এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সাধারনের টাকা লুট করে বিজেপিতে পালিয়ে গেছেন নেতারা! হিসেব বুঝে নিন – নিদান অনুব্রতর

সাধারনের টাকা লুট করে বিজেপিতে পালিয়ে গেছেন নেতারা! হিসেব বুঝে নিন – নিদান অনুব্রতর


দলে দুর্নীতি জাঁকিয়ে বসেছে, আর সেই কারণেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃনমূল খুব একটা ভালো ফল করেনি। কিন্তু সেই দুর্নীতি যাতে বৃদ্ধি না পায়, তার জন্য এবার কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। সূত্রের খবর, সোমবার বোলপুরের বাহিরী হাটতলায় আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। আর সেখানেই তিনি বলেন, “লুট করা টাকা হিসেব কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেবেন। কেউ অন্যায় করলে সরাসরি আমার বাড়িতে যাবেন।”

এদিন দলত্যাগীদের বিরুদ্ধেও যেমন সুর চড়ান অনুব্রতবাবু, ঠিক তেমনই নিজের দলের জনপ্রতিনিধিদেরও হুঁশিয়ারি দেন। সম্প্রতি বিজেপিতে যাওয়া দলত্যাগী এক প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতির সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা লুট করার অভিযোগ পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল।

এদিন তিনি বলেন, “সাধারণ গরিব মানুষের টাকা লুটপাট করেছে। আপনাদের পয়সা নেওয়ার অধিকার নেই। ওদের ছাড়বেন না। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কড়ায়-গণ্ডায় হিসেব বুঝে নেবেন। বলে রাখলাম। প্রাক্তন ওই বিধায়কও সাধু ছিলেন না। তিনিও লুটে জড়িত ছিলেন। তিনি দল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। কেন গিয়েছেন তা জানি না।”

তিনি আরও বলেন, “পঞ্চায়েতের মানুষ কখনও গয়না দেওয়ার জন্য আবেদন করেন না। তাঁরা শুধু পরিষেবা চান। মানুষ রাস্তা-ঘাট, জল, ড্রেন চায়। তাতেও দু-নম্বরি হয়েছে। লজ্জা লাগে না। কেউ অন্যায় করলে সরাসরি আমার বাড়ি যাবেন। কাজের জন্য প্রথমে পঞ্চায়েতের সদস্যের কাছে যাবেন। কাজ না হলে প্রধানের কাছে যাবেন। তারপরও যদি কাজ না হয় আমার কাছে যাবেন। আমি দেখে নেব।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিনের এই সভায় প্রবল জনতার ভিড় উপচে পড়ে। সভামঞ্চে তিনি বসে পরিচিত কর্মীদের উদ্দেশ্যে সম্ভাসন জানালে তাঁরা উৎসাহিত হন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরেই লাভপুর, নানুর বিধানসভা এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হচ্ছে। গত রবিবার লাভপুরে জনসভার পর বোলপুরের বাহিরীতে এই সভা কার্যত উজ্জীবিত করেছে বলে দাবি কর্মীদের।

এদিনের এই সভায় অনুব্রতবাবু ছাড়াও দলের বীরভূম জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিনহা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে অনুব্রতবাবু সতর্কতা জারি করলেও এদিন ওই পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধানকে প্রশংসা করেছেন। তিনি তাঁকে নির্দেশ দেন, সবাই কাজ করতে পারে না। কিন্তু চেষ্টা করবে। মানুষ পঞ্চায়েতে গেলে তাঁদের বসতে দেবেন। চা খাওয়াবেন। কোনওভাবে মেজাজ দেখাবেন না। এই পঞ্চায়েতে ৬৪৫টি আবাস যোজনায় বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। যাঁদের বাড়ি রয়েছে তাঁদের দেবেন না। যাঁর বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, বৃষ্টি হলে জল পড়ে তাঁকে বাড়ি দেবেন। তবেই মানুষ আপনাকে ভালোবাসবে। মানুষ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবেন। বিডিওকে বলবেন, যাঁদের বাড়ির অবস্থা খারাপ তাঁদের প্রতি নজর দিতে। আমি এব্যাপারে জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে সেই কথা জানিয়েছি। আপনারা যা বলবেন পঞ্চায়েত তা করতে বাধ্য থাকবে বলে জানান অনুব্রত মণ্ডল।

বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “সিঙি অঞ্চলে গত ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার কাঠের ব্রিজ করেনি। কিন্তু জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী সেখানে কাঠ সরিয়ে ঢালাই ব্রিজ করে দিয়েছে। মানুষের কাজ করলে মানুষ মনে রাখে। মানুষ বেইমান নয়, আমরা বেইমান। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঠকায়নি। এখনও ঠকাবে না। বীরভূমের মানুষের প্রতি তাঁর টান আছে। আমি যা চাই আজ পর্যন্ত তিনি বলেননি দেব না।

এই জেলায় ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট কিছু করেনি। কংগ্রেস কিছু করেনি। বীরভূমে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। ইন্দিরা গান্ধীর সেকেন্ড ম্যান ছিলেন। তিনি চাইলে জেলাকে সাজিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি কিছু করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারা রাজ্যের জন্য কাজ করেছেন।” এদিন লাভপুরের পর বোলপুরের বাহিরীর সভা থেকেও অনুব্রত মণ্ডল এনআরসি ইস্যুতে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “আমার মাটি, আমার সম্পত্তি। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এনআরসি করতে দেব না। যেভাবেই হোক এনআরসি রুখব। ২০২১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের ব্যাপক ক্ষমতায় আসবেন। এটা চ্যালেঞ্জ রইল। তারপর শিক্ষা দিয়ে বুঝিয়ে দেব।”

তবে এদিনের এই সভা থেকে ছোট শিমুলিয়া থেকে বাহিরী আসার জন্য কালভার্ট না থাকায় মানুষের যাতায়াতে অসুবিধার কথা শুনে মঞ্চ থেকেই সভাধিপতিকে পুজোর পর তা নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন অনুব্রত মণ্ডল। সব মিলিয়ে দুর্নীতি নিয়ে দলের একাংশকে সতর্ক করলেন অনুব্রত মণ্ডল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!