সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষায় আজ কলকাতা হাইকোর্টে ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ বিশেষ খবর রাজ্য April 9, 2018 রাজ্যজুড়ে বেজে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা, রোজই রাজ্যের প্রতিটা কোনা থেকে আসছে রাজনৈতিক হানাহানির খবর, আর তারমাঝেই পঞ্চায়েত ভোটের অন্যতম আসল কারিগর যাঁরা সেই সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য আজ কলকাতা হাইকোর্টে এক নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও কনক দেবনাথের নেতৃত্ত্বে সংগঠনের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মোট ১১ দফা দাবি জানিয়ে এসেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে অংশগ্রহণ করতে চলা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য। যার মধ্যে প্রধান তিন দাবি ছিল – নির্বাচনের সময় সরকারি কর্মীদের সুরক্ষায় কেন্দ্রিয়বাহিনী দিয়ে ভোট পরিচালনা করাতে হবে, নির্বাচন চলাকালীন কোনো রাজ্য সরকারি কর্মীর মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ লক্ষ টাকার বীমা করে দিতে হবে, কোনো কর্মী গুরুতর আহত হলে তাঁর জন্য ৫ লক্ষ টাকার বীমা করে দিতে হবে। এরমধ্যে কমিশন দ্বিতীয় ও তৃতীয় দাবি তৎক্ষণাৎ মেনে নিলেও, যেহেতু কেন্দ্রিয়বাহিনী নিয়োগের ক্ষমতা সরাসরি হাতে নেই, তাই তা গুরুত্ত্বের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে জানানোর কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু কমিশন থেকে এখনো সেই নিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ আজ কলকাতা হাইকোর্টে সরাসরি আবেদন করতে চলেছে। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এই প্রসঙ্গে সংগঠনের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের সঙ্গে প্রিয়বন্ধু বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বিগত দুটি পঞ্চায়েতের তথ্য দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে আসি, নির্বাচন চলাকালীন ভোটকর্মী তথা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষা দেওয়ার মত প্রশিক্ষণ রাজ্য পুলিশের নেই। প্রতিটি মানুষের জীবনের দাম আছে, রাজনৈতিক কর্মীদের উত্তেজনায় সেই প্রাণ চলে গেলে ভেসে যায় একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবার। তাই, নির্বাচন চলাকালীন সরকারি কর্মীদের জীবন সুরক্ষিত করতে কেন্দ্রিয়বাহিনীর সাহায্যেই নির্বাচন করতে হবে। কমিশন আমাদের সঙ্গে সহমত হলেও, যেহেতু তা করার সরাসরি অধিকার কমিশনের হাতে নেই, তাই আমাদের কাছে ১০ দিন সময় চাওয়া হয়। সেই ১০ দিনের সময়সীমা গত শুক্রবার শেষ হয়েছে, কিন্তু এখনো আমরা এই নিয়ে কিছু জানতে পারি নি। আর তাই আমরা সরকারি কর্মীদের জীবন সুরক্ষিত করতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করতে চলেছি। যেহেতু, এই মুহূর্তে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলছে, তাই আমি নিজে এই নিয়ে সওয়াল করব। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনে আজ এক ঐতিহাসিক দিন, এর আগে কোনো সরকারি কর্মচারী সংগঠন, দলমত নির্বিশেষে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষায় এইভাবে আদালতের দ্বারস্থ হয় নি। কিন্তু আমাদের কাছে প্রতিটি মানুষের প্রাণই অমূল্য, তাই যেখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার স্বয়ং জানাচ্ছেন রাজ্যে নৈরাজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে সকল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জীবন এরকম ঝুঁকির মধ্যে রেখে দেওয়ার যে সর্বনাশা প্রচেষ্টা রাজ্য সরকারের তার বিরুদ্ধে আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হচ্ছি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখন সবে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, নির্বাচন শেষ হতে এখনো অনেকগুলি পদক্ষেপ বাকি, কিন্তু এর মধ্যেই তিন-তিনটি প্রাণ চলে গেছে, তাহলে নির্বাচন শেষ হতে হতে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে? সাধারণ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আজ আতঙ্কিত, কিন্তু মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মানুষের সুরক্ষার কথাটা অনুধাবন করতে পারছেন না, তাই আইনের সাহায্য নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ সুরক্ষিত করা ছাড়া আর আমাদের কাছে অন্য পথ খোলা ছিল না। আপনার মতামত জানান -