এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > আমি নষ্ট মেয়েমানুষ ———— ( শেষ অংশ ) – কলমে অপরাজিতা –

আমি নষ্ট মেয়েমানুষ ———— ( শেষ অংশ ) – কলমে অপরাজিতা –


হ্যাঁ জানাজানি হলো ,আমার যিনি সম্মন্ধ করেছিলেন তিনিই জানালেন সবকিছু। আমাকে ওরা মারধর করেনি। আমার স্বামী আমাকে যা মুখে এলো তাই বলে অপমান করতে লাগলেন ,শুধু স্বামী নয় সবাই।
যাকঃ শ্বশুরবাড়ির ভাত ঘুচলো আমার। হাত পায়ে ধরলো আমার বাবা,মা ,কাকা আমার বরকে , শশুর, শাশুরিকে অনেক করে বলা হলো কেউ রাজি হলো না। আমি বাপের বাড়ি ফিরে এলাম।

আবার সেই নরকের মুখোমুখি আমি।আমাকে সবাই দোষারোপ করতে লাগলো ,আমার জন্য সবার মুখ পুড়লো আচ্ছা আমি তো লোকাতে বলিনি তবে, ওরা লুকিয়ে বিয়ে দিয়েছে আর দোষ আমার। তাই তো সব দোষ আমার।

আমাদের বাড়িতে এক ডাক্তার জেঠু আসতেন প্রায়ই ঠাকুমাকে দেখতে। সেদিন এলেন আমাকে দেখে বললেন আমি নাকি মা হতে যাচ্ছি। বাড়িতে আবার সবাই আশায় বুক বাঁধলো। ভাবলো বাচ্ছা হবে শুনে নিশ্চই রাজি হবে। আমি রাতে গলায় দাড়ি দিতে গেলাম আশ্চর্য্য পারলাম না কে একজন ভেতর থেকে আমাকে আটকে দিলো। আমি যাকে দেখিনি অথচ আমার মধ্যে যে বড় হচ্ছে তার কথা ভেবে মারতে পারলাম না।

পরের দিন আমাকে স্বশুশুড়বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলো। ওরা এবার আমাকে ফেরত পাঠালো না ,তবে বিধান দিলেন আমার শাশুড়ি ৭ মাসে বাপের বাড়ি যাবো আর বাচ্চা হবার পর আবার ফিরে আসবো এ বাড়িতে। ওই ক মাস আমি একা থাকতাম আমার ঘরে ,আমার স্বামী যিনি আমাকে এতদিন জোর করেছেন তার আমাকে নোংরা মনে হলো ,আমাকে তাঁর ছুঁতে ঘেন্না হলো।

আমি বাঁচলাম।৭ মাসে আমি বাপের বাড়ি এলাম আর তার কিছুদিন পর আমার কোল আলো করে আমার মেয়ে এলো আমার ঘরে। আমার পিউ।আমার জীবন। আমি শ্বশুরবাড়ি ফিরে গেলাম। নাতনি পেয়ে আমার স্বশুর শাশুড়ি খুব খুশি ছিলেন। আমাকে আর কোনো খারাপ কথা বলতেন না ওনারা। তবে আমার স্বামী ভুলতে পারলেন না আমার নাম হলো নষ্ট মেয়ে মানুষ।

কিছুদিন পর আবার স্বামীর ভালোবাসা উঠলে উঠলো। তবে আমার নষ্ট মেয়ে নামটা ঘুচলো না। ওনার কোনো কাজের প্রতিবাদ করতে গেলেই শুনতে হতো আমায় ওই একই কথা। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে বেশ নিজের জগতে ব্যাস্ত রইলাম। ভয় হতো পিউ যদি আমার অতীত জেনে আমাকে দূরে ঠেলে দেয় আমি সেদিন মরে যাবো।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এইভাবেই পিউ কলেজ গেলো তখন ও ভয় হলো যদি আমার মতো ভুল করে ও আমাকে সব কথা বলতো আজ বলে তাই ভরসা ছিল আমি জানতাম ও কার সাথে মিশছে না মিশছে। ওকে দেখতে একেবারে আমার মতো। তাই আরো ভয় হতো। এই করে পিউ বড় হলো চাকরি পেলো। একদিন ওর বাবা আমাকে আবার নষ্ট মেয়েমানুষ বলছে – হঠাৎ গর্জে উঠলো পিউ , বললো “আমার মা নষ্ট নয়,ভালোবাসা অপরাধ নয়,আজ মায়ের জায়গায় আমি হলে বলতে পারতে। আমার মা আমার সব ,আর এভাবে আমি যেন কোনো দিন তোমাকে বলতে না শুনি। আমার মা বিশ্বাস করেছিল যে বিশ্বাস ভেঙেছে সে নষ্ট, যারা আমার মাকে নষ্ট বলে তারা নষ্ট। ”

কথাগুলো বলার সময় ওর চোখ মুখ দিয়ে যেন আগুন বেরোচ্ছিল। আরো বললো” লোকে বলে তোমার আগের বৌকে নাকি তুমি মেরে দিয়েছো তবে তোমায় এবার থেকে খুনি বলে ডাকি?”ওর বাবার মুখটা ছোট হয়ে গিয়েছিলো। বিশ্বাস করতে পারছিলো না পিউ এভাবে বলতে পারে। আমি মাটিতে বসে পড়েছিলাম আমার ২ চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিলো ,ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমাকে মায়ের মতো শান্ত করলো।

না তারপরথেকে ওর বাবা আর আমাকে নষ্ট মেয়েমানুষ বলে নি। অনেক পাল্টে গিয়েছে মানুষটা। আমি যা পারিনি আমার পিউ করে দেখালো।

 

আমি নষ্ট মেয়েমানুষ ———— ( ১ অংশ ) – কলমে অপরাজিতা – (প্রিয়বন্ধু নিজস্ব )

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!