আসাম ফর্মুলাতেই বাংলায় বিজেপির রথ ছোটাতে মরিয়া বিজেপি? শুভেন্দুকে এগিয়ে তাতেই সিলমোহর? বিজেপি রাজনীতি রাজ্য May 10, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আসামে ভারতীয় জনতা পার্টি সরকার গঠন করেছে। তবে বহু চেষ্টা করেও বাংলায় তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। বিজেপি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে আশা করেছিল বাংলায় তারা 200 আসন পেয়ে ক্ষমতা দখল করবে। এক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেদিক থেকে বিজেপি যদি রাজ্যের ক্ষমতা দখল করে, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীকে বড় কোনো জায়গা দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তবে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি ভারতীয় জনতা পার্টির। কিন্তু পার্শ্ববর্তী রাজ্যে সরকার গঠন এবং মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে ফর্মুলা প্রয়োগ করেছে গেরুয়া শিবির, সেই একই ফর্মুলা বাংলার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে শুরু করল ভারতীয় জনতা পার্টি। মূলত, বহু দড়ি টানাটানির পর আসামে পরিষদীয় দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হবেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। আর বাংলাতেও বহু জল্পনার পর বিরোধী দলনেতা করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। তবে আসামের মতো বাংলাতেও বিজেপির পক্ষ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে নেতা করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে বলে খবর। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং সংগঠনকে মজবুত করতে যে রাজ্যে যে সমস্ত নেতা জনপ্রিয়, তাদের ঘাড়েই সেই রাজ্যের দায়িত্ব দিতে চাইছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেই মত অসমে যেমন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে, ঠিক তেমনই বিরোধী দলের জায়গা দখল করলেও, যাতে পরবর্তীতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে দল ভালো জায়গায় পৌঁছে যায়, তার জন্য জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব দেওয়া হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একাংশ বলছেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার গঠনের পরই বিভিন্ন রাজ্যের সর্বভারতীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত যে অনেকাংশে ভুল ছিল, তা বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের পরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শীর্ষস্তরের কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলায় এসে প্রচার করলেও বিজেপি ভালো ফল করতে পারেনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতিতে এখন কিছুটা হলেও ফর্মুলায় বদল আনতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। অসমের ক্ষেত্রে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে যেমন মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে, ঠিক তেমনই বাংলার ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করে বিজেপি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল, রাজ্যের জনপ্রিয় নেতাদের কাধেই এবার থেকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে পরাস্ত করে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে তার প্রভাব প্রতিপত্তি এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়েছেন, তাতে আগামী দিনে দলকে ভাল ফল করাতে গেলে শুভেন্দু অধিকারীর মত জনপ্রিয় নেতাকে দিয়ে অত্যন্ত প্রয়োজন, তা নিজেদের এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট করে দিল গেরুয়া শিবির বলেই মনে করছেন একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “বাংলার নির্বাচনের সময় যে সমস্ত কেন্দ্রীয় নেতা বা পর্যবেক্ষকরা এসেছিলেন, ভোটের ফল প্রকাশের পর তাদের প্রায় সকলের মত নিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। তারা প্রায় সকলেই শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করার সুপারিশ করেছেন।” অর্থাৎ রাজ্যজুড়ে শুভেন্দু অধিকারীর যে জনপ্রিয়তা রয়েছে, তাকে মাথায় রেখে বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা বলাই যায়। অসমের ক্ষেত্রে হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলার ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করে বিজেপি নিজেদের বিভিন্ন প্রদেশের রাজনৈতিক কার্যকলাপ এবং সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছুটা বদল আনতে শুরু করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যবেক্ষকরা একাংশ বলছেন, বাংলায় বিজেপি ভালো ফলাফল করতে পারেনি। তার মধ্যে বেশকিছু কারণ রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে প্রধান কারণ, বহিরাগত ইস্যু। ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অমিত শাহের মত বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা বারবার রাজ্যে এসে প্রচার করলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়। শাসকদলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, বিজেপির এই সমস্ত বহিরাগত নেতারা কেন রাজ্যে এসে বাংলার পরিবেশ নষ্ট করছে? এক্ষেত্রে বিজেপির সঠিক মুখ নেই বলেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে কটাক্ষ করা হয় ভারতীয় জনতা পার্টিকে। আর ঘাসফুল শিবিরের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। আর সঠিক উত্তর না থাকার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে যে বাংলার মানুষ বেছে নিয়েছে, তা এক প্রকার পরিষ্কার। তবে স্থানীয় ক্ষেত্রে ভূমিপুত্রকে দায়িত্ব না দিলে পরবর্তীতে আর কোনো নির্বাচনেই ভালো ফলাফল করতে পারা যাবে না, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তাই ওপর থেকে চাপিয়ে বসিয়ে দেওয়া নেতা নয়, বরঞ্চ রাজ্যের মতামত নিয়ে আসাম এবং বাংলাকে যেভাবে পরিচালনা করতে চাইছে বিজেপি। আগামী দিনে সব রাজ্যকে এভাবেই পরিচালনা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -