে আশা প্রচুর নেতাকর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তিনি।

এদিন দিলীপ ঘোষের সাথে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা, বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল, প্রাক্তন জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় সহ অন্যান্যরা। কিন্তু কিছুদিন আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের তদন্ত যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে কি বিজেপি অস্বস্তিতে পড়ছে না!

এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কোর্ট যাকে বলেছে তাকে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। এখানে বিজেপির কিছু করার নেই।” এদিকে এদিন দিলীপ ঘোষ লাভপুরের একটি জনসভায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। যেখানে তিনি বলেন, “এবার দুর্গাপুজোয় প্রতিটি পুজো কমিটিকে ২৫হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গতবছর ১০হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। তারজন্য পুজোমণ্ডপে দিদিমণির ছবি লাগাতে হয়েছিল। পুজো প্যান্ডেলের সামনে চেক দেওয়ার সময় সেই ছবি তুলে রেখেছিলেন থানার বড়বাবুরা। যারা বলেছিল মা দুর্গার ছবি রয়েছে দিদিমণির ছবি লাগাব না, তাদের চেক ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই এবার ২৫হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগে থেকেই জেনে নিন এবার কার কার ছবি লাগাতে হবে।”

শুধু তাই নয়, এদিন তৃণমূলের নেতাদের সিবিআইয়ের চিঠি পাঠানো প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন বাংলার বিরোধী দলের প্রধান এই নেতা। তিনি বলেন, “অনেকেই তলায় তলায় যোগাযোগ করছে বিজেপিতে যোগ দেবে বলে। ভাবছে বিজেপিতে যোগ দিলেই আর সিবিআই ডাকবে না। কিন্তু, সেই চান্স নেই। জনগণের আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত দিন। তারপর গঙ্গাস্নান করে পবিত্র হয়ে আসুন। দলের ঝান্ডা জড়িয়ে দেব গায়ে। যারা তৃণমূলের ছোট নেতা, তারা ছোট জেলে যাবে। আর যারা বড় নেতা তারা বড় জেলে। ছোট নেতারা যাবে সিউড়ির জেলে, একটু বড় নেতারা যাবে কলকাতার সেন্ট্রাল জেলে ও এমপিরা ভুবনেশ্বরের জগন্নাথ দর্শন করে আসবেন।”

এদিকে যার হাত ধরে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন সেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সম্পর্কে এদিন মুখ খুলতে দেখা গেল বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাকে। এদিন তিনি বলেন, “বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির শরীর অসুস্থ। কিন্তু আমি চাই, তিনি সুস্থ স্বাভাবিক থাকুন। সুস্থ অবস্থায় থেকেই তিনি তৃণমূলের পতন দেখে যান।” সব মিলিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গড়ে দিনভর দাপিয়ে বেড়ালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!